হঠাৎ করেই সিদ্ধান্তটা নিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ডিসিপ্লিনারি কমিটি। এক চোখা এক সিদ্ধান্ত। সব ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রম থেকে আজীবনের জন্য লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কর্নধার লুৎফর রহমান বাদলকে নিষিদ্ধ করেছে তারা।
এত বড় শাস্তি, অথচ কোন শুনানি নেই। নেই কোন শো’কজ নোটিশও। রাতারাতি শাস্তির সুপারিশ হল। মঙ্গলবার গভীর রাতেই বৈঠক ডেকে সেই শাস্তি অনুমোদনও করা হল। এত দ্রুত বিচারের নজির তো কোথাও নেই!
বিসিবি ও এর কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়ে মন্তব্যের কারণে লুৎফর রহমানকে এমন কঠিন শাস্তি দিল বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি। পাশাপাশি ক্লাবের যুগ্ম সচিব তরিকুল ইসলামকে ৫ বছরের এবং আরেক কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ রুবেলকে ৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে লুৎফর রহমান ও তারিকুল ইসলামকে লিগ থেকে সাময়িক নিষিদ্ধ করে সিসিডিএম (ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস)।
অথচ এই সিদ্ধান্তগুলো আসার আগেই বিসিবি প্রধানের কাছে ও সংবাদমাধ্যমে পাঠানো চিঠিতে তাৎক্ষণিক উত্তেজিত মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন লুৎফর রহমান।
এমন শাস্তিটা যে একচোখা সিদ্ধান্ত হয়ে গেল তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কর্নধারকেও আক্রমন করেছিলেন বোর্ডের অনেক কর্তা ব্যাক্তি। তাদের কিছুই হল না।
ম্যাচ ফিক্সিংয়ের দায়ে শাস্তি মাত্র তিন বছর সেখানে বিসিবি সভাপতি ও পরিচালকরদের বিরুদ্ধে মন্তব্যের জন্য আজীবন নিষিদ্ধ! বিস্ময়কর বটেই।
তাইতো সোচ্চার এখন ক্রিকেটপ্রেমীরা। দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইনে পাঠকরা পাশে দাড়ালেন লুৎফর রহমানের।
স্বাপ্নিক রায় নামে একজন লিখেছেন-”মি. বাদল প্রমান করলেন যে তিনি একজন ভদ্রলোক। আমি তো বলবো এখন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনেরও ক্ষমা চাওয়া উচিত।” পাপনকে বিসিবিতে দেখতে চায়না বলেও জানাল সেই ক্রিকেট ভক্ত।
ডাক্তার নাজমুল ইসলাম লিখেছেন- ”লুৎফর ভাই, আপনি ভাল মানুষ। সারা দেশটাই পাপনদের হাতে জিম্মি। দুঃখ করবেন না। এগিয়ে যান ।”
আবদুল্লাহ আল মামুন নামের একজন লিখলেন-”শেষ পর্যন্ত বাদলই জিতলেন। জিতলো ক্রিকেট। স্পোর্টিং শব্দের ঠিকঠাক প্রয়োগ করলেন বাদল।”
সারোয়ার নামে এক পাঠকের বিস্ময় “বিস্ময়করভাবে রাতেই বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভা বসে….” এভাবে বিস্ময়করভাবে বিসিবির পথচলা আর কতদিন ?!”
আলাউদ্দিন লিখেছেন- ”ভেতরে আহারকক্ষ লোকে লোকারণ্য। গলা ফাটিয়ে, হাত-পা ছুড়ে যারা একটু আগে দেশের ক্রিকেট ‘রক্ষায়’ ঘাম ঝরিয়ে এলেন, তাঁদের জন্য ভূরিভোজের ব্যবস্থা। আয়োজন যেন বিয়ে বাড়ির। পোলাও-রোস্ট খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে তুলতে অনেকে চলে গেলেন বাইরে, অনেকে ঢুকলেন ভেতরে। শেরেবাংলার গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে আনন্দ-আড্ডা, ছবি তোলা, খোশগল্প, ঘোরাঘুরি সব এই সত্যি কথা বলার জন্যই ধন্যবাদ লুৎফর রহমান ভাই। আপনার এমন মন্তব্য না হলে ৮ ডিসেঃ এমন খাওয়া হতো না।………. হায়রে পৃথিবী, হায়রে বাংলাদেশ।”
পাপন-সুজনের শাস্তি দাবি করলেন অনেকে। তাদের মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদ ফোরকানউদ্দিন লিখেছেন- ”বাদল আপত্তিকর মন্তব্য করাই তাকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হল কিন্ত পাপন, সুজন কি তার থেকে ভাল ব্যাবহার করেছে??? বাদল কে নিষিদ্ধ করার আগে পাপন, সুজন কে নিষিদ্ধ করা হোক। পাপন সুজন এরাই বাংলাদেশের ক্রিকেটের বিষফোঁড়া।বিসিবি কে তারা রাজনিতীর মঞ্চ বানিয়ে ফেলেছে।”
সালাউদ্দিন নামের একজনের মন্তব্য -”সব কিছুই বুঝলাম ও মানলাম, কিন্তু বিচারপতির বিচার যে কে করবে তাকে খুজে পাইনা, এই মুহূর্তে এসব বিচারপতিদের বিচার করাই সবচেয়ে জরুরী ।”
Discussion about this post