বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন সামনে রেখে অস্থিরতা যেন আরও বেড়ে চলেছে। একের পর এক প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় পুরো প্রক্রিয়া এখন প্রশ্নের মুখে। সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ মোট ১৬ জনের সরে দাঁড়ানোয় নির্বাচনের পরিবেশ নতুন মোড় নিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিসিবি ভবনে হাজির হন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা কয়েকজন। তাদের মধ্যে ছিলেন ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্রের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বাবু, আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের মির্জা ইয়াসির আব্বাস এবং ঢাকা বিভাগের প্রার্থী আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ফুয়াদ রেদুয়ান। তাঁরা তিনটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন-বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ কিছুটা বাড়ানো, প্রয়োজনে একটি অ্যাডহক কমিটি গঠন এবং নির্বাচন পিছিয়ে নতুন সূচি ঘোষণা করা।
রফিকুলের দাবি, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু অনিয়ম ও জটিলতা তৈরি হয়েছে। জেলা-বিভাগের কয়েকজন কাউন্সিলরের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ বাতিল হয়েছে। অথচ সেই ক্লাবগুলো সক্রিয় রয়েছে এবং খেলার মধ্যেই আছে। তার মতে, কাউন্সিলরশিপ বাতিল করার ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এই জটিলতার দ্রুত অবসান হোক। সময় বাড়িয়ে বা নতুন সূচি ঘোষণার মাধ্যমে সবাইকে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। প্রয়োজনে অস্থায়ীভাবে অ্যাডহক কমিটি গঠন করা যেতে পারে।’
যদিও নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল বুধবার দুপুর পর্যন্ত, তবু প্রার্থীদের অনেকে মনে করেন, এখনো সমাধানের সুযোগ আছে। সাংবাদিকদের কাছে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটা প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমরা প্রত্যাহার করেছি। তবে পথ খোলা আছে। দেশের ক্রিকেটের স্বার্থে সমঝোতা হলে সবাই মিলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব।’
নির্বাচন ঘিরে ক্রীড়া উপদেষ্টার বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু রফিকুল ইসলাম তার কাছেই সমাধান খুঁজছেন, ‘উনি এখন শুধু ক্রিকেট নয়, পুরো ক্রীড়া জগতের অভিভাবক। আমরা বিশ্বাস করি তাঁর সিদ্ধান্তেই সংকটের সমাধান হবে।’
প্রার্থিতা প্রত্যাহারকারীদের তালিকায় আছেন তামিম ইকবাল (ওল্ড ডিওএইচএস), রফিকুল ইসলাম বাবু (ইন্দিরা ক্রীড়াচক্র), মাসুদুজ্জামান (মোহামেডান), সাঈদ ইব্রাহীম আহমেদ (ফেয়ার ফাইটার্স), মির হেলাল (চট্টগ্রাম জেলা), সৈয়দ বুরহান হোসেন পাপ্পু (তেজগাঁও ক্রিকেট একাডেমি), ইসরাফিল খসরু (এক্সিউম ক্রিকেটার্স), সাব্বির আহমেদ রুবেল (প্রগতি সেবা সংঘ), তৌহিদ তারেক (পাবনা), অসিফ রাব্বানী (শাইনপুকুর), সিরাজ উদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর (ক্যাটাগরি-৩), ইয়াসির আব্বাস (আজাদ স্পোর্টিং), ফাহিম সিনহা (সূর্যতরুণ), সাইফুল ইসলাম সপু (গুপিবাগ ফ্রেন্ডস) ও ওমর শরীফ মোহাম্মদ ইমরান (বাংলাদেশ বয়েজ)।
এখন চোখ নির্বাচনী কমিশন ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সিদ্ধান্তে। তারা কি প্রস্তাব মেনে নির্বাচনের নতুন রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন, নাকি পূর্বনির্ধারিত সূচি মেনেই ৬ অক্টোবর ভোট হবে-এই প্রশ্নের উত্তরেই নির্ভর করছে বিসিবি নির্বাচনের ভবিষ্যৎ।
Discussion about this post