কিছুতেই হতাশা কাটছে না। টেস্ট ক্রিকেটের সঙ্গে গত ২২ বছরেও মানিয়ে নিতে পারল না বাংলাদেশ দল। ফের ব্যর্থতা সঙ্গী। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সিরিজের প্রথম টেস্টে স্বাগতিকদের কাছে সাত উইকেটের বড় ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ। এ অবস্থায় জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বর্তমান বোর্ড পরিচালক আকরাম খান জানালেন, বেশি চাপ নিয়ে ফেলার কারণেই জলদি ভেঙে পড়ছে বাংলাদেশের ব্যাটিং।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) হাই-পারফরম্যান্স ইউনিটের (এইচপি) ক্যাম্প পরিদর্শনকালে মঙ্গলবার বাংলাদেশের চলমান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন এইচপির ভাইস চেয়ারম্যান আকরাম খান। তার সেই আলাপচারিতার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো এখানে-
বিসিবি এইচপি ক্রিকেটারদের যা করনীয়
গুরুত্বপূর্ণ হল এই বয়সেই একটা লক্ষ্য ঠিক করা। সাকিব-তামিম-মুশফিকরা যখন এই বয়সে ছিল তখনও ওদের মতোই স্ট্যান্ডার্ডে ছিল বা একটু বেশি ছিল। ওরা ওই সময়ে একটা লক্ষ্য ঠিক করেছে যে আমরা নিজেদের ভাল মানের ক্রিকেটার হিসেবে তৈরি করবো এবং ওই পর্যায়ে ওরা উঠেছে। এই ক্রিকেটারদের এই সুযোগটা দারুন। অনেক ক্রিকেটার আছ এইচপিতে সুযোগ পাচ্ছে না। এরা এখানে এসে কোয়ালিটি কোচ পাচ্ছে, সুবিধাও পাচ্ছে। আমাদের ভাল ক্রিকেটার আছে কিন্তু কোয়ালিটি ক্রিকেটারের সংখ্যা কম, আমরা চাচ্ছি যেন কোয়ালিটি ক্রিকেটার আছে। অনেকে গ্র্যাজুয়েশন করার আগেই ছোট ফরম্যাটে খেলার চিন্তা করে ফেলে। একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে যারা টেস্টে ভাল করে তারা সব ফরম্যাটেই ভাল করে। তো লক্ষ্যটা ঠিক রাখতে হবে টেস্টের জন্য। তো ওদের ফিটনেস বাকি সবকিছু ঠিক আছে তো সেভাবে যদি লক্ষ্য ঠিক করে তাহলে কোয়ালিটি ক্রিকেটার উঠে আসবে।
এইচপি ক্রিকেটারদের চাওয়া
সিলেটে বৃষ্টির জন্য ভালভাবে অনুশীলন করতে পারছিল না। তো বলার সাথে সাথে আমরা মিরপুরে নিয়ে এসেছি। রাজশাহীতে ওদের তিনদিনের ম্যাচ ছিল সেটা চারদিনের ম্যাচ করেছি। আমাদের অনুশীলন চলছে আর সুবিধা যত ভাল করা যায় সেই চেষ্টা করছি। আর সব জায়গায় তো ভাল উইকেট পাবেন না যে কোন উইকেটে-কন্ডিশন মানিয়ে নিতে হবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে প্রথম টেস্ট হার কিভাবে দেখছেন…
টেস্টে যে রকম আশা করেছিলাম সেরকম কিন্তু হচ্ছে না। কারণ আমাদের একসঙ্গে কয়েকটা ব্যাটসম্যান ফর্মে নেই। ছোট ফরম্যাটে যেমন হয় আপনি এক-দুটা ওভার ভাল করেও রিকোভারি করা যায়। কিন্তু টেস্টে এরকম না একসঙ্গে দল হয়ে ভাল করতে হয় মানে ১১ জনকেই ভাল খেলতে হয়। তো এখানে আমরা শুরুতেই অন্যদের দেয়া চাপে পড়ে যাচ্ছি। এ ধরনের হলে কিন্তু আমাদের পারফরম্যান্স ভাল হবে না। যেমন আমরা গত কিছু টেস্টে খারাপ করছি। আশা করছি পরের ম্যাচ থেকে যেন ব্যাপারটা বদল হয়। দ্বিতীয় ম্যাচে শুরু থেকে আমাদের ডমিনেট করতে হবে। ওরা (উইন্ডিজ) যদি আমাদের ডমিনেট করে ফেলে তাহলে আবারও একই ফল হবে। কারণ যেহেতু আমরা মানসিক ভাবে এখন একটু ডাউন আছি তাই কামব্যাক করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বোলিং ভাল
শুধু বোলিং না দল হিসেবে ভাল করতে হবে। ব্যাটসম্যানরা লম্বা ইনিংসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন যদি ১৫০ করে তাহলে বাকিদের দিয়ে ৩০০ সম্ভব। লম্বা ইনিংস না খেললে পারফরম্যান্স সম্ভব না।
এই অবস্থা কী করে কাটিয়ে উঠা যায়…
একটাই-মানসিক স্বচ্ছন্দতা বাড়াতে হবে। বেশি চাপ নিয়ে নেয় তাহলে সম্ভব না। আমাকে রান করতেই হবে এ জিনিসটা হলে হবে না। আর প্লেয়ারদের মিডিয়াকে অ্যাভয়েড করতে হবে। এ জিনিসটা করলে ভাল হয়। আপনারা দেখেছেন ভারত যখন চ্যাম্পিয়ন হয় তার আগে এক বছরের মতো কোন ক্রিকেটারকেই মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে দেখিনি। কারণ মিডিয়া ভাল করলে ভাল, আর যদি খারাপ করে তাহলে মিডিয়ার নিউজগুলো পড়লে মানসিক চাপটা বেড়ে যায়। তো ক্রিকেটারদেরকে মিডিয়া থেকে একটু দূরে থাকতে হবে।
এনামুল হক বিজয় ও শরিফুল ইসলাম দলে যোগ দিয়েছেন উইন্ডিজে। আছেন দ্বিতীয় টেস্টের দলে…
এটা তো ভাল। বিজয় তো পারফরমার আগেও সে উইন্ডিজে খেলেছে। তবে আমাদের এই মুহুর্তে এক দুজনের কথা না ভেবে দল হিসেবে ভাল খেলতে হবে।
Discussion about this post