(চট্টগ্রামে দুই ইনিংসেই তার ব্যাটে শতরান। এমন কীর্তি এবারই প্রথমবারের মতো গড়ল বাংলাদেশের কোন ব্যাটসম্যান। প্রথম ইনিংসে ১৭৬। ২য় ইনিংসে রোববার করলেন ১০৫। চট্টগ্রাম টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার বীরত্বেই ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ল দল। ম্যাচ শেষে রোববার তাকে নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রনি। তার সেই স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল)
বাংলাদেশের কোচ হিসেবে প্রথম সফরেই হাথুরুসিংহে আবিষ্কার করেছিলেন, এই ছেলেটা শর্ট বলে দুর্বল…
এই ছেলেটাকে হাথরুসিংহে ওয়ানডে দলে রাখতে চাননি, বিশ্বকাপে নিতে চাননি। অধিনায়কের সঙ্গে পেরে ওঠেননি বলে বাধ্য হয়েছিলেন নিতে। পরে অধিনায়ককে না জানিয়েই বাদ দিয়েছিলেন। একাদশেতো বটেই, ওয়ানডে স্কোয়াডেও জায়গা না থাকায় ছেলেটার বড় বিপদ হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের বাস্তবতায় শুধু টেস্ট খেলে নিজেকে কতটা তৈরি রাখা যায়!
এই ছেলেটার তখন আরও দু:সময়। টেকনিক্যালি একটু সমস্যা হচ্ছিলো। কোচ হাথুরুসিংহে সেটি নিয়ে কাজ না করে ঘোষণা করলেন ছেলেটি অফ স্পিন খেলতে পারে না…
এই ছেলেটাকে টেস্ট স্কোয়াড থেকেই বাদ দেওয়া হলো। সংবাদমাধ্যমের প্রবল সমালোচনার পর বোর্ড প্রধানের হস্তক্ষেপে ফেরানো হলো আরেকজনের বদলী হিসেবে। প্রথম অনুশীলন সেশনে ছেলেটিকে এমন ভাষায় স্বাগত জানালেন হাথুরুসিংহে , যেটি স্তম্ভিত করে দিল দলের সিনিয়র-জুনিয়র সবাইকে। একজন কোচ নিজেদের ক্রিকেটারকেই এত বাজে ভাবে বলতে পারেন…!
সংবাদ সম্মেলনে কোচকে জিজ্ঞেস করা হলো, “যে ছেলেটি আগে এত ভালো ছিল, সে আপনার সময়ে এত খারাপ হয়ে গেলে,কোচ হিসেবে আপনার দায় কতটুকু? তার সমস্যা থাকলে তো শুধরে দিতে পারেন?” হাথুরুসিংহে পাথুরে মুখে বলেছিলেন, “আমার দায় নেই…”
এসব বড় বড় ঘটনার মাঝে ছিল আরও অসংখ্য ছোট ছোট অবজ্ঞা, বঞ্চনা, অবহেলার ছোবল। প্রতিটিই একেকটি ঘুণ পোকা। ছেলেটির আত্মবিশ্বাস খেয়ে প্রায় শেষ করে দিয়েছিল…
প্রথম ১২ টেস্টে ৪ সেঞ্চুরি ছিল ছেলেটির। গড় তখনও ৭৫… হাথুরুসিংহে জমানায় একটি সেঞ্চুরি। তার পর ১৩ টেস্টের খরা…। গড় নামল। গড় কমল…!
হাথুরুসিংহে জমানা শেষে প্রথম টেস্টেই সেই ছেলেটি করলেন জোড়া সেঞ্চুরি। নতুন অধ্যায়, নতুন ইতিহাস…
Discussion about this post