বিসিবি
গঠন : ১৯৭২
প্রধান কার্যালয় : ঢাকা
দ্বিতীয় স্বাধীনতা যেন! ’৭১-এর স্বাধীনতা দেখেনি বর্তমান যুব সমাজ। তবে তার স্বাদ যেন পেয়েছিল ১৯৯৭-এ আইসিসি ট্রফি জয়ের পর। দেশব্যাপি আনন্দ মিছিল,রংয়ে মাখামাখি,মিষ্টিমুখ-কি হয়নি? সেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে বাংলাদেশী অনেক ক্রিকেটারও ভুলে গিয়েছিলেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ট্রফিটা দেশে আনা হয়েছিল কিনা? কেউ বলেছেন অবশ্যই আনা হয়েছিল কেউবা স্মরণই করতে পারেননি!
ব্যাপারটা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি হয়েছিল আসলে শিরোপা জয়ের ১৫ বছর পূর্তিতে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অফিস বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম থেকে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে স্থানান্তরিত হওয়ার সময় সেটা হারিয়ে গেছে বলেই রিপোর্ট আসে মিডিয়ায়। বিব্রত বিসিবি পরে জানায় ট্রফিটা বাংলাদেশকে দেয়নি আইসিসি। কিছুদিন আগে অবশ্য সেটা ঘটা করেই বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বিসিবিকে।
’৯৭ আইসিসি ট্রফিটাই আসলে বদলে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের গতিপথ। সেই ট্রফি জিতে বিশ্বকাপে না গেলে তিন বছরের মাথায় কখনই টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া হতো না বাংলাদেশের। মাঠের সাফল্যের পাশাপাশি এতে অবদান আছে মাঠের বাইরের কূটনীতিও। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের গুরুত্বটা বেড়েছে এজন্যই। সে সময়ের বোর্ড প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী তখনকার আইসিসি প্রধান জগমোহন ডালমিয়াকে কাজে লাগিয়ে আদায় করে নিয়েছিলেন টেস্ট স্ট্যাটাস। এতে অবদান ছিল ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম নকআউট বিশ্বকাপেরও। স্বাগতিক হয়েও সেই টুর্নামেন্টে ছিল না বাংলাদেশ তবে বোর্ডের দক্ষতায় সফলভাবেই শেষ হয় আসরটা। দর্শক উš§াদনায় আইসিসির কাছে বার্তা পৌঁছে এখানে খেলাটা ছড়িয়ে দিতে পারলে ধরা যাবে বিশাল বাজার। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়াটা সহজ হয়ে যায় তাই।
অথচ ’৭১-এ স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডই গঠিত হয়েছিল ১৯৭২ সালে। শুরুতে এর নাম ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড। সেখান থেকে নাম বদলে ২০০৭ সালে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বা বিসিবি। এই আধুনিক যুগে এটুকু স্মার্টনেস দেখানোই যায়।
এ পর্যন্ত মোট ১৪জন প্রেসিডেন্ট পেয়েছে বিসিবি। ১৯৭২ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন প্রফেসর মোহাম্মদ ইউসুফ আলী। চার বছর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এরপর একে একে দায়িত্ব পালন করেন এস এস হুদা,কমোডর মুজিবুর রহমান,কে জেড ইসলাম,ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ,কাজী বাহাউদ্দিন মাহমুদ,লে.ক. (অব.) মুস্তাফিজুর রহমান ,সাবের হোসেন চৌধুরী,এম আকমল হোসেন,আলী আসগার লবি,এম আবদুল আজিজ,লে.জে.(অব.) সিনা ইবনে জামালী ,আ.হ.ম মোস্তফা কামাল ও নাজমুল হাসান । ২০০১ সালে সবচেয়ে কম তিন মাস দায়িত্বে ছিলেন এম আকমল হোসেন।
টেস্ট কিংবা ওয়ানডে স্ট্যাটাস না পেয়েও ১৯৮৩ সালে গঠিত এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ পাওয়াটাও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাফল্য। সেই এসিসির সভাপতি এখন বিসিবির সাবেক প্রেসিডেন্ট আ হ ম মোস্তফা কামাল। তিনি আইসিসিরও সহ-সভাপতি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে হবেন সভাপতিও। এতেও যথেষ্ট কূটনৈতিক দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বাংলাদেশ। কেননা ‘দূর্বল বিসিবি’র কেউ একজন আইসিসি প্রেসিডেন্টের পদে বসবেন,এটা প্রথমে মানতে আপত্তি ছিল অনেকের। তাই চিরকালীন রোটেশন প্রক্রিয়াটাও ফেলা হয়েছে বদলে!
আইসিসির সহ-সভাপতি হওয়ায় মোস্তফা কামাল আর বিসিবি প্রধান নন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ছেলে নাজমুল হক পাপন বসেছেন কামালের ছেড়ে দেয়া চেয়ারে। সেই চেয়ারে যে কাঁটাও আছে সেটা এতদিনে ভালোভাবেই বুঝেছেন নাজমুল। নইলে প্রায়ই কেন দিবেন ‘মুখোশ’ খুলে দেয়ার হুমকি।
একটা সময় কক্সবাজার ও সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামের ধীর গতির কাজের কারণে ২০১৪ টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশে হওয়া নিয়ে। সরকারকে চাপ দিয়ে ভেন্যু দুটোতে কাজের গতি আনায় বিশ্বকাপ নিশ্চিত করার জন্যও ধন্যবাদ পাওনা নাজমুলের। নইলে জগমোহন ডালমিয়া কিন্তু বলেই বসেছিলেন,বাংলাদেশ ব্যর্থ হলে বিশ্বকাপ আয়োজনে রাজি ভারত?
গঠনের পর থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নিয়ন্ত্রন ছিল সরকারের হাতে। যে সরকার ক্ষমতায় প্রেসিডেন্ট পদে তাদেরই লোক।
বিসিবির সভাপতিরা
সভাপতি হতে থেকে
প্রফেসর মোহাম্মদ ইউসুফ আলী ১৯৭২ ১৪-০৮-৭৬
এস এস হুদা ১৪-০৮-৭৬ ২৮-০৯-৮১
কমোডর মুজিবুর রহমান ২৮-০৯-৮১ ৩০-০১-৮৩
কে জেড ইসলাম ৩০-০১-৮৩ ১৮-০২-৮৭
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ১৮-০২-৮৭ ২৭-১২-৯০
কাজী বাহাউদ্দিন মাহমুদ ২৭-১২-৯০ ০১-০৯-৯১
লে.ক. (অব.) মুস্তাফিজুর রহমান ০১-০৯-৯১ ০৪-০৭-৯৬
সাবের হোসেন চৌধুরী ০৪-০৭-৯৬ ১৯-০৮-২০০১
এম আকমল হোসেন ১৯-০৮-২০০১ ২৬-১১-২০০১
আলী আসগার লবি ২৬-১১-২০০১ ১৪-১১-২০০৬
এম আবদুল আজিজ ১৪-১১-২০০৬ ২৯-০৭-২০০৭
লে.জে.(অব.) সিনা ইবনে জামালী ২৯-০৭-২০০৭ ২৩-০৯-২০০৯
আ.হ.ম মোস্তফা কামাল ২৩-০৯-২০০৯ ১৭-১০-২০১২
নাজমুল হাসান ১৭-১০-২০১২ –
Discussion about this post