তাহিতির জালে স্পেনের ১০ গোল
তাহিতি নামটা শুনেই চমকে গিয়েছিলেন অনেকে! কেউ আবার সংশোধন করে বলেছিলেন-এটা তাহিতি নয়, হাইতি হবে হয়তো। কনফেডারেশন কাপ খেলতে এসেই নিজেদের অস্তিত্বটা ভালো করে জানান দিয়ে গেল দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর ভেসে থাকা ছোট্ট সেই দ্বীপ দেশ। পেলিনেশিয়া অঞ্চলের প্রতিনিধি হয়ে খেলতে এসেছে আন্তঃমহাদেশীয় চ্যাম্পিয়নদের এ টুর্নামেন্টে।
সেই লড়াইয়ে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ১-৬ গোলে হেরেছিল তাহিতি। আর পরশু তাদের জালে ১০ গোল দিল স্পেন। হ্যাটট্রিক পেলেন ফার্নান্দো তোরেস ও ডেভিড ভিয়া। এভাবে গোলবন্যায় যে তারা ভেসে যাবে সেটা ছিল অনুমেয়। স্পেন যেখানে র্যাঙ্কিংয়ে নাম্বার ওয়ান, সেখানে তাদের অবস্থান ১৩৮! সেই সুযোগটাই নিল স্প্যানিশরা। গ্রুপ বি’র এ লড়াইয়ে তারা পেল নিজেদের ফুটবল ইতিহাসের তৃতীয় বড় জয়।
রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে অবশ্য তাহিতি বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে মোটামুটি ভালোই খেলেছে। বল দখলের লড়াইয়ে স্পেনকে ৬৭ শতাংশে আটকে রাখে তারা। এটা যেন তাদের বড় জয়!
এবারই প্রথমবারের মতো কোনো ইউরোপীয় দলের বিপক্ষে খেলতে নামল তারা। এ কারণেই কি না কে জানে মারাকানার ৭২ হাজার দর্শকের সমর্থন থাকল তাদের সঙ্গে। ওশেনিয়া চ্যাম্পিয়নদের প্রতিটি পাস, প্রতিটি ট্যাকলকে স্বাগত জানিয়েছে দর্শকরা। সবচেয়ে বেশি অভিবাদন পেয়েছেন তাহিতির ২০ বছর বয়সী গোলরক্ষক মিকায়েল রোচে। দ্বিতীয়ার্ধে নিশ্চিত দুটো গোল হজম করা থেকে দলকে বাঁচিয়েছেন তিনি। যদিও ততক্ষণে তার দল ৭ গোলে পিছিয়ে।
ম্যাচের ৫ মিনিটে গোল উত্সবের সূচনা করেন তোরেস। এরপর ডেভিড সিলভা, ফের তোরেস ও ফের সিলভা গোল করলে বিরতির সময় স্কোর লাইন দাঁড়ায় ৪-০। ৪৯ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলের দেখা পাওয়া ভিয়া হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন ৬৪ মিনিটে। অবশ্য তার ৭ মিনিট আগেই হ্যাটট্রিক করে ফেলেন আরেক স্ট্রাইকার তোরেস। যদিও এরপরই পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। তবে ঠিকই ম্যাচে নিজের চার নম্বর গোলটি আদায় করে নিয়েছেন তোরেস। সেটা ৭৮ মিনিটে। ম্যাচে ডেভিড সিলভা দুটি ও হুয়ান মাতা করেন একটি গোল।
এমন জয়ের পরও ম্যাচ শেষে তাহিতিবন্দনা শোনা গেল ফার্নান্দো তোরেসের মুখে। ম্যাচসেরা ফুটবলারটি বলছিলেন, ‘দেখুন তাহিতি অন্য সব দলের সামনে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তারা ভালো খেলার চেষ্টা করেছে। যদিও খেলার ফলই প্রমাণ করছে দুই দলের মধ্যে ব্যবধান কতটা বিশাল। তবে সেটা কোনো ব্যাপার নয়। ওরা ভালো একটা উদাহরণ তৈরি করেছে কীভাবে ফুটবল খেলতে হয়। ব্যাপারটা সত্যিই অসাধারণ।’
তোরেসের সঙ্গে গলা মেলালেন স্প্যানিশ কোচ ভিসেন্তে দেল বস্কে। বললেন, ‘ওদের খেলা খুবই পরিচ্ছন্ন। প্রত্যেকবার বল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওরা আমাদের আক্রমণ করার চেষ্টা করেছে। আমি ওদের ভালো খেলার প্রচেষ্টা দেখে রীতিমতো মুগ্ধ।’
Discussion about this post