উৎসবের শহর থেকে শোকের শহরে পরিণত হলো ভারতের আহমেদাবাদ। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের শহর, যেখানে কিছুদিন আগেই আইপিএলের জমকালো ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল—সেই শহরেই ঘটল ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। এয়ার ইন্ডিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২৪৭ জন।
আজ দুপুরে সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে এআই১৭১ ফ্লাইটটি। কিন্তু উড্ডয়নের পাঁচ মিনিটের মাথায় এটি ভেঙে পড়ে আহমেদাবাদের মেঘানি নগর এলাকার বিজে মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের ক্যানটিনে। এ সময় ক্যানটিনে থাকা শিক্ষার্থীরা মধ্যাহ্নভোজে ব্যস্ত ছিলেন।
বিমানটিতে ২৩০ যাত্রী ছাড়াও ছিলেন ২ পাইলট ও ১০ জন ক্রু সদস্য। সবাই ঘটনাস্থলেই নিহত হন। বিমানটির আঘাতে প্রাণ হারান মেডিকেল কলেজের ৫ শিক্ষার্থীও। পুলিশ ও দমকল বাহিনী তাৎক্ষণিক উদ্ধার অভিযানে নামে, তবে কাউকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনার পরপরই দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ভারতের ক্রীড়াঙ্গনের শীর্ষ তারকারা সামাজিক মাধ্যমে একে একে তাদের শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।
বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার ইরফান পাঠান টুইটারে লেখেন, ‘আজ আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার খবরে গভীরভাবে শোকাহত। যাত্রী, ক্রু ও তাঁদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা।’
যুবরাজ সিং শোক জানিয়ে বলেন, ‘আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার হৃদয়বিদারক খবর। যাত্রী, ক্রু এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা এবং প্রার্থনা। এই কঠিন সময়ে তাঁরা যেন শক্তি পান।’
হরভজন সিং, সূর্যকুমার যাদব, ইউসুফ পাঠান, এবং রশিদ খান—সবাই এই দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি জানিয়েছেন।
শুধু ব্যক্তিগতভাবে নয়, পাঞ্জাব কিংস ও গুজরাট টাইটানস-এর মতো আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও সামাজিক মাধ্যমে শোক বার্তা প্রকাশ করেছে।
দুর্ঘটনায় কেবল ক্রিকেটার নয়, সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন ভারতের কুস্তিগির ভিনেশ ফোগাট ও ব্যাডমিন্টন তারকা পিভি সিন্ধু। তাঁদের বার্তায় ফুটে উঠেছে সমবেদনা, প্রার্থনা এবং হারানো প্রাণগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা।
বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। কর্তৃপক্ষ বলছে, একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ব্ল্যাক বক্স উদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে।
উল্লাসের শহর আজ কান্নায় ডুবে গেছে। একটি দুর্ঘটনা মুহূর্তেই ২৪৭টি প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, ভেঙে দিয়েছে অসংখ্য পরিবার। ভারতের ইতিহাসে আরেকটি দুঃসহ দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে আজকের এই ট্র্যাজেডি।
Discussion about this post