কতোশত স্মৃতি! সব যেন একসঙ্গে মিস্টি মধুর প্রলেপে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এলো। সোমবার রাতে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলের বলরুমে পা রাখতেই নস্টালজিয়া গ্রাস করে নিল সবাইকে। এ যেন সেই স্মৃতিময় পথে নতুন যাত্রা। ১৯৯৭ সালের ক্রিকেটের উত্থান পর্বের গল্প! সে বছর কুয়ালালামপুরের কিলাত কিলাব মাঠে আইসিসি ট্রফি জিতেছিল টাইগাররা। দল পেয়েছিল বিশ্বকাপের টিকিট । ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ক্রিকেটার গর্ডন গ্রিনিজের কোচিংয়ে দল প্রথমবারের মতো উঠে বিশ্বকাপে। তারপর ১৯৯৯ বিশ্বকাপে খেলে। তারপর অবশ্য তার সঙ্গে যদিও বিদায়টা তেমন ভাল হয়নি গর্ডনের। বিশ্বকাপ শেষে ঢাকায় ফেরা হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকার। ইংল্যান্ডে থাকা অবস্থায় তাকে বরখাস্ত করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
সময়ের পথ ধরে সেই বিসিবিরই আমন্ত্রণে আবারো ঢাকায় গ্রিনিজ। বাংলাদেশের অনানারি নাগরিক চেনা সেই শহরে ফিরে দারুণ খুশি। সোমবার ’৯৭ আইসিসি ট্রফিজয়ী খেলোয়াড়দের সঙ্গে হোটেল সোনারগাওঁয়ে সংবর্ধনাও দেয়া হল তাকে।
আর সেখানে হাজির ছিলেন ১৯৯৭ সালের সেই দলের ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিক, নাইমুর রহমান দূর্জয়, আকরাম খান, সাইফুল ইসলাম, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, হাসিবুল হোসেন শান্ত, শফিউদ্দিন বাবু, আনিসুর রহমান থেকে শুরু করে অনেকেই। তাদের পেয়ে স্মৃতি কাতর হয়ে পড়েন গ্রিনিজ।
যেমনটা বলছিলেন তিনি,‘ বাংলাদেশের ক্রিকেটে কেমন করছে না করছে, সেই খবর আমি রাখার চেষ্টা করি। এই জায়গাটা আমার নিজের ঘরের মতো মনে হয়। আমি পরের আমন্ত্রণের অপেক্ষায় থাকব।’
১৯৯৭-তে আইসিসি ট্রফি জয়ের পর বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন গ্রিনিজ। তারপর বিদায়টা ভাল না হলেও অবশেষে সেই তিক্ততা দুর হল। এদিন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন তার হাতে তুলে দেন ক্রেস্ট আর ৫ লাখ টাকার চেক। গর্ডন গ্রিনিজ এ টাকা অনুদান হিসেবে নিচ্ছেন নিজ নামে গড়া ‘গর্ডন প্রাইমারি স্কুল’র জন্য। বাচ্চাদের জন্য একটি লাইব্রেরি আর স্যানিটারি তৈরির কাজে তা ব্যবহার করবেন। বিসিবি পরিচালক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দূর্জয় তাকে তুলে দেন বাংলাদেশ দলের জার্সি। জার্সিতে লেখা গর্ডন গ্রিনিজের নাম। তিনি তো আমাদেরই একজন!
Discussion about this post