ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
রীতিমতো উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গন। মুখোমুখি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও দেশের শীর্ষ ক্রিকেটাররা। সাকিব আল হাসানদের এগারো দফা দাবিতে ধর্মঘটের পেছনে বিশেষ মহলের চক্রান্ত হিসেবেই দেখছেন নাজমুল হাসান পাপন। এ অবস্থায় ক্রিকেটাররা সোমবারই স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিসিবি তাদের ১১ দফা না মানলে সব ধরণের ক্রিকেটই বয়কট করবেন তারা।
এ অবস্থায় কড়া অবস্থানে বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি জানালেন, বৃহস্পতিবার থেকে নির্ধারিত জাতীয় লিগের তৃতীয় রাউন্ডে না খেলে এবং ভারত সফরের ক্যাম্পে যোগ না দেয়, তাহলেও নিজেদের করণীয় কিছু দেখছেন না। তার এমন কথায় শঙ্কায় পড়ল টাইগারদের ভারত সফর।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন মুখোমুখি হন গণমাধ্যমের। সেখানে ক্রিকেটারদের ধর্মঘট নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
পাপন তার বক্তব্যে যা বললেন-তা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
‘দেখুন দাবি ওরা জানাতেই পারে। খুবই ন্যাচারাল। কিন্তু সেটির জন্য তারা স্ট্রাইকে গেছে, এটা এক্সট্রিমলি শকিং। আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না, আমাদের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে এমন কিছু হতে পারে। ওদের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে। আমার চেয়ে বেশি মনে হয় না কেউ যোগাযোগ রাখে। ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে শুরু করে সবকিছুতে কথা হয়। আমি তো বহুদূর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছেও ওদের অ্যাকসেস আছে। বলার কিছু থাকলে ওরা বলতে পারত।’
ক্রিকেটারদের ১১ দফা দাবি নিয়ে পাপন বলেন, ‘ওরা তো চাইলেই পাবে, আসেনি কেন? আমাদের কাছে চাচ্ছে না কেন? ফোন ধরছে না। সবকিছুর পেছনে কারণ আছে। আমাদের কাছে না গিয়ে মিডিয়ায় বলেছে, সেটির পেছনে বিশেষ কারণ আছে। আমাদের সুযোগ না দিয়ে মিডিয়ায় গিয়েছে। এটি বিশেষ একটি পরিকল্পনার অংশ। পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। একজন লোকই আছেন, যিনি বারবার এসব করছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত চলছে। এই ষড়যন্ত্রের কথা সরকার থেকে শুরু করে সবাই জানে। সব ক্রিকেটার এটির সঙ্গে জেনে শুনে জড়িয়েছেন বলে মনে হয় না। ১-২ জন জানতে পারে। এই মুহূর্তে বের করা দরকার, কারা এই কাজ করছে। কিছুদিনের সময় চাচ্ছি আপনাদের কাছে। সব বের করে ফেলব।’
ষড়যন্ত্র ইঙ্গিত করে নাজমুল হাসান আরও বলেন-
‘বাংলাদেশ ক্রিকেটের বিপক্ষে বড় ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এটি শুরু হয়েছে বিসিবির একজন পরিচালক গ্রেফতারের পর। উনি গ্রেফতার হবার পর পুরো ব্যাপারটা নিয়ে বাইরের লোক ষড়যন্ত্র করছে। আইসিসির কাছে অভিযোগ করে জিম্বাবুয়ের মতো আমাদের বোর্ডকে সাসপেন্ড করাতে চেয়েছে। সেটিতে সফল না হয়ে দ্বিতীয় ধাপে ক্রিকেটারদের ব্যবহার করছে। হ্যাঁ, ক্রিকেটাররা মিডিয়ার কাছে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়ায় আইসিসি, এসিসি থেকে শুরু করে সব জায়গায় আমাদের জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে। আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করায় ওরা তাই সফল হয়েছে।’
ক্রিকেটারদের ব্যাবহার করা হচ্ছে বলে মনে করেন বিসিবি সভাপতি। তার কথা-
‘সব খেলোয়াড় এটি জেনেশুনে করছে, আমার তা মনে হয় না। এক-দুজন তেমন থাকতে পারেন। বাকিরা ব্যাপারটা না জেনেই করছে। দলের মধ্যে কেউ যদি থেকে থাকে, যে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে– তাকে আমরা অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। পুরো প্ল্যান জানে এক-দুজন। খুব শিগগিরি সব প্রকাশ হবে। খেলোয়াড়রা না খেললে খেলবে না! আমাদের কিছু করার নেই। ওরা ক্যাম্পে গেলে ভালো, না গেলে যাবে না। ক্রিকেটারদের ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা নিজেরাও জানে না। ২-১ জন জানতে পারে। আমার দুয়ার ওদের জন্য খোলা। ওরা যদি আমার কাছে আসে, অবশ্যই কথা হবে। আমি তো কথা বলতেই চাই। আমি আশা করি ক্যাম্প চলবে, ভারত সফর হবে।’
Discussion about this post