দেশের মাঠে আবারো বল হাতে সাফল্য পেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সর্বশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। আর এবার অস্ট্রেলিয়ার ৩ ব্যাটসম্যানকে দেখালেন সাজঘরের পথ। তার মতো স্পিন যাদু দেখালেন সাকিব আল হাসান। তারই পথ ধরে ঢাকা টেস্টের চালকের আসনে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ১ম ইনিংসের জবাবে অজিরা ২১৭ রানে অলআউট। তারপর ২য় ইনিংসে নেমে বাংলাদেশ ১ উইকেট হারিয়ে ৪৫। লিড ৮৮ রানের। সোমবার দিনের খেলা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সংবাদ সম্মেলনে তার সঙ্গে সেই আলাপচারিতার চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরা হল।
২য় ইনিংসে কতো রান হল দল জিততে পারে?
এই উইকেটে আমরা যত রানই করি, আমাদের জন্য লড়িয়ে মনে হবে। প্রথম ইনিংসে দেখেছেন যে ২৬০ রান করেছি, ওই রানের মধ্যে আটকে দিয়েছি ওদের। আমাদের অনেক ব্যাটসম্যান এখনও আছে। কালকে ব্যাটিং করতে পারবে। যে রানই হোক, ওইটা নিয়ে আমরা লড়ব। সুনির্দিষ্ট বলতে পারব না যে ৩০০-৪০০ লাগবে।
লক্ষ্য কি থাকবে?
আসলে সুনির্দিষ্ট কিছু নেই। আমাদের লক্ষ্য অনেক বড় স্কোর গড়া। সুযোগ থাকলে যত বেশি সম্ভব আমরা করব। তবে দেখেছেন যে এই উইকেটে আমরা যদি ৩০০ প্লাস রান করতে পারি, তাহলে আমাদের জন্য অনেক ভালো হবে।
সাকিব তো আবারো রেকর্ড গড়লেন। এনিয়ে কি বলবেন?
সাকিব ভাই তো তিনটি সংস্করণেই অলরাউন্ডার হিসেবে দাপট দেখাচ্ছেন। ভালো লাগে যে নিজেদের দেশের এমন একজন আছে, এমন একজন অলরাউন্ডারের সঙ্গে খেলতে পারছি। খুব ভালো লাগে। তার কথা বলে শেষ করা যাবে না। আমরা সবাই জানি সাকিব ভাই অনলি ওয়ান। আমার কাছে খুব ভালো লাগছে যে উনি এত রেকর্ড গড়ছেন আর আমি তার সঙ্গে খেলছি। অনেক অভিজ্ঞতা উনি ভাগাভাগি করেন আমাদের সঙ্গে।
ওদের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে কি বলবেন?
আমার কাছে মনে হয়, ওরকম পার্থক্য আহামরি কিছু না। একইরকম আছে। সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটা, আমাদের বোলাররা খুব ভালো বোলিং করছে। উইকেট যে রকমই হোক না কেন, বোলাররা ভাল জায়গায় বোলিং না করলে উইকেট পাওয়া অনেক কঠিন। সাকিব ভাই কিন্তু অসাধারণ বোলিং করেছে। তার পর ছোট ছোট আমি, তাইজুল অবদান রেখেছে। মুস্তাফিজ…উইকেট পায়নি,কিন্তু খুব ভালো বোলিং করেছে। রান নিয়ন্ত্রণ করেছে। উইকেট যেরকমই হোক, বোলাররা দায়িত্ব নিয়ে ভালো জায়গায় বল করে তাহলে ব্যাটসম্যানদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে যায়।
মিরপুরের উইকেট কেমন?
আমার কাছে মনে হয়, এই উইকেট তেমন কঠিন নয়। তারপরও মাঝেমধ্যে তো কঠিন হয়। বল একটু টার্ন করলে অনেক কিছু হয়। উইকেট এরকম যে ভালো জায়গায় টার্ন করলে অনেক কিছু হতে পারে। টার্ন করতে পারে,সোজা যেতে পারে। আমার কাছে মনে হয় একইরকম উইকেট। বোলাররা ভালো বল করেছে।
এই সাফল্যের পর কেমন লাগছে?
অবশ্যই ভালো লেগেছে। বিশ্বের সেরা কয়েকজন ব্যাটসম্যানের মধ্যে তাদেরকে ধরা যাবে। তাদের উইকেট পেয়েছি। আর সবচেয়ে বড় কথা যেটা, ভালো জায়গায় বল করতে হবে। মাত্র একটা ইনিংস শেষ হয়েছে। ভালো জয়গায় বল করতে হবে। আমার লক্ষ্য থাকবে, ভালো জায়ায় বোলিং করার জন্য। তাহলে আরও উইকেট পাওয়া যাবে।
স্টিভেন স্মিথের উইকেট পেলেন..
স্টিভেন স্মিথের জন্য একটি পরিকল্পনা ছিল। মুশফিক ভাই আমাকে বলেছিলেন, আগের দিন যখন একটা বল করেছিলাম,তখন মুশফিক ভা্ই বলেছিলেন, স্মিথকে যদি রাউন্ড দা উইকেটে ভালো জায়গায় বল কতে পারিস, তাহলে সে আটকে যায়। সেভাবে খেলতে পারে না, পায়ের ব্যবহার করতে পারে না। সামনে যেয়ে খেলে। সেক্ষেত্রে অনেক সময় বল টার্ন করে স্টাম্পয হওয়ার সুযোগ থাকবে, ক্যাচ আউট হওয়ার সুযোগ আসবে। আমি মুশফিক ভাইয়ের কথামতোই করার চেষ্টা করেছি। রাউন্ড দা উইকেটে জায়গামত করেছি, সেটি কাজে লেগেছে।
দিনের পারফরম্যান্স নিয়ে কি বলবেন?
আসলে আমি যেটি মনে করি যে প্রতিদিনই অনেক উন্নতি করতে হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক কঠিন। এখানে সবাই বল পড়ে ফেলে। আমার কাছে মনে হয়, আমার ছোট ছোট অভিজ্ঞতা হয়েছে। কোন ম্যাচে কিভাবে এগোতে হবে,কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে বল করতে হবে, এগুলো বুঝছি। সামনাসামনি অনেক কিছু দেখছি, সিনিয়ররা পরামর্শ দিচ্ছেন। ছোট ছোট অভিজ্ঞতাগুলোয় আমি সমৃ্দ্ধ হয়েছি।
Discussion about this post