জয়ে শুরু। জয়ে শেষ। মাঝপথে একটু ছন্দ না হারালে শিরোপা নিয়েই উৎসবে মেতে উঠতে পারতো লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। কিন্তু ঠিকঠাক সবকিছু হলো না। তাইতো চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে হারিয়ে শেষ করেও তেমন উচ্ছ্বাস থাকল না মাশরাফি বিন মর্তুজাদের। ৮ উইকেটের এই জয়ে রানার্স আপ হয়ে এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ শেষ করল রূপগঞ্জ।
ঢাকা লিগের এবারের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামালের বিপক্ষে বৃহস্পতিবারের ম্যাচে জয়ের নায়ক আল আমিন হোসেন। এই পেসার নিয়েছেন ৬ উইকেট। মিরপুরের শেরেবাংলায় আল আমিনের বোলিং তোপে শেখ জামাল অলআউট হয় ১১৬ রানে। জবাব দিতে নেমে ২৫.১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা আগেই নিশ্চিত করেছিল শেখ জামাল। এক ম্যাচ আগেই প্রথমবারের মতো শিরোপা জয় করে ধানমন্ডির দলটি। তাইতো শেষ ম্যাচটা ছিল লিজেন্ডসদের জন্য রানার্স আপ হওয়ার মিশন। সেই লক্ষ্যে সফল মাশরাফির দল।চ্যাম্পিয়নদের ৮ উইকেটে উড়িয়ে নিজেরাও তৃপ্তি নিয়ে ছাড়ল মাঠ।
মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে শেখ জামাল। দলটি আল আমিনের বোলিং তোপে অসহায় আত্মসমর্পনই করল। ৩১ রানে তিনি নেন ৬ উইকেট। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে-লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৩২ বছর বয়সী পেসারের এটি পঞ্চমবারের মতো ৫ উইকেট।
ম্যাচের প্রথম ওভারেই সাফল্যের দেখা পান আল আমিন। তারপর তার পেস বোলিং তোপে চ্যাম্পিয়নরা নাজেহালই হয়েছে। সৈকত আলিকে ফিরিয়ে শুরু। এরপর জহুরুল ইসলামকে এলবিডব্লিউ করে ফের উল্লাসে মাতেন। শূন্য রানে দুই উইকেট শেষ শেখ জামালের। এরপর অধিনায়ক ইমরুল কায়েস হাল ধরেন। তাকে কিছুটা সময় সঙ্গ দেন মুশফিকুর রহিম। যদিও মুশি ছিলেন স্লো। তিনি শিকার হন মাশরাফির। মুশফিক ৪৮ বলে ২৫ রান করে ধরেন সাজঘরের পথ।
এরইমধ্য দিয়ে এবারের ঢাকা লিগে মাশরাফির অর্জন দাঁড়ায় ২০ উইকেট। এই দাপটে বুঝিয়ে দেন বয়স ৩৮ পেরিয়ে গেলেও তিনি ঠিকই অপ্রতিরোধ্য। ইনজুরির শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে এবার তিনি মেলে ধরলেন নিজেকে। এক প্রান্তে উইকেট হারালেও ইমরুল ফিফটি করেন ৭০ বলে। অবশ্য এই রানেই ফেরেন তিনি।
তারপর ৩২ রানের মধ্যে শেখ জামালের ৭ উইকেট তুলে নেয় রূপগঞ্জ। শেষ ৬ ব্যাটসম্যানের কাউকেই দুই অঙ্কে যেতে দেয়নি লিজেন্ডস বোলাররা।
এরপর জবাব দিতে নেমে রূপগঞ্জ একেবারে অনায়াসে নোঙর করে জয়ের বন্দরে। ইরফান শুক্কুর ফেরেন ১৪ রানে। রকিবুল হাসান ৭৯ বলে ৪০ রানে অপরাজিত। তিনে নেমে ৩৩ বলে ৩৬ রান তুলেন সাব্বির রহমান। নাঈম ইসলাম ও রকিবুলের ব্যাটে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় লিজেন্ডসরা। ১৪ বলে ২৩ রানে নাঈম।
এই সাফল্যে লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৫৯ রান নিয়ে শেষ করলেন নাঈম। এটিই ঢাকা লিগে তার সেরা সাফল্য।
শেখ জামালের পারভেজ রাসুল লিগের সর্বোচ্চ ২৮ উইকেট নিয়ে শেষ করলেন। আরেক ভারতীয় অলরাউন্ডার লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের চিরাগ জানি টুর্নামেন্ট শেষ করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭ উইকেটে। ব্যাটিংয়ে করেন ৫৯৭ রান। রূপগঞ্জের সাফল্যের অন্যতম রূপকার তিনিও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব: ৩৪.৪ ওভারে ১১৬ (সৈকত ০, ইমরুল ৫০, জহুরুল ০, মুশফিক ২৫, সোহান ১৫, রাসুল ৬, তাইবুর ৪, জোসি ১*, আরিফ ০, সুমন ৮, আফ্রিদি ০; আল আমিন ৮.৪-১-৩১-৬, চিরাগ ১০-৩-২৬-২, মাশরাফি ৮-২-২১-১, সাকিব ৫-০-২৮-০, নাবিল ৩-০-১০-০)
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ২৫.১ ওভারে ১২০/২ (ইরফান ১৪, রকিবুল ৪০*, সাব্বির ৩৬, নাঈম ২৩*; সুমন ৪-০-২৪-০, রাসুল ১০-২-২০-২, জোসি ৩-০-২৩-০, আরিফ ৫-০-২৫-০, আফ্রিদি ৩-০-২২-০, ইমরুল ০.১-০-৪-০)
ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: আল আমিন হোসেন।
Discussion about this post