ঘড়ির কাঁটা তখন সকাল ছয় ছুঁই ছুঁই। ঢাকার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আশপাশ তখনও পুরোপুরি জেগে ওঠেনি। তবে মাঠের ভেতরে শুরু হয়ে গেছে ব্যস্ততা-বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাথমিক স্কোয়াডের ক্রিকেটাররা তখন ফিটনেস পরীক্ষার জন্য নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন।
সপ্তাহজুড়ে চলবে এই ঘাম ঝরানো মিশন। এশিয়া কাপ ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হোম সিরিজ সামনে রেখে বিসিবির ক্যালেন্ডারে এখন চলছে ‘ফিটনেস ফার্স্ট’ নীতি।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বর্তমান ধারায় পাওয়ার হিটিং গুরুত্বপূর্ণ। আর তার জন্য চাই মাংসপেশির শক্তি, শরীরের সহনশীলতা। তাই তো লোড ম্যানেজমেন্ট আর স্কিলের বাইরে এসে বিসিবি এবার পুরো পরিকল্পনার গোড়াতেই তুলে ধরেছে ফিটনেসকে।
প্রাথমিক দলে ডাক পাওয়া ১৬ ক্রিকেটার যোগ দিয়েছেন ক্যাম্পে। লিটন, হৃদয়, রিশাদরা দেরিতে ফিরেছেন অস্ট্রেলিয়ার সফর শেষে। তাসকিন ছুটিতে, হজের উদ্দেশ্যে। বাকিরা নিয়মিত ব্যাটে-বলে নয়, বরং শরীরচর্চায় ব্যস্ত। জাতীয় দলের স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ নাথান কেলির অধীনে চলছে প্রতিটি অনুশীলন, যেখানে কোনো ফাঁকির জায়গা নেই।
ক্যাম্পে দেখা গেছে এমন কিছু দৃশ্য, যেগুলো নজর কেড়েছে সবার। যেমন, শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে বারবার সতর্ক করতে দেখা গেছে কোচকে। কারণ, ফিটনেসে ছাড় নেই। আরেকদিকে ডায়নামিক আর্ম সুইং, লেগ সুইং-এই সব ড্রিলের মধ্যেই ঘাম ঝরাচ্ছেন ক্রিকেটাররা।
সবচেয়ে আলাদা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার-মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। জাতীয় দলে নেই, তবুও ক্যাম্পে হাজির হয়েছেন তারা। মুশফিক এখনো টেস্ট দলে থাকলেও, মাহমুদউল্লাহ প্রায় এক বছর ধরে জাতীয় দলে অনিয়মিত। তবু তাঁদের ফিটনেস ধরে রাখার চেষ্টা এবং জুনিয়রদের অনুপ্রেরণা দেওয়া, এই ক্যাম্পকে দিয়েছে বাড়তি গুরুত্ব।
মাহমুদুল হাসান জয়কে নিজের অভিজ্ঞতায় ব্যাটিং টিপস দিতে দেখা গেছে মাহমুদউল্লাহকে। এসব মুহূর্তই ক্যাম্পে অন্যরকম এক পরিবেশ তৈরি করেছে।
ফিটনেস ক্যাম্প শেষে ১৫ আগস্ট থেকে শুরু হবে স্কিল ক্যাম্প। তার আগে পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উড যোগ দেবেন ১০ আগস্ট। এরপর ধাপে ধাপে প্রধান কোচ ফিল সিমন্সসহ অন্যান্যরা এসে সম্পূর্ণ করবেন টিম ম্যানেজমেন্ট।
২০ আগস্ট থেকে শুরু হবে সিলেট পর্ব। সেখানেই মূল প্রস্তুতি শেষ করে ডাচদের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে নামবে বাংলাদেশ। সিরিজের ম্যাচ ৩০ আগস্ট, ১ ও ৩ সেপ্টেম্বর। এরপরই দল উড়াল দেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে, এশিয়া কাপ খেলতে।
Discussion about this post