বাংলাদেশ ক্রিকেট কিংবদন্তি মুশফিকুর রহিম ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার রাতেই সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে এই ঘোষণা দেন ৩৭ বছর বয়সী মুশফিক।
মুশফিক লেখেন, “আজকে থেকে ওয়ানডে সংস্করণ থেকে অবসরের ঘোষণা দিচ্ছি আমি।” তিনি তার ক্যারিয়ারের শেষ সময়ের দিকে এসে নিজের অবসরের কারণ হিসেবে দেশের প্রতি তার নিবেদন এবং সততা তুলে ধরেন, “সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ। বৈশ্বিক পর্যায়ে আমাদের অর্জন হয়তো সীমিত, তবে একটি ব্যাপার ছিল নিশ্চিত, প্রতিবার দেশের জন্য যখন মাঠে নেমেছি, নিবেদন ও সততা দিয়ে নিজের শতভাগের বেশি দিয়েছি।”
মুশফিকের ওয়ানডে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তার ব্যর্থতা। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই প্রথম বলেই আউট হয়ে বাংলাদেশ দলকে হতাশ করেন তিনি। পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তার ব্যাটিং দুর্বলতা প্রকাশ পায়, মাত্র ২ রানে আউট হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বাংলাদেশের বিদায় নিশ্চিত করেন।
এই ব্যর্থতা দেশের ক্রিকেটে সমালোচনার ঝড় তোলে এবং অনেকেই তার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। সাম্প্রতিক সময়ে মুশফিকের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতার অভাব দেখা দেয়। ১৪ ইনিংসে মাত্র একটি ফিফটি এবং দীর্ঘ ২৭ ইনিংসে সেঞ্চুরির জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষা হয়ে দাঁড়ায়।
এরপর বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে মুশফিকের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। বিশ্বকাপের পরবর্তী আসরে তার বয়স হবে ৪০ বছর, এবং তার ফর্মের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি মিলিয়ে বোর্ডের মধ্যে নতুন প্রশ্ন ওঠে। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন জানিয়েছেন, ২০২৭ সালের বিশ্বকাপে মুশফিকের খেলা কঠিন হতে পারে, এমনকি তার জায়গা নেওয়ার জন্য ভবিষ্যতের দলকে নতুন ভাবনায় এগোতে হবে।
মুশফিকের ক্যারিয়ারের ধারাবাহিকতা ও সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্সের দিকে তাকিয়ে তার আন্তর্জাতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকেই ধারণা করেছিলেন যে, মুশফিক নিজেই এই সিদ্ধান্ত নেবেন। এবং শেষ পর্যন্ত সেটিই হলো।
মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত। তার ব্যাটিং, উইকেটকিপিং, দলের প্রতি আস্থা এবং নেতৃত্বের গুণাবলীর কারণে অনেক স্মরণীয় মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন তিনি।
Discussion about this post