ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি তখন পুরোদুস্তর পরাজিত দলের সেনাপতি। শনিবার ফতুল্লায় আফগানিস্তানের কাছে হারের দুঃখটা ঠিক গিলতে পারছিলেন না মুশফিকুর রহীম। তবে কোন লুকোছাপা করলেন না। কঠিন কিছু কথা বললেন। তারই পুরোটা এখানে তুলে ধরা হল ক্রিকবিডি২৪ডটকমের পাঠকদের জন্য-
ম্যাচটা কোথায় হাতছাড়া হল?
গত এক মাসে আমরা ভালো খেলতে পারছি না। এ সময় আম্পায়ারদের অনেক সিদ্ধান্তও পক্ষে যাচ্ছে না। এখন দলে সাকিব-তামিম-রিয়াদ ভাইরা নেই। আমার উপর অনেক প্রত্যাশা ও দায়িত্ব ছিল। কিন্তু সেটাও পুরো হল না। আসলে ৩৭-৪০ ওভারের মধ্যে আমরা চার-চারটা উইকেট হারিয়েছি। ওখানেই ম্যাচটি হেরে গিয়েছি।
আফগানিস্তান এত রান করে ফেলল..
ওরা ২৫৪ করার পর একটু অখুশি ছিলাম। কারণ ওই দুটো ক্যাচ ধরতে পারলে ২৩০-এর মধ্যে রাখা যেত। তারপরও বলব, এই রান তাড়া করেও আমাদের জেতা উচিত ছিল। আমরাই পারিনি।
কিভাবে ব্যাখা করবেন এই হারকে?
এই হার অবশ্যই হতাশার। বিব্রতকরও। গত এক মাসে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারিনি। তারপরও বিশ্বাস ছিল, যত খারাপই খেলি না কেন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমরা জিতবই। দুঃখজনকভাবে সেটি হয়নি।
শ্রীলঙ্কার সিরিজে বলেছিলেন, এভাবে খেললে আফগানের বিপক্ষেও জিততে পারব না। টিম কি নিয়েছে ওই বার্তা?
সবাইকে এভাবে অনুপ্রাণিত করার পর কেউ না বুঝলে তাদের বদলি করতে হবে। কারণ এটি আমার বা অন্য কারো দল না, দেশের ব্যাপার। এখানে আমরা যারা পারছি না, তাদের বদলে অন্যদের সুযোগ দেওয়ার সময় এসে গেছে। আফগানিস্তানের কাছে হারের পর কিংবা আফগানের কাছে হারার পর কিংবা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওভাবে হারের পর যদি কারো খারাপ না লাগে, তাহলে তার ক্রিকেট খেলাই উচিত না। তবে আমাদের অনেকের খেলা দেখে মনে হচ্ছে, আমরা ব্যাপারটা সেভাবে ফিল করতে পারছি না। এখন ম্যানেজম্যান্ট আছে, নির্বাচকরা আছেন। তারাই বিকল্পের চিন্তাভাবনা হয়তো করবেন
ক্যারিয়ারে এই হারটাই সবচেয়ে বেশি ব্রিবতকর?
আমার মনে পড়ে না। এটিই সবচেয়ে বড়, খুবই লজ্জাজনক হার। সত্যি বলতে, পুরো ম্যাচে আমার এক সেকেন্ডের জন্য মনে হয়নি, ম্যাচটি হারতে পারি। মনে হচ্ছিল, আমরা যতোই খারাপ খেলি, কেউ না কেউ ঠিকই দাঁড়িয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত যা বোঝা গেল, আমরা যথেষ্ট ভালো নই।
টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপেও তো আফগানিস্তানই প্রথম প্রতিপক্ষ
সেটি ভিন্ন ফরম্যাট। ওরা টি-টুয়েন্টিতে আরো ভালো। এর আগে ত্রিনিদাদে একটি ম্যাচ খেলেছিলাম, সেখানে ওরা জিতেছিল। তবে এবার বিশ্বাকাপে ওদের বিপক্ষে জিতে আমসাদের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতেই হবে।
এশিয়া কাপের দুটো ম্যাচ তো এখনো বাকি
বাইরের কথা বলে লাভ নেই। মাঠের পারছি না বলে অনেক কথা হচ্ছে। তবে আরো দুটি ম্যাচ আছে। আমরা যতোই ভেঙে পড়ি কিংবা আত্মবিশ্বাস কম থাকুক- যে কোটি দর্শক আমাদের সমর্থন দেয়, তাদের জন্য আমাদের ভালো খেলতে হবে।
ফিল্ডিংয়ে বাজে দিন আসার ব্যাখ্যা কি?
জানলে এক ম্যাচের পর ঠিক করে ফেলতাম। উত্তরই পাচ্ছি না। ধারাবাহিকভাবে এত খারাপ হয়নি। এই প্রশ্নের উত্তর আমাকে বারবার দিতে হচ্ছে। খেলোয়াড়রা যদি না বোঝে, তাহলে খুব কঠিন। ১১ জনকে তো আর তুলে খাওয়াতে পারবেন না। এই পর্যায়ে এসে সবাই নিজে দায়িত্ব না নিলে খুব কঠিন।
Discussion about this post