২০১৫ সালে ওয়ানডে ক্রিকেটে দারুণ দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ১৩ ওয়ানডে জয়ের তৃপ্তি নিয়ে বছর শেষ করে টাইগাররা। অথচ সেই দলটিই কীনা একবছর ৫০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারছে না।
জানা গেল একবছর ওয়ানডে ক্রিকেটের বাইরে থাকবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। অপ্রিয় হলেও সত্য আইসিসির সূচিতে স্থান নেই লাল-সবুজের।
এইতো ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর শেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। আইসিসি’র ক্রীড়াসূচি অনুযায়ী, ২০১৬ সালের নভেম্বরের আগে কোন ওয়ান ডে ম্যাচ নেই টাইগারদের। ১৯৯৭ সালে আইসিসি বাংলাদেশকে ওয়ানডে খেলার মর্যাদা দেওয়ার পর এত দীর্ঘ বিরতি পায়নি তারা। অথচ ২০০৬ সালের নভেম্বরে আর্ন্তজাতিক টি-টুয়েন্টিতে অভিষেকের পর থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ৪৬টি আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে যারা, সেই বাংলাদেশ দলের সামনে ২০১৬ সালে হাতছানি দিচ্ছে রেকর্ড সংখ্যক ১৭টি টি-টুয়েন্টি ম্যাচ।
জিম্বাবুয়ের সঙ্গে এই মাসে ৪টি টি-টুয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ হবে। সব মিলিয়ে এ বছর নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি টি-টুয়েন্টি খেলার সুযোগ পাচ্ছে টাইগাররা।। এর আগে ২০১৪ সালে এক বছরে সর্বাধিক ১০টি টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ।
টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের বছরে রেকর্ড সংখ্যাক ১৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার হাতছানি তাদের সামনে। এই বছরে আর কোন দল বাংলাদেশের মতো এতো আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে না।
আইসিসি টেস্ট ক্রিকেটে র্যাংঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ রয়েছে ৯-এ। টি-টোয়েন্টি র্যাংঙ্কিংয়ে আফগানিস্তানের মতো আইসিসি’র সহযোগী সদস্য দেশ পর্যন্ত বাংলাদেশের উপরে (আফগানিস্তান ৯, বাংলাদেশ ১০)।
২০১৬ সালে যেখানে বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে ৭টি টেস্ট এবং ৬টি ওয়ান ডে, সেখানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্বের বাধা পেরিয়ে সুপার টেনে উঠতে পারলে বাংলাদেশ খেলবে ১৭টি আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি।
২০০৬ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ দল। এগারো বছর পর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা অর্জনে বাংলাদেশ দলকে কম পরীক্ষা দিতে হয়নি। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আইসিসি-র শর্ত মেটাতে হয়েছে। ২০১৫-র সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওয়ান ডে র্যাঙ্কিংয়ে আট নম্বরের মধ্যে থাকার সে শর্ত মিটিয়েছে তারা। আইসিসি-র ওয়ান ডে র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ উঠে এসেছে ৭ নম্বরে। তবে আইসিসি-র সূচির জেরে ২০১৭ সালের জুনে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার প্রস্তুতিটা কিন্তু সে ভাবে নেওয়ার সুযোগ আপাতত নেই বাংলাদেশ দলের। কারন, ২০১৬ সালে আইসিসি-র ক্রীড়াসূচিতে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৬টি ওয়ান ডে, তা-ও আবার বছরের শেষ দিকে ২টি সিরিজে।
অক্টোবরে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ান ডে এবং ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরে সমসংখ্যক ওয়ান ডে। আশ্চর্য হলেও সত্যি, আইসিসি-র সূচিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ৫ মাসে কোন আর্ন্তজাতিক সফর নেই বাংলাদেশ দলের। ২০১৭-র জানুয়ারি থেকে মে— এই ৫ মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটহীন কাটাতে হবে বাংলাদেশ দলকে।
টেস্ট মর্যাদা পাবার পর ২০০১ সালে দ্বি-পাক্ষিক সফরসূচিতে ৬টি ওয়ান ডে ম্যাচে সন্তুস্ট থাকতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। ২০১৬ সালেও আইসিসি-র এফটিপিতে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ ৬টি ওয়ান ডে ম্যাচ। ২০০৬ সালে রেকর্ড ২৮টি, কিংবা ২০১০ সালে ২৭টি, ২০০৮ সালে ২৬টি, ২০০৭ সালে ২৩টি, ২০১১ সালে ২১টি-২০’র ঘরে থাকা বছরগুলো এখন শুধুই অতীত। ২০১৫ সালে ওয়ান ডে ক্রিকেটে অন্য উচ্চতায় উঠে আসা বাংলাদেশ দল খেলেছে মোট ১৮টি ওয়ান ডে। জিতেছে ১৩টিতে।
Discussion about this post