ফতুল্লার তখন বৃষ্টি আসি আসি করছে। ব্যাট করছিল কলাবাগান ক্রীড়াচক্র। টানা ২৩ ওভার বাউন্ডারির মুখ না দেখা দলটি পিছিয়ে ছিল ডাকওয়ার্থ-লুইসের হিসাবে।
৩৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তানভীর হায়দার ডিপ মিড উইকেট দিয়ে বিশাল এক ছক্কা মারতেই বদলে গেল হিসাব। ডাকওয়ার্থ-লুইসের হিসাবে এগিয়ে গেল কলাবাগান। এবার কলাবাগানের দুই ব্যাটসম্যানের সময় নষ্টের পালা! তাতে তাঁরা সফলও হলেন। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে স্কয়ার কাট করে তানভীরের বাউন্ডারিতে কলাবাগান এগিয়ে গেল আরেকটু। দুই বল পরই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির আগমন। আধঘণ্টা পর পৌনে ৫টায় কাভার সরে গেল, আকাশও হাসল। কিন্তু পর্যাপ্ত সময় নেই, এই যুক্তিতে দুই আম্পায়ার ওখানেই যতি টানলেন ম্যাচের। ৩৫.৪ ওভারে ৪ উইকেটে ১২৭ রান তুলে ডাকওয়ার্থ-লুইসের হিসাবে কলাবাগান জিতে গেল ১০ রানে।
পরাজিত লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ আম্পায়ারদের এই সিদ্ধান্ত হাসিমুখে মেনে নিতে পারেনি। অবশ্য পুরো ম্যাচেই দলটি দুই আম্পায়ার আসাদুর রহমান ও রফিকুল ইসলামের অনেক সিদ্ধান্তে প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানিয়েছে। এ ম্যাচটা জিতলেই পয়েন্ট তালিকায় সবার ওপরে উঠে যেত রূপগঞ্জ।
ম্যাচ শেষে আম্পায়ারিং বিতর্ক কিছুটা হলেও আলো কেড়ে নিয়েছে ম্যাচের সেরা পারফরমার মাশরাফি বিন মুর্তজার ওপর থেকে। কলাবাগান অধিনায়ক আরেকবার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন দলের জয়ে। এবার ৪২ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের সীমিত ওভারের অধিনায়ক। তাঁর ও আরেক পেসার দেওয়ান সাব্বিরের দাপটেই কাল পথ হারিয়ে ১৯১ রানে অলআউট রূপগঞ্জ।
শুরুটা করেছিলেন সাব্বির। রূপগঞ্জের দুই ওপেনার শাহিন হোসেন ও সৌম্য সরকারকে ফেরানোর পর এই ডানহাতি পেসার উইকেটে জমে যাওয়া আসিফের উইকেটটিও নিয়েছেন। ২৫ রানে ৩ উইকেট, ২২ ম্যাচের লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে সেরা বোলিং করেছেন ২৩ বছর বয়সী সাব্বির।
মাশরাফি নিজেকে আক্রমণে এনেছিলেন রূপগঞ্জ ২০ ওভারে ২ উইকেটেই ৫৯ রান তুলে ফেলার পর। প্রথম উইকেটটা নিতে তাঁকে অপেক্ষা করতে হলো মাত্র পাঁচ বল। ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুনকে উইকেটকিপার জসীমউদ্দিনের ক্যাচ বানালেন। ২৭তম ওভারের প্রথম বলে মোশাররফ হোসেনকে ফেললেন এলবিডব্লুর ফাঁদে। ৬ ওভারের প্রথম স্পেলে ২৫ রানে এই ২ উইকেটই নেন মাশরাফি। ৪৪তম ওভারে পরপর দুই বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েও পাননি। শেষ ২টি উইকেট নিয়েছেন ৪৯তম ওভারে।
২০ উইকেট নিয়ে এবারের লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি দিন শেষে সাফল্যের মন্ত্র হিসেবে বললেন জায়গামতো বল রাখাটাকেই, ‘শর্ট রানআপে বল করলেও জায়গামতো বল ফেলার চেষ্টা করছি।’
মাশরাফি অবশ্য ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে দলের জয়েই বেশি খুশি। নবম ম্যাচে পাওয়া চতুর্থ এই জয়ে সুপারলিগে ওঠার স্বপ্নটা বেঁচে রইল কলাবাগানের।
সূত্র: প্রথম আলো
Discussion about this post