শেষ পর্যন্ত কেটে যাচ্ছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ঘিরে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তার মেঘ। ঢাকায় আয়োজিত এই গুরুত্বপূর্ণ সভা বয়কট করার যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা আর বাস্তবে রূপ নিচ্ছে না। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই), শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের মতো সদস্য বোর্ডগুলো সভায় অংশগ্রহণ করছে-কেউ সরাসরি, কেউ বা ভার্চুয়ালি।
আজ ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে চলমান এই সভা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিল ভারতের কিছু গণমাধ্যম। তাদের দাবি ছিল, বিসিসিআই সভার ভেন্যু বাংলাদেশ না রেখে অন্যত্র নিতে চেয়েছিল, না হলে অংশ না নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল তারা। কিন্তু বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তিনি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন, ভারত সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নেবে।
বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘তারা থাকছে, নিশ্চিত করেছে। অন্যরাও যোগ দিচ্ছে (যারা বর্জনের চিন্তা করছিল)। এখানে আদতে বাংলাদেশই জিতেছে।’ তিনি আরও জানান, ভার্চুয়াল মাধ্যমে ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে সভায় অংশ নিতে পারেন বিসিসিআইয়ের সহসভাপতি রাজীব শুক্লা।
শুধু ভারত নয়, শ্রীলঙ্কা ও নেপালও সভায় অনলাইনে যোগ দেবে বলে জানিয়েছেন বুলবুল। আর আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিনিধি সরাসরি ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। আয়োজক দেশ হিসেবে এসিসির এজিএম সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের দায়িত্ব মূলত বিসিবির কাঁধেই। এ বিষয়ে বুলবুল বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে এসিসির মিটিং আয়োজন করছি। আয়োজকের দায়িত্ব নিয়ে সবাইকে রাজি করাতে পেরেছি। ক্রিকেটের স্বার্থেই সবাই যোগ দিচ্ছে।’
এজিএম উপলক্ষে বিসিবি সভাপতির এটিই প্রথম বড় আন্তর্জাতিক আয়োজন, যেটিকে কেন্দ্র করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে বাংলাদেশ। এই সভাতেই চূড়ান্ত হতে পারে ২০২৫ এশিয়া কাপের সময়সূচি ও ভেন্যু। দীর্ঘদিন ধরে টুর্নামেন্টটি নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। আয়োজক ভারত হলেও পাকিস্তান সেখানে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে, যা সমস্যার মূল। এখন আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশা করা হচ্ছে।
সভায় কার্যকর সিদ্ধান্ত হলে, আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহে আরব আমিরাতে হতে পারে এশিয়া কাপ। টুর্নামেন্টের আয়োজন স্বত্ব ভারতেরই থাকলেও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আয়োজন হতে পারে সব দলের সম্মতিতে। আর এ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত না হলে এসিসির প্রতিটি সদস্য বোর্ড প্রায় ৪০ কোটি টাকা করে রাজস্ব হারাবে। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটীয় স্বার্থ এবং আর্থিক বাস্তবতা বিবেচনায় ভারতও নমনীয় অবস্থানে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়েও আশাবাদী বিসিবি সভাপতি। তিনি জানান, ‘ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক সবসময় ভালো ছিল। এখনও ভালো আছে। সিরিজ স্থগিত হলেও, দুই বোর্ড আলোচনা করে সুবিধাজনক সময় নির্ধারণ করেছে। গতকাল ও আজ বিসিসিআইয়ের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ হয়েছে।’
Discussion about this post