আফগানিস্তানের বিপক্ষে হতাশাজনক হোয়াইটওয়াশের রেশ কাটতে না কাটতেই আবার মাঠে নামছে বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ শনিবার শুরু হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। ম্যাচ শুরু দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে।
আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নবম, বাংলাদেশ দশম। ক্রিকেটীয় মানে বা আন্তর্জাতিক কৌতূহলে হয়তো সিরিজটি তেমন উত্তাপ ছড়াবে না, তবে বাংলাদেশের জন্য এটি অনেক বড় এক মানসিক পরীক্ষার নাম। আফগানিস্তানের কাছে প্রথমবার হোয়াইটওয়াশড হওয়া, টানা চার ওয়ানডে সিরিজে হার, আর আট সিরিজে মাত্র একটি জয়-সব মিলিয়ে ওয়ানডে সংস্করণে একসময় গর্বের জায়গা এখন পরিণত হয়েছে গ্লানিতে।
তবে বাংলাদেশ কোচ ফিল সিমন্স আশাবাদী। তার ভাষায়, ‘এটা কোনো সংস্করণ খেলতে ভুলে যাওয়ার বিষয় নয়, এটা কেবল একটি বাজে সিরিজ ছিল। বিশেষ করে মিডল ওভারে জুটি গড়তে ব্যর্থ হয়েছি আমরা।’ একইসঙ্গে তিনি জানালেন, অতীত ভুলে সামনের ম্যাচগুলোয় ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে দল।
ব্যাটিং ব্যর্থতা পুষিয়ে নিতে দলে আনা হয়েছে নতুন মুখ মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে নিউ জিল্যান্ড ‘এ’-র বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে নজর কেড়েছেন এই কিপার-ব্যাটার। তার অভিষেকের সম্ভাবনা বেশ জোরালো। ওপেনিং ও তিন নম্বরেও রয়েছে অনিশ্চয়তা। তানজিদ হাসান ও সাইফ হাসানের ধারাবাহিকতার অভাব, শান্তর ফর্মহীনতা এবং নাঈম শেখের ফের বাদ পড়া—সব মিলিয়ে টপ অর্ডারেই দেখা যাচ্ছে বড় দুশ্চিন্তা। এমন বাস্তবতায় আবারও ফিরেছেন সৌম্য সরকার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজও খুব সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। গত বিশ্বকাপে বাছাই পর্বই পেরোতে পারেনি তারা। এবারও সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার নিশ্চয়তা নেই। কোচ ড্যারেন স্যামি তাই সরাসরি বলেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০২৭ বিশ্বকাপে জায়গা পেতে এই পয়েন্টগুলো আমাদের দরকার।’ বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে সিরিজ জয় থেকে আত্মবিশ্বাস পেলেও, ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে হারানো কঠিন বলেও স্বীকার করেছেন তিনি।
উইকেট নিয়েও শুরু হয়েছে আলোচনা। মিরপুরের কালো রঙা মন্থর উইকেট দেখে অবাক স্যামি। তবে বিসিবির মাঠকর্মীরা জানাচ্ছেন, উইকেট ভালো আচরণ করবে। যদিও বাংলাদেশ কোচ সিমন্সের মতে, উইকেট স্পিনারদের সহায়তা করতে পারে।
এই সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতলেও র্যাঙ্কিংয়ে খুব বড় পরিবর্তন আসবে না। তবে টানা ব্যর্থতায় আত্মবিশ্বাস হারানো দলটির জন্য এই সিরিজ হতে পারে ঘুরে দাঁড়ানোর মঞ্চ। দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড়, বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার শঙ্কা, ফর্মহীন সিনিয়র ও অপ্রতিষ্ঠিত তরুণদের মাঝে বাংলাদেশের ওয়ানডে দল এখন এক সন্ধিক্ষণে।
Discussion about this post