এক দিনের ব্যবধানে তিন রূপে দেখা গেল আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে। রোববার তিনি বিদায়ী সভাপতি, সোমবার সকালে ছিলেন পরিচালক পদপ্রার্থী, আর রাত নামতেই আবার ফিরে এলেন পুরোনো চেয়ারে-বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হিসেবে।
নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে, কিন্তু বুলবুলের চোখে এটি কেবল শুরু। সোমবার রাতে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি বললেন, ‘এটাকে একটা জার্নির অংশ করে নিয়েছি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নয়নের প্রেমে পড়ে গিয়েছি। ট্রিপল সেঞ্চুরি প্রোগ্রামের ছোট ছোট সাফল্যগুলো দেখেই বুঝেছি-এই কাজটিই আমার জায়গা। আমি থেকে গেছি, শুধু একটা কারণেই-টু সার্ভ মোর ফর মাই কান্ট্রি।’
তার কণ্ঠে নেই প্রশাসনিক ভাষা, আছে একধরনের আবেগ ও দায়বোধ। আন্তর্জাতিক চাকরি, স্থিতিশীল জীবন ছেড়ে ফিরে আসা এই সাবেক অধিনায়ক এখন বলছেন, অর্থ নয়, ক্রিকেটই তার প্রেরণা, ‘ক্রিকেট বোর্ডের পদ অনারারি। কিন্তু আমি সেটাকে ভাবছি না কোনো পদের দৃষ্টিতে-ক্রিকেটটা একটা আমানত। চাকরিটা আমি ছেড়ে এসেছি, এখন ফোকাস শুধু একটা জিনিসে, বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সার্ভিস দেওয়া।’
এই আবেগের সঙ্গে আছে বাস্তব বোধও। বিতর্কিত নির্বাচন, বয়কট ও বিভক্তির মাঝেও তিনি ঐক্যের ডাক দিচ্ছেন, ‘আমরা সকলে একসাথে কাজ করতে চাই বাংলাদেশ ক্রিকেটে। কে বোর্ডে আছে, কে নেই-এটা বিষয় না। বাংলাদেশ ক্রিকেট সবার। দরকার হলে আমরাই যাব উনাদের কাছে, যেন সবাই মিলে এগিয়ে নিতে পারি।’
তার এই আহ্বান কেবল রাজনৈতিক শুদ্ধতার প্রকাশ নয়-এটা নেতৃত্বের এক নতুন ভাষা। যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জায়গা নিচ্ছে সহযোগিতা, আর বোর্ডের সীমা ছাড়িয়ে গড়ে উঠছে এক ‘ক্রিকেট কমিউনিটি’।
ফারুক আহমেদকে সহ-সভাপতি হিসেবে বেছে নেওয়ার ব্যাখ্যায়ও উঠে এসেছে সেই একই দর্শন, ‘আমি সভাপতি হয়েছি ফারুক ভাইয়ের প্রস্তাবে, উনি সহ-সভাপতি হয়েছেন আমার প্রস্তাবে। এর মানে, আমাদের কাছে ব্যক্তিগত পদ নয়-ক্রিকেটই সবচেয়ে বড়।’
নতুন বোর্ডের প্রথম সভা শেষে বুলবুল বলেননি কোনো স্লোগান বা প্রতিশ্রুতির বুলি। শুধু বলেছেন, ‘আমাদের চার বছরের পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেছে।’
আর সেই কথাতেই স্পষ্ট হয়ে গেছে-যে দায়িত্বটা একসময় ছিল ‘অস্থায়ী’, সেটাই এখন তার চার বছরের অঙ্গীকার।
Discussion about this post