ম্যাচের দ্বিতীয়দিনের মাঝপথেই শিরোপা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ঢাকা বিভাগের। অপেক্ষা ছিল শেষ ম্যাচে তারা জিততে পারবে কিনা?
সেটাও পারল তারা। এবং বেশ দাপটের সঙ্গেই। মঙ্গলবার ৫ উইকেটে খুলনাকে হারাল ঢাকা বিভাগ। সাত ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৩৩ পয়েন্ট নিয়ে ওয়ালটন ১৫তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের চ্যাম্পিয়ন হল ঢাকা বিভাগ। ছয় মৌসুমের পর এবার জাতীয় ক্রিকেট লিগের ট্রফি জিতল ঢাকা বিভাগ।
কক্সবাজারে শেষদিন ম্যাচ জিততে ঢাকার প্রয়োজন ছিল মাত্র ১২৮ রান। জয়ের জন্য ২৩৩ রানের টার্গেট নিয়ে খেলতে নামা ঢাকা তৃতীয়দিন শেষে ১ উইকেটে ৯৬ রান তুলে ম্যাচ জয়ের পথেই ছিল। কাল সেই পথটা পেরিয়ে এল তারা বেশ সহজভাবেই। যদিও শেষদিন তারা আরও ৪ উইকেট হারায়। কিন্তু কোন সময়েই এই ম্যাচে ঢাকার জয় ছাড়া অন্য কোন চিন্তা কারো মাথায় ছিল। শেষ ইনিংসে ওপেনার রনি তালুকদার দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯০ রান করেন।
খুলনা-ঢাকা বিভাগ
খুলনা ১ম ইনিংস : ২৪৩/১০। এবং ২য় ইনিংস : ২৩২/১০ (এনামুল ১১৯, ইমরুল ৩৮, নাজিমউদ্দিন ৩১, জিয়া ১৬; অপু ৩/৬৩, শুভাগত ৩/৫৯, তৈয়েবুর ৩/৪০)।
ঢাকা বিভাগ ১ম ইনিংস : ২৫২/১০। এবং ২য় ইনিংস : ২২৪/৫ (রনি ৯০, তৈয়েবুর ৩৯)। ফল: ঢাকা বিভাগ ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা: নুরুল হাসান।
রাজশাহী রার্নাসআপ
শেষ ম্যাচ ঠিকই জিতল রাজশাহী। কিন্তু বোনাস পয়েন্ট যোগ করে ঢাকা বিভাগ যে অনেক আগেই চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নিয়েছে! মঙ্গলবার ম্যাচের শেষদিন ম্যাচ জিততে রাজশাহীর প্রয়োজন ছিল ১৫২ রান। হাতে উইকেট বাকি ৪। দারুণ ব্যাটিং করে রাজশাহী শেষদিন আর কোন উইকেট না হারিয়ে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয়। পুরো টুর্নামেন্টে চমৎকার ব্যাটিং করা অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা শেষদিনেও ব্যাট হাতে দলের নায়ক। ১৬৫ বলে তার অপরাজিত ৮০ রানের ইনিংস রাজশাহীকে ম্যাচে জয় এনে দেয়। মিডলঅর্ডারে সাব্বির রহমানের ব্যাট থেকেও আসে অপরাজিত ৮৫ রানের ঝলমলো ইনিংস। প্রথম ইনিংসেও হাফসেঞ্চুরি হাাঁকিয়েছিলেন সাব্বির। সেই সুবাদে ম্যাচসেরার ট্রফি উঠল তার হাতেই।
৭ ম্যাচে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১১ পয়েন্ট নিয়ে রাজশাহীকে এবার জাতীয় ক্রিকেট লিগের রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ঠ থাকতে হচ্ছে।
ঢাকা মেট্রো-রাজশাহী বিভাগ
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস : ১২৬/১০। এবং ২য় ইনিংস : ৩৫২/১০ (সাদমান ৮৫, সৈকত ৯৫, আসিফ ৫৪, ইলিয়াস সানি ৫৫, তালহা ৩৬; তাইজুল ৫/৮৩, সানজামুল ২/৬৩)।
রাজশাহী বিভাগ ১ম ইনিংস : ২০৭/১০। এবং ২য় ইনিংস : ২৭৫/৬ (হাবিবুর ২৪, জুনায়েদ ২৮, ফরহাদ হোসেন ৮০*, সাব্বির ৮৫*, , ইলিয়াস সানি ২/৫৪)। ফল: রাজশাহী ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা: সাব্বির রহমান।
চট্টগ্রামও জিতল শেষ ম্যাচে
জিততে হলে চাই ৪৩৯ রান। সিলেট এতদুর যেতে পারেনি। গুটিয়ে যায় মাত্র ১৮০ রানে। ২৫৮ রানের বড় ব্যবধানে জিতে এবারের লিগ শেষ করল চট্টগ্রাম। লিগে এটি তাদের মাত্র দ্বিতীয় জয়। আর এই জয়ের সুবাদে আট দলের লিগে চট্টগ্রাম পেল ষষ্ঠ স্থান। ৭ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৬৪। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬৮ রানের বিশাল সেঞ্চুরি করে মমিনুল হক এই ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় হন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
সিলেট-চট্টগ্রাম বিভাগ
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস : ২১৩/১০। এবং ২য় ইনিংস : ৪১৫/৯ ডি. (নাজিমউদ্দিন ৬৮, ইরফান ২৪, মমিনুল ১৬৮, আবদুল্লাহ ৪২, ফয়সাল ২৮, জসিমউদ্দিন ২৮, সাইফুদ্দিন ২৫; সাদিকুর ৭/১০৫)।
সিলেট ১ম ইনিংস : ১৯০/১০। এবং ২য় ইনিংস : ১৮০/১০ (সায়েম ৩৯, এনামুল হক জুনিয়র ৪০, ইউনুস ৫/৪৭)। ফল: চট্টগ্রাম ২৫৮ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: মমিনুল হক।
ফতুল্লায় রংপুরের জয়
দুই ইনিংস মিলিয়েও রংপুরের এক ইনিংস পার করতে পারেনি বরিশাল। ২৫৪ রানে পিছিয়ে থেকে ইনিংস পরাজয় এড়াতে লড়তে নামা বরিশাল দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় ২২৯ রানে। রংপুর ইনিংস ও ২৫ রানে ম্যাচ জিতে। ইনজুরির কারণে বরিশালের শেষ ব্যাটসম্যান ফজলে রাব্বী ব্যাট করতে নামতে পারেননি। ম্যাচ বাঁচাতে হলে শেষদিনের পুরোটা সময় বরিশালকে ব্যাটিং করতে হত। কিন্তু অতদুর যেতে পারেনি তারা। শেষদিন একসেশনও টিকতে পারেনি বরিশাল। সকালে মাত্র ২৩.৫ ওভার খেলে অলআউট হয় তারা।
বরিশাল-রংপুর বিভাগ
বরিশাল ১ম ইনিংস : ২৮৯/১০। এবং ২য় ইনিংস : ২২৯/৯ (মইনুল ২১, শাহরিয়ার নাফীস ৩৬, সালমান ৪২, সোহাগ গাজী ৬১, শুভ ৩/৭৬)
রংপুর ১ম ইনিংস : ৫৪৩/৯ ডি. (তারিক ২৬, আশীষ ২২, মাহমুদুল ২১, নাসির ৩২, নাঈম ৬০, ধীমান ১৪৯, তানভির ১২১*, সোহরাওয়ার্দী শুভ ৬১, সাজেদুল ২৫; মনির ৫/১৫১, সোহাগ গাজী ২/১৮৭)। ফল: রংপুর ইনিংস ও ২৫ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: ধীমান ঘোষ।
ওয়ালটন ১৫তম জাতীয় লিগের চুড়ান্ত পয়েন্ট তালিকা
দল ম্যাচ জয় হার ড্র পয়েন্ট
ঢাকা বিভাগ ৭ ৫ ১ ১ ১৩৩
রাজশাহী বিভাগ ৭ ৪ ০ ৩ ১১১
রংপুর বিভাগ ৭ ৩ ১ ৩ ৯২
খুলনা বিভাগ ৭ ২ ১ ৪ ৮৪
সিলেট বিভাগ ৭ ২ ৪ ১ ৬৭
চট্টগ্রাম বিভাগ ৭ ২ ৩ ২ ৬৪
ঢাকা মেট্টো ৭ ১ ৪ ২ ৬০
বরিশাল বিভাগ ৭ ০ ৫ ২ ৩১
Discussion about this post