এজেন্ডা ছিল ক্রিকেট দলবদল।
কিন্তু সেই প্রসঙ্গ আলোচনায় উঠার সুযোগই পেল না। পাবে কিভাবে? সভাই যে পন্ড!
ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্টোপলিটন (সিসিডিএম) এর সভায় যোগ দেয়ার কথা ছিল লীগের ১২টি দলের প্রতিনিধিদের। সবমিলিয়ে সভায় আসেন মাত্র ছয় ক্লাবের প্রতিনিধি। সভা শুরুর জন্য কোরামের শর্ত পুরো হলেও কাজের কাজ আসলে কিছুই হয়নি। সভার শুরুতেই উপস্থিত ক্লাবগুলোর প্রতিনিধিরা একযোগে বিসিবির কাছে এই লিগে অংশ নেয়ার জন্য টাকা বরাদ্দের দাবি তুলে। ১২টি ক্লাবকে গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়ার পরিকল্পনা আছে বিসিবি’র। তবে লিগ শুরুর সময় এখনো দুরে। দলবদলই হয়নি; এত আগেভাগে টাকা বরাদ্দে ক্লাবগুলোর দাবিটাও তাই কেমন যেন বেখাপ্পা ঠেকছে। সভা শুরু করতে বসা সিসিডিএমের সহসভাপতি হানিফ ভুঁইয়াও কোনকিছু সামাল দিতে পারেননি। এজেন্ডার বাইরের বিষয় নিয়ে তিনি আলোচনা করতে চাননি। ওদিকে আবার ক্লাবগুলোও নাছোড়বান্দা। তাই শেষমেষ সভা শুরুতেই হানিফ হার মেনে নেন। জানিয়ে দেন-সভা বাতিল!
বিসিবি সভাপতি বোর্ডের তহবিল থেকে ক্লাবগুলোকে অনুদান দেবেন। কত দেবেন, কখন দেবেন সেটা তার এখতিয়ার। হানিফ ভূঁইয়া জানিয়ে দেন, ‘বোর্ড সভাপতির টাকা দেওয়ার বিষয়টি আমার হাতে নেই। তাই এ বিষয়ে কোনোরকম আলাপ-আলোচনাও করতে চাই না।’
সিসিডিএমপ্রধান জালাল ইউনুস উদ্ভুত পরিস্থিতিতে হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তার কথা-‘এখন হঠাত্ করে এসব প্রসঙ্গের উদ্রেক ঘটছে কেন বুঝি না। যে পদ্ধতিতে দলবদল হচ্ছে তাতে এখনই টাকার দরকার নেই। ক্লাবগুলো যাই চাক আর যে কথাই বলুক না কেন ২৫ জুলাই দলবদল হতেই হবে। না হয় এ বছর আর লিগ মাঠে গড়ানোর কোনো সম্ভাবনা দেখি না আমি।’
আবাহনী, কলাবাগান, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, ভিক্টোরিয়া ও খেলাঘর সমাজকল্যাণ প্রতিনিধিরা অর্থের দাবি তোলেন। প্রাইম ব্যাংকের প্রতিনিধি সাইফুল উপস্থিত থাকলেও অর্থের দাবি তোলেননি। আর গাজী ট্যাংকের প্রতিনিধি তারিকুল ইসলাম টিটু সভা বাতিলের পর আসেন। মোহামেডান, শেখ জামাল, সিসিএস ও তাসিন হাসিনের প্রতিনিধি আসেনি।
বাতিল হয়ে যাওয়া এ সভা কবে হবে? তা বলতে পারছেন না কেউ। আগামী সপ্তাহে হওয়ার কথা বলছেন হানিফ ভূঁইয়া। নতুন পদ্ধতির দলবদল; তার আগে বাইলজ নিয়ে আলোচনা ও তার ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা অবশ্যই জরুরি। তাছাড়া দলবদল অনুষ্ঠানে জটিলতা দেখা দিতে পারে।
এদিকে ঈদের পর দলবদল এবং তার আগে বোর্ডের কাছ থেকে অনুদান পাওয়ার দাবিতে অযৌক্তিক ও অসময়োচিত বলে মন্তব্য করেছেন জালাল ইউনুস। সিসিডিএম প্রধানের কথা, ‘যে প্রক্রিয়ায় দলবদল হবে তাতে আগাম অর্থ প্রদানের কোনোই সুযোগ নেই। ক্রিকেটার কেনাবেচা হবে নিলামে। রোটেশন সিস্টেমে। বিভিন্ন ক্যাটাগরি ঠিক করা থাকবে। রোটেশনে সে ক্যাটাগরিতেই ক্রিকেটার নিতে হবে। তারপর অর্থ দেওয়ার প্রশ্ন। কাজেই ২৫ জুলাই দলবদলের আগে অর্থের কোনোই দরকার নেই। এ কারণেই ঈদের পর দলবদল করার দাবিকে আমি অযৌক্তিক ও অসময়োচিত বলে মনে করি।’ সঙ্গে আরও যোগ করেন, ‘এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। তারপর ক্লাবগুলো নানা দাবি তুলছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে শেষ পর্যন্ত আর লিগ হয় কি না সন্দেহ।’
এমনিতেই ঈদের আগে দলবদল না করার দাবি উঠেছে। তার সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে টাকার দাবি। ২৫ জুলাই দলবদলের আগেই সে অর্থ চায় পাঁচ ক্লাব। এতে করে নতুন সমস্যা ও অনিশ্চয়তার মুখে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের দলবদল। সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যের জটিলতা।
ঘুরে ফিরে আসছে সেই পুরানো শঙ্কা-এই মৌসুমে ক্রিকেট লিগ হবে তো?
Discussion about this post