জয়ে শুরু, তারপর দুই ম্যাচে হার। সেই ধাক্কা পেছনে ফেলে জয়টাকে রীতিমতো অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। একের পর এক বাধা টপকে শিরোপা পূনরুদ্ধারের সংকল্পে একজোট মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দেখা মিলল আরও এক ম্যাজিকের। এবার ১৬৮ রান পুঁজি নিয়েও অনায়াস জয় লিজেন্ডসদের।
হোম অব ক্রিকেটে এদিনও রান তুলতে সংগ্রাম করতে হলো ব্যাটসম্যানদের। উইকেট এমনই বৈরি যে এখানে দাপটে শট খেলারও সুযোগ নেই। অসমান বাউন্সে স্পিনারদের সামনে অসহায় ব্যাটসম্যানরা। ৮৩ রানের জয় তুলে নিয়ে উড়ল রূপগঞ্জ। তারা ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে তুলে নিয়েছে টানা ষষ্ঠ জয়!
বোলারদের রাজত্বের এমন ম্যাচে টস হেরে মঙ্গলবার সকালে ব্যাট করতে নামে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। তারা ৪৫ ওভারে কমে আসা ম্যাচে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা অলআউট হয়ে তুলে ১৬৮ রান। এরপর জবাব দিতে নেমে লিজেন্ডসদের ঘূর্ণি আক্রমণের সামনে অসহায় মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্রার্দাস ইউনিয়ন। তারা মাত্র ৮৫ রানে অলআউট।
লো-স্কোরিং ম্যাচে এই বড় জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে আছে মাশরাফি বিন মর্তুজার রূপগঞ্জ। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। এই হারে ব্রাদার্সের রেলিগেশন লিগ খেলা নিশ্চিত হয়ে গেল।
এদিনও লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের জয়ের নায়ক অলরাউন্ডার নাঈম ইসলাম। অসাধারণ এক লিগ কটোচ্ছেন তিনি। অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে ব্যাট-বল দুটিতেই দাপট দেখাচ্ছেন তিনি। মঙ্গলবারও নিজেকে উজাড় করে দেন নাঈম। স্লো উইকেটে দেখে-শুনে খেলে ৮১ বলে করেন ৪৫। এরপর বল হাতে ৩.২ ওভারে ২০ রানে নেন ৩ উইকেট। ম্যাচসেরা নাঈম ছাড়া আবার কে?
শুধু নাঈম নন, রূপগঞ্জের হয়ে ব্যাট দৃঢ়তা দেখালেন সাব্বির রহমানও। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া এই তারকা দেখে-শুনে খেলে বুঝিয়ে দেন তিনি ফুরিয়ে যাননি! ৫০ বলে ৪৬ রানের ইনিংসে ছিল ৩ চার ও ১ ছক্কা। সঙ্গে রকিবুল হাসানের ব্যাটে ২৪ ও তানবীর হায়দার ১৪। এই ম্যাচে অধিনায়ক মাশরাফি চারে ব্যাট করতে নামলেও তেমন কিছু করতে পারেন নি। ১৭ বলে ৭ রানে আউট ম্যাশ।
জবাব দিতে নেমে কখনোই ব্রাদার্সকে স্বস্তি দেয়নি রূপগঞ্জের বোলাররা। একের পর এক উইকেট তুলে নিয়েছে তারা। এই উইকেটে রান পেতে অভিজ্ঞতা-দক্ষতা চাই। এখানে লিজেন্ডসদের চেয়ে পিছিয়ে গোপীবাগের ক্লাবটি। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৬ রান করেন দু’জন- সাদিকুর রহমান ও চতুরঙ্গ ডি সিলভা। ১৪ রান করেন মাইশিকুর রহমান। অন্যরা লিজেন্ডসের বোলিংয়ের দাপুটে সামনে শুধু উইকেটে এসেছেন আর বিদায় নিয়েছেন।
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ভারতীয় রিক্রুট পেসার চিরাগ জানি ৬ ওভারে ২২ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। নাঈম ৩ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ২০ রানে। নাবিল সামাদ ৪ ওভারে ৪ রানে নেন ১ উইকেট। মাশরাফি ৭ ওভারে ৩০ রানে নেন ১ উইকেট। অভিজ্ঞ এই অধিনায়কের ছোঁয়াতে শিরোপায় চোখ লিজেন্ডসদের!
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ : ৪৪.১ ওভারে ১৬৮/১০ (তানজিদ ৪, রকিবুল ২৪, চিরাগ ৮, মাশরাফি ৭, নাঈম ৪৫, সাব্বির ৪৬, তানবির ১৪; ইরফান ৪/২৩, সোহাগ ২/৩৬, চতুরঙ্গা ২/২৮)
ব্রাদার্স ইউনিয়ন : ২২.২ ওভারে ৮৫/১০ (ইমতিয়াজ ৮, সাদিকুর ১৬, মাইশুকুর ১৪, চতুরঙ্গা ১৬; চিরাগ ৪/২২, রানা ১/৮, নাবিল ১/৪, নাঈম ৩/২০, মাশরাফি ১/৩০)
ফল : লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৮৩ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা : নাঈম ইসলাম।
Discussion about this post