লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৪৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হারতে হল অস্ট্রেলিয়াকে। জয়ের জন্য অজিদের সামনে ৫৮৩ রানের যে টার্গেট দিয়েছিল ইংল্যান্ড তার তুলনায় এভারেস্ট জয়ও নিতান্ত ছেলেখেলা। তো সেই অনতিক্রম্য টার্গেটের পেছনে তাড়া করে শেষ পর্যন্ত ২৩৫ রানেই গুটিয়ে যেতে হয় সফরকারীদের। তবে হারের ব্যবধান আরও বড় হতে পারত যদি টেল এন্ডাররা ব্যাটসম্যান বনে না যেতেন! ওদিকে বিশাল এ জয় দিয়ে স্বাগতিকরা একটা হাফসেঞ্চুরিও করে ফেলল! সেটা কী? লর্ডসে এটা ছিল ইংল্যান্ডের ৫০তম টেস্ট ম্যাচ জয়। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেও অজি ব্যাটিংয়ের সেই হতশ্রী দশা। লাঞ্চের কিছু আগে ৩৬ রানেই নেই ৩ উইকেট। শেন ওয়াটসন ফের বুঝিয়ে দিয়েছেন তাকে ওয়ানডে ক্রিকেটেই মানায়, টেস্টে নয়। আর ওপেনিংয়ে তো নয়ই। কাল করে গেলেন ২০ রান। তার চেয়েও বড় কথা, গত তিনটি ইনিংসের মতো একইভাবে আউট হলেন তিনি। এবার জেমস অ্যান্ডারসনের বলে আরও একবার এলবিডব্লিউ। আরেক ওপেনার ক্রিস রজার্স (৬) স্পিনার গ্রায়েম সোয়ানের বল না বুঝে ছেড়ে দিয়ে সোজা বোল্ড। ফিল হিউজও ১ রানে এলবিডব্লিউ সোয়ানের বলে। ৩ উইকেটে ৪৮ রান নিয়ে লাঞ্চে যায় অস্ট্রেলিয়া।
বিপদে কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক ও উসমান খাজা। ৯৮ রানের একটি মোটামুটি বড় জুটিও গড়েন তারা। কিন্তু চা বিরতির ঠিক আগে টানা ৩ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে একেবারেই হারিয়ে যায় অজিরা। যার মূলে কোনো ইংলিশ নিয়মিত বোলার নন, অনিয়মিত স্পিনার জো রুট। এ ম্যাচটাকে নিজের ক্যারিয়ারে লাল কালির আঁচড়েই দাগ দিয়ে রাখবেন তিনি। ব্যাট হাতে কাল শেষ পর্যন্ত ১৮০ রানে আউট হন। চা বিরতির আগে তার হাতে বল তুলে দেন ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। তাতেও চমক রুটের। ফিরিয়ে দেন ক্রিজে জমে যাওয়া ক্লার্ক ও খাজাকে। দু’জনই হাফসেঞ্চুরি করে আউট হয়ে যান। চা বিরতি পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৩৬ রানে ধুঁকছিল অজিরা। চা বিরতির পর ব্রেসনানের বলে অ্যাশটন অ্যাগার ১৬ ও উইকেটকিপার ব্রাড হাডিন ৭ রানে সোয়ানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে গেলে হারের অপেক্ষাই করছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু অজি পেসার প্যাটিনসন নবম উইকেটে সিডলকে নিয়ে ৩০ এবং শেষ উইকেটে হ্যারিসকে সঙ্গী করে ৪৩ রান তুললে ইংল্যান্ডের জয়টা শুধু দীর্ঘায়িত করেন। তবে চতুর্থ দিনের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে প্যাটিনসনকে এলবিডব্লিউ করে ম্যাচটি পঞ্চম দিনে গড়াতে দেননি সোয়ান।
এর আগে রোববার সকালে ৫ উইকেটে ৩৩৩ রান নিয়ে খেলতে নেমে ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে ৩৪৯ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। কাঙ্ক্ষিত ডাবল সেঞ্চুরি পাননি রুট। ১৮০ রানে রায়ান হ্যারিসের বলে স্মিথকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। রুট আউট হতেই ইংল্যান্ডের ইনিংস ঘোষণা করে দেন কুক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস : ৩৬১/১০। এবং ২য় ইনিংস : ৩৪৯/৭ ডি. (রুট ১৮০, বেল ৭৪, ব্রেসনান ৩৮, বেয়ারস্টো ২০; সিডল ৩/৬৫, হ্যারিস ২/৩১, প্যাটিনসন ১/৪২, স্মিথ ১/৬৫)। অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস : ১২৮/১০। এবং ২য় ইনিংস : ২৩৫/১০ (ক্লার্ক ৫১, খাজা ৫৪, ওয়াটসন ২০, অ্যাগার ১৬, সিডল ১৮, প্যাটিনসন ৩৫, হ্যারিস ১৬*; অ্যান্ডারসন ২/৫৫, সোয়ান ৪/৭৮, রুট ২/৯, ব্রেসনান ২/৩০)।
ফল : ইংল্যান্ড ৩৪৭ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা : জো রুট।
সিরিজ : পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ২-০ তে এগিয়ে।
			
                                









Discussion about this post