সিলেট যেন আজ মঞ্চ হয়ে উঠেছিল ‘এ’ দলের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম এক অধ্যায়। প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দল, যাদের স্কোয়াডে ৯ জন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ মুখ। কিন্তু মাঠে তারা দাঁড়াতেই পারেনি টাইগার তরুণদের সামনে। আর এই জয় ছিল শুধুই জয় নয়-এটি ছিল রেকর্ডে মোড়ানো এক অবিস্মরণীয় কীর্তি। ৮৭ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে নুরুল হাসান সোহানের দল। টানা দুই জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ওয়ানডে সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল।
প্রথমে টস হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। শুরুটা হয় কাঁপুনির। মাত্র ১২ রানে ফিরে যান ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। তবে এরপরের গল্পটা একেবারেই অন্যরকম। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয়। তাদের ৭৩ রানের অবদান ইনিংসকে স্থিতি এনে দেয়।
কিন্তু ম্যাচের মূল নাট্যরূপ শুরু হয় তখন, যখন ক্রিজে আসেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ইনিংসের মাঝামাঝি সময়ে যে ঝড় শুরু হয়, তা থামে ইনিংসের প্রায় শেষপ্রান্তে গিয়ে। দু’জন গড়েন ২২৫ রানের ঐতিহাসিক জুটি-যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ।
সোহানের ব্যাট থেকে আসে ১০১ বলে ১১২ রান-৭টি চার ও ৭টি ছক্কায় সাজানো এক ঝড়ো ইনিংস। অঙ্কন খেলেন ধীরস্থির কিন্তু দৃঢ়চেতা এক ইনিংস, ১০৮ বলে ১০৫ রান, যার মধ্যে ছিল ৮টি চার ও ১টি ছক্কা। তাদের ব্যাটিং নৈপুণ্যে ৫০ ওভারে বাংলাদেশ পৌঁছে যায় ৩৪৪ রানের পাহাড়সম সংগ্রহে—যা দলের ইতিহাসে অন্যতম সর্বোচ্চ।
এই রানের চাপে গুঁড়িয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ। একমাত্র ডেল ফিলিপসই কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন, ৫৪ বলে করেন ৭৯ রান। কিন্তু বাকিরা ছিলেন ছায়া। জো কার্টার, ক্লার্কসন কিংবা মিচ হে—কেউই ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি।
বোলিংয়ে বাংলাদেশের হয়ে দ্যুতি ছড়ান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত—তিনটি উইকেট তুলে নেন। শরিফুল ইসলাম, তানভির ইসলাম ও শামীম হোসেন পাটোয়ারি নেন দু’টি করে উইকেট। নিউজিল্যান্ডের ইনিংস গুটিয়ে যায় মাত্র ২৫৭ রানে, ৮৭ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা।
সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে ১০ মে।
Discussion about this post