জিম্বাবুয়ে সফরের শেষদিকে টি-টুয়েন্টি সিরিজের আগে দিয়ে হঠাত্ই অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে বসেন। তারপর সেটাকে আবেগতাড়িত সিদ্ধান্ত বলে সিরিজ শেষ করে দেশে ফেরেন। এরপর জাতীয় দলের কোনো কার্যক্রম না থাকায় বোঝা যায়নি কী হবে? মুশফিকই অধিনায়ক থাকবেন না নতুন কাউকে বেছে নেওয়া হবে? ৪৮ ঘণ্টা আগে দূর হয়েছে সে সংশয়-সন্দেহের। বুধবারের বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে মুশফিক রহিমই অধিনায়ক। তবে সেটা আপাতত দীর্ঘপরিসরের জন্য নয়। এ বছর পর্যন্ত। হোক তা অল্প সময়ের জন্য তবু অধিনায়কত্ব বহাল থাকা বলে কথা। নতুন করে দায়িত্ব পাওয়াকে তাই ইতিবাচক মনোভাবেই দেখছেন মুশফিক। কাল জাতীয় দলের অনুশীলন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে অনেক কথাই বলেছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক। সেসব কথাবার্তা তুলে ধরা হল-
নতুন মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়াকে কীভাবে দেখছেন…
বোর্ডকে ধন্যবাদ যে আমার প্রতি আস্থা রেখেছে। আমার আগের মেয়াদে যে ক’টা সিরিজে ছিল, তাতে যেভাবে কমিটেড ছিলাম সেভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতেও একইভাবে করার চেষ্টা করব।
চ্যালেঞ্জটা আরও বাড়ল তাহলে…
শুধু তো একটা সিরিজ, খুব বেশি যে চ্যালেঞ্জিং তা মনে হয় না। চেষ্টা করব যেভাবে ধারাবাহিক টিম পারফরম্যান্স হচ্ছিল, তা ধরে রাখতে। জিম্বাবুয়েতে আমরা যেভাবে চেয়েছি রেজাল্ট সেভাবে হয়নি। এখন খেলোয়াড়রা অনেক কষ্ট করছে গত এক মাস ধরে। আশা করছি তারা ওভাবেই উদ্দীপ্ত। যেহেতু এটা আমাদের হোম সিরিজ আর হোমে গত এক বছর আমরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছি তাই প্রত্যাশা আছে। সবাই অনেক পরিপক্ব এবং কঠিন পরিশ্রম করছে। আশা করি ভালো কিছু হবে।
দায়িত্বটাকে একটা সিরিজের জন্যই দেখছেন না অনেক বড় পরিসরে দেখছেন…
বড় পরিসরে তো বোর্ডই ভাবছে না। অতএব আমি ভাবি আর না ভাবি তেমন কিছু যায় আসে না। এ পাঁচ মাস বলতে আর একটা সিরিজই আছে। অধিনায়ক হিসেবে এবং ব্যক্তিগতভাবেও আমি চেষ্টা করব আমার শতভাগ দিতে। পুরো দল যেন শতভাগ কমিটেড থাকে এবং তারা যেন সেটা দেয়।
আগেরবার হোয়াইটওয়াশ করা এবার নিউজিল্যান্ডকে কীভাবে দেখছেন…
খুব যে ভালো নেই তা নয়। তারা ইংল্যান্ডে গিয়ে কিন্তু ওদের হারিয়েছে। সেদিক থেকে আমার মনে হয় নিউজিল্যান্ড দল অনেকটা প্রায় আমাদের মতো উত্থান-পতনে থাকে। একই সঙ্গে তারা ভয়ঙ্কর একটি দল। শেষবার যখন তারা এসেছিল আমরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছিলাম। এজন্য ওরা হেরেছিল। এবারও ভালো ক্রিকেট খেলার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের অনেক কঠিন পরিশ্রম করতে হবে। প্রত্যাশা তো অবশ্যই থাকবে, একই সঙ্গে ওদের হারাতে খুব ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে।
কোচের মেয়াদ বাড়ছে ২০১৫ সাল পর্যন্ত, ক্যাপ্টেন্সির দায়িত্বটা লম্বা মেয়াদে হলে ভালো হতো না…
আমার মনে হয় বিশ্বে একমাত্র আমাদের এখানেই যেখানে অধিনায়ককে সিরিজ বাই সিরিজ করা হয়। আপনি যদি নিজেই না জানেন কয়টা সিরিজ আপনি করবেন বা কয়টা সিরিজে আপনার দায়িত্ব থাকবে, তাহলে লক্ষ্য ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন কীভাবে? সেদিক থেকে বলব এটা খুবই চ্যালেঞ্জিং যে, সিরিজ বাই সিরিজ ক্যাপ্টেন্সি করা। এটা শুধু আমার জন্য নয়, পরবর্তী সময়ে যারা আসবে তাদের জন্যও অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে। আর কোচের মেয়াদ ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আমি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি। এটা বড় একটা অর্জন। তিনি এখন অনেক চিন্তা আর লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করতে পারবেন। যে-ই থাকুক অধিনায়ক, আশা করব তাকে যেন দীর্ঘপরিসরে করা হয়। সে যেন একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করতে পারে।
হঠাত্ করেই জিম্বাবুয়েতে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। জাতীয় দলের অধিনায়কের এতটা আবেগতাড়িত সিদ্ধান্ত কি ঠিক…
আমরা কিন্তু পুরো জাতি আবেগপ্রবণ। আর আবেগ দিয়েই কিন্তু আমরা সব কিছু অর্জন করতে পারি। একইভাবে কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালো না। সেটা আমিও করেছিলাম। যেটা ভুল ছিল এবং সেটা আমি পরে বুঝতে পেরেছিলাম। ভবিষ্যতে শুধু আমি নই, সবাই শিখবে আবেগ থাকা ভালো কিন্তু সেটা যেন অতিরিক্ত না হয়।
দলবদলের তারিখ মিলল। গ্রেডিং, রোটেশনের ব্যাপার থাকছে, সেটা নিয়ে কী ভাবছেন…
আমরা অনেক কথাই বলেছিলাম, কিন্তু বোর্ড এবার আমাদের নিশ্চিত করেছে এটা শুধু এ বছরের জন্যই হবে। এ বছর অনেক কিছু সমস্যা আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। আমরা খেলোয়াড়রা যারা আছি তারা এ বছরের জন্য এটা মেনে নিয়েছি। আমরা চাই অন্তত খেলাটা যেন হয়। সব খেলোয়াড় যাতে খেলে। পরবর্তী বছর থেকে আগে যেভাবে হয়েছে যেন সেভাবে হয়।
Discussion about this post