শেষ পর্যন্ত সরেই যেতে হচ্ছে মুমিনুল হককে। ব্যাটে রান নেই, নেতৃত্বেরও নেই ম্যাজিক। অনেকটা পালিয়ে বাঁচতে যেন চাইছেন তিনি। সমালোচনার মুখে চাপও নিতে পারছেন না। টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে ব্যাটিংয়ে পুরো মনোযোগ দিতে চান মুমিনুল। এ কারণেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে সাফ জানালেন- তিনি আর নেতৃত্বে থাকতে চান না। বোর্ড অবশ্য মিটিং শেষে এনিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টেস্ট অধিনায়ক ইস্যুতে আলোচনা করতেই স্বস্ত্রীক মুমিনুল যান পাপনের গুলশানস্থ বাসায়। সেখানে তিনি জানিয়ে আসেন টেস্ট অধিনায়ক থাকতে চান না। তিনি দ্বায়িত্ব ছাড়তে চাওয়ায় আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই টেস্টে দেখা যেতে পারে নতুন টেস্ট অধিনায়ক।
কোন অভিমান থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেননি মুমিনুল ‘আমি আসলে জিনিসটা চাচ্ছি না। ব্যক্তিগতভাবে আসলেই চাচ্ছি না। না এটা অভিমান থেকে নয়।’ প্রায় ৩০ মিনিটের বৈঠক শেষে বের হয়ে সংবাদমাধ্যমকে নিজের অধিনায়কের পদে না থাকার সিদ্ধান্তের কথা জানান এই ব্যাটসম্যান।
মুমিনুল হক বলেন, ‘আমি বলেছি, অধিনায়ক হিসেবে আমি দলে অবদান রাখতে পারছি না। আমার কাছে মনে হয় এই মুহূর্তে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া উচিৎ। আমি তো বলে আসছি এখন ওনারা কী সিদ্ধান্ত নেয় ওনাদের ব্যাপার। আপাতত আমি চাচ্ছি ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে, এটা আমার জন্য ভালো। সামনে বোর্ড মিটিং আছে, ওখানে ওনারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এমনটা সমালোচনার মুখে পড়ে বলছেন না। জানালেন, ‘কারও ভয়ে নয়। দেখেন যখন আপনি ভালো খেলবেন দল খারাপ করলেও মোটিভেট করতে পারবেন। আমিও ভালো খেলতে পারছি না, দলও ভালো করছে না। এই সময়ে অধিনায়কত্ব করা খুবই কঠিন।’
ব্যাট হাতে এখন তো দারুণ দুঃসময়। সবশেষ ১০ ইনিংসে করেছেন মাত্র ৭৪ রান। ৮ ইনিংসেই দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি। তিনটিতেই মেরেছেন ডাক। নাজমুল হাসান পাপন পুরো প্রসঙ্গ নিয়ে বলেন, ‘মুমিনুলের অধিনায়কত্ব নিয়ে আমরা খুব একটা চিন্তিত নই। সমস্যাটা হচ্ছে ওর ব্যাটিং নিয়ে, ও রান পাচ্ছে না। এটা তো চিন্তার বিষয়। একজন অধিনায়ক যখন রান করে না, তখন ওর কী মানসিক চাপটা পড়ে তা চিন্তা করেন। তাই আমরা এখন শুধু আশা করতে পারি যে ও তাড়াতাড়ি রানে ফিরুক।’
অধিনায়ক হওয়ার আগে মুমিনুলের ব্যাটিং গড় ছিল ৬৭ ইনিংসে ৪১.৪৮। অধিনায়ক হওয়ার পর গত ৩১ ইনিংসে গড় ২৯.৪২! ৫৩ টেস্ট ক্যারিয়ারে মোট রান ৩৫২৫। অধিনায়ক হওয়ার পর রান করেন ৯১২। তার মানে নেতৃত্ব কাবু করে ফেলছে তাকে!
নতুন টেস্ট অধিনায়কের দৌড়ে আছেন অনেকেই। তবে এগিয়ে সাকিব আল হাসান। তিনি হ্যাঁ বলে দিলে স্বস্তি পাবে বিসিবি আর দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।
Discussion about this post