বল হাতে ঘূর্ণি জাদু দেখান শুভাগত হোম। তার সঙ্গে পেস বোলিংয়ে ঝড় তোলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা আর আব্দুল হালিম। ত্রয়ীর দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রতিপক্ষ গাজী টায়ারস ক্রিকেট একাডেমীকে অল্পতেই আটকে যায়। তাতে লক্ষ্য হয়ে যায় মামুলী। তৌফিক খান তুষারের ধ্বংসাত্মক ব্যাটিংয়ে সেই লক্ষ্যই তুড়ি মেরে ছুঁয়ে ফেলে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। এ উদ্বোধনী ব্যাটারের ঝড়ো শতকে পায় ১০ উইকেট বড় জয় পায় শামীম হোসেন পাটোয়ারির দল। সে আবার ১৮৪ বল হাতে রেখেই। ১৫১ রানের লক্ষ্যে স্রেফ ১৯.২ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলে তারা।
সোমবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দশম রাউন্ডে বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে গাজী টায়ার্সের বোলারদের রীতিমতো তুলোধুনো করে ছাড়েন তৌফিক। টর্নেডো ব্যাটিংয়ে ৬১ বলেই স্পর্শ করেন জাদুকরী তিন অঙ্ক। ৬৬ বলে ১১৪ রানের হার না মানা দুরন্ত এক ইনিংসে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়ে তবে মাঠ ছাড়েন রূপগঞ্জের এ ওপেনার। তার চমৎকার ইনিংস সাজানো ছিল ১২ চার আর ৮ ছক্কায়। স্বীকৃত ক্রিকেটে এটাই তার প্রথম সেঞ্চুরি।
দশ ম্যাচ খেলে রূপগঞ্জ পেল ছয় জয়। পয়েন্ট তালিকায় ছয় নম্বরে থেকে সুপার লিগ খেলার সম্ভাবনা আরেকটু বাড়ল তাদের। মাত্র দুই জয়ে অবনমন অঞ্চলে ঘুরপাক খাচ্ছে নবাগত গাজী টায়ার্স।
গাজী টায়ার্সের শুরুটা বেশ ভালো ছিল। টস হেরে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে মহব্বত হোসেন ও ইফতেখার হোসেন মিলে প্রথম ৫ ওভারে তুলেন ৪০ রান। ষষ্ঠ ওভারে ওপেনিং জুটি ভাঙেন শুভাগত। ৩ চার ও ২ ছক্কায় ১৭ বলে ২৬ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন মহব্বত।
পরে আর কোনো পার্টনারশিপ হয়নি। একশ ছোঁয়ার আগেই ৬ উইকেট খুইয়ে ফেলে গাজী টায়ার্স। বোলিং আক্রমণে এসে তৃতীয় বলে গাজী তাহজিবুল ইসলামকে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলেন মাশরাফি। স্পিনারদের মতো রানআপ নিয়েও আলো ছড়ান অভিজ্ঞ এ বোলার। নিজের চতুর্থ ওভারে উপড়ে দেন শামিম মিয়ার উইকেট।
গাজী টায়ার্সের জার্সি গায়ে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন ওপেনার ইফতেখার হোসেন। শেষ দিকের ব্যাটারদের ছোট ছোট ইনিংসে কোনোমতে দেড়শ রানে পৌঁছায় তারা। ৩০ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন শুভাগত। মাশরাফি ও আব্দুল হালিম পকেটে পুরেন ২টি করে।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে প্রথম ওভারটাই দেখে শুনে খেলেন তৌফিক। পরে শুরু তার ব্যাটিং তাণ্ডব। তার হাতের ব্যাট থেকে ঝরতে থাকে বাউন্ডারির বৃষ্টি। পাওয়ার প্লেতে লিওন ইসলামকে মেরে খেলতে থাকেন ৩২ বছর বয়সী ওপেনার।
৩৭ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর আরও যেন ধার বাড়ে তৌফিকের ব্যাটের।
চলতি আসরে প্রথম ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিরুদ্ধে স্রেফ ৪২ বলে ৬৬ রানের দাপুটে ইনিংস উপহার দেন তৌফিক। ষষ্ঠ রাউন্ডে পারটেক্স স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে খেলেন ৬৬ বলে ৮৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। এবার ৬৬ বলে ১১৪ রানের ইনিংস খেলে পেলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ক্রিজের অন্যপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তৌফিকের ব্যাটিং ঝড় উপভোগ করেন সাদমান ইসলাম। নিজের ট্রেডমার্ক ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে ৫১ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থেকে যান বাঁহাতি এ ওপেনার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি: ১৫০/১০, ৪৪.২ ওভার (ইফতেখার হোসেন ৩০, মহব্বত ২৬, আশরাফুল ১৩, শামিম ১২, ইফতেখার সাজ্জাদ ২০, আরিদুল ১৩, লিওন ১১; হালিম ২/২৬, শুভাগত ৪/৩০ ও মাশরাফি ২/১৮)।
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ১৫২/০, ১৯.২ ওভার (তৌফিক ১১৪*, সাদমান ৩৫*; লিওন ৪-০-২৭-০, মারুফ -০/২০, শামিম -০/৩৩)।
ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ১০ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: তৌফিক খান তুষার।
Discussion about this post