অধিনায়ক হিসেবে অনেক অর্জনই তাকে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে দিয়েছে। কাল সেই অর্জনে আরেকটি সাফল্য ধরা দিল। সেটা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শিরোপা। বলা হচ্ছে ভারতের অবিসংবাদী সফলতম অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির কথা। কাল এজবাস্টনে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে নাটকীয়ভাবে ৫ রানে হারিয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতল ভারত। সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো এ টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতল ভারত।
অথচ টুর্নামেন্টে ভারত খেলতে এসেছিল স্পট ফিক্সিংয়ের বোঝা মাথায় নিয়ে। দেশে আইপিএলে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে তোলপাড়। স্বয়ং অধিনায়ক ধোনির দিকে সন্দেহের তীর। কিন্তু দলে এর কোনো প্রভাবই দেখা গেল না। প্রস্তুতি ম্যাচেই তার প্রমাণ দেখা গিয়েছিল। তবে মূল আসর শুরু হতেই সেই প্রমাণকে আরও ভিত্তি এনে দেয় দলের খেলোয়াড়রা। প্রতিটি ম্যাচেই দাপটে জয় নিয়ে ফাইনালে উঠে যায় ভারত। আর ধারাবাহিক সেই পারফর্ম দেখা গেল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচেও।
এবারের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বৃষ্টি বেশ ভালোই ভুগিয়েছে। বৃষ্টির হানায় বেশ কয়েকটি ম্যাচ নির্ধারিত ওভারে শেষ হতে পারেনি। যেমনটি হল না কাল ফাইনালেও। খেলা শুরুর আগেই বৃষ্টির হানা। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর খেলা শুরু। কিন্তু খেলা শুরুর আগেই ফের বৃষ্টি। শেষমেশ ইংল্যান্ড ও ভারত সমর্থকদের মনে আশঙ্কা জেগেছিল-খেলা হবে কি না। ২৪ ওভারে ম্যাচের দৈর্ঘ্য করা হয়। দু’দলের খেলেয়াড়রা মাঠে নামার আগেই আবার বৃষ্টি। শেষ পর্যন্ত খেলা মাঠে গড়াল এবং সেটা ২০ ওভারে। মানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনাল রূপান্তর হল টি-টুয়েন্টিতে। তাতে টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। আর ব্যাট করতে নেমেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে ভারত। বিশেষ করে স্লোয়ার মিডিয়াম পেসার রবি বোপারার চমত্কার বোলিংই এর জন্য দায়ী। ইংলিশ এ অলরাউন্ডার ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের রানের চাকা থামিয়ে দেন। তারপরও শিখর ধাওয়ান ২৪ বলে ৩১, বিরাট কোহলি ৩৪ বলে ৪৩ এবং শেষদিকে রবীন্দ্র জাদেজা ২৫ বলে অপরাজিত ৩৩ রানের ইনিংসগুলো ভারতকে ৭ উইকেটে ১২৯ রানের মামুলি সংগ্রহ এনে দেয়। জবাবে ৪৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল ইংল্যান্ড। সেখান থেকে ইয়ন মরগান ও রবি বোপারা ৬৪ রান তুলে দলকে জয়ের দিকেই নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ইশান্ত শর্মা পরপর দুই বলে দু’জনকে ফিরিয়ে দিয়ে দলকে ম্যাচে ফেরান। এরপরও সম্ভাবনা ছিল স্বাগতিকদের সামনে। কিন্তু ততক্ষণে ইংলিশদের চেপে ধরেছে ভারতীয় বোলাররা। স্পিনার রবিচন্দন অশ্বিনের অসাধারণ বোলিংয়েই ইংল্যান্ড আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। অশ্বিনের করা শেষ ওভারের শেষ বলে ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৬ রান। কিন্তু ট্রেডওয়েল সেই বল থেকে কোনো রান নিতে ব্যর্থ হলে জয়ের আনন্দে মাতে ভারতীয় খেলোয়াড়রা। আর ফাইনালে শিরোপা জয়ের অতৃপ্তি নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় কুক বাহিনীকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : ভারত : ১২৯/৭, ২০ ওভার (ধাওয়ান ৩১, কোহলি ৪৩, জাদেজা ৩৩*; বোপারা ৩/২০)। ইংল্যান্ড : ১২৪/৮, ২০ ওভার (বেল ১৩, ট্রট ২০, মরগান ৩৩, বোপারা ৩০; অশ্বিন ২/১৫, ইশান্ত ২/৩৬, জাদেজা ২/২৪)। ফল : ভারত ৫ রানে জয়ী।
Discussion about this post