শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির দেখা হল। ড্র হল চট্রগ্রাম টেস্ট। জিততে হলে রেকর্ড গড়তে হবে বাংলাদেশকে। লক্ষ্য ৪৬৭ রান। এ অবস্থায় শনিবার শেষদিনে বাড়তি ঝুঁকির কথা না ভেবে ড্রয়ের কথা চিন্তা করেই লড়েছে বাংলাদেশ। আর সেই লক্ষ্যে সফল মুশফিকের দল। এরইমধ্যে মমিনুল হক তুলে নিয়েছেন শতরান।
সকালে সবকিছু ঠিকঠাক মতোই এগোচ্ছিল। তাড়াহুড়ো নয়, দেখে শুনে ব্যাটিং। অবশ্য লাঞ্চ বিরতির কিছুক্ষণ আগে এলোমেলো হয়ে যায় হিসেব! দেখেশুনে খেলতে থাকা দুই ওপেনার যখন স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন তখনই ছন্দপতন। দলের তখন ৭১ রান। ১০২ বলে ৩১ রান করে ফিরে গেলেন তামিম ইকবাল। এরপর দলের ৮১ রানে সাজঘরের পথ ধরলেন অন্য ওপেনার শামসুর রহমান শুভ। তিনি করেন ৯৮ বলে ৪৫।
তবে সেই ধাক্কা সামলে উঠে দল ঠিক পথেই এগিয়ে গেছে।
শনিবার পঞ্চম দিনে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে যখন ৩ উইকেট হারিয়ে ২৭১, তখনই দুই অধিনায়ক ড্র মেনে নেন। এর অর্থ ১-০’তে সিরিজ জিতল লঙ্কানরা। ঢাকায় তারা ইনিংস ও ২৪৮ রানে জিতেছিল।
তখন মমিনুল অপরাজিত ছিলেন ঠিক ১০০ রানে। অন্য প্রান্তে সাকিব আল হাসানের রান ছিল ৪৩।
তার আগে কুমার সাঙ্গাকারা আরো একবার মুগ্ধ করলেন তার দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংয়ে। প্রথম ইনিংসে ট্রিপল সেঞ্চুরির পর এবার তুলেন নিলেন আরেকটি শতক। সঙ্গে দীনেশ চান্দিমালের সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ৩০৫ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা।
গ্রাহাম গুচের পর দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে একই টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি করলেন সাঙ্গাকারা। ১৯৯০ সালে লর্ডস টেস্টে ভারতের বিপক্ষে ৩৩৩ ও ১২৩ রান করেন ইংল্যান্ডের সাবেক ওই ক্রিকেটার।
সাঙ্গাকারার এটি ৩৫তম শতরান। চান্দিমাল পেলেন তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি।
এর আগে ৮ উইকেটে ৪০৯ রান নিয়ে শুক্রবার খেলা শুরু করে ৪২৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
১ম ইনিংসে অলআউট হয়ে শ্রীলঙ্কা তুলে ৫৮৭ রান। ১৪৮ রানে ৫ উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। এ নিয়ে ১১ বার ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন তিনি।
৩১৯ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন কুমার সাঙ্গাকারা। তাকে ফেরান নাসির হোসেন। এটিই তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রানের টেস্ট ইনিংস। ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কলম্বো টেস্টে তিনি খেলেন ২৮৭ রানের এক দারুণ ইনিংস। এবার পেয়ে গেলেন ট্রিপল সেঞ্চুরি!
আগের দিনই ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান লারাকে ছুঁয়েছিলেন তিনি। তুলে নিয়েছিলেন ৩৪তম টেস্ট সেঞ্চুরি। এবার ডাবল সেঞ্চুরিতেও লারাকে স্পর্শ করলেন সাঙ্গাকারা। দু’জনেইর ডাবলসেঞ্চুরি ৯টি। সর্বোচ্চ ১২টি নিয়ে শীর্ষে অজি কিংবদন্তি স্যার ডন ব্র্যাডম্যান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা: ১ম ইনিংসে ৫৮৭/১০ (সাঙ্গাকারা ৩১৯*, জয়াবর্ধনে ৭২, মেন্ডিস ৪৭; সাকিব ৫/১৪৮, নাসির ২/১৬) ও ২য় ইনিংসে ৩০৫/৪ ডিক্লে. (সাঙ্গাকারা ১০৫, চান্দিমাল ১০০*; মাহমুদুল্লাহ ২/৪৬, সাকিব ১/৮০)
বাংলাদেশ: ১ম ইনিংসে ৪২৬/১০ (শামসুর ১০৬, ইমরুল ১১৫, সাকিব ৫০, নাসির ৪২, মাহমুদুল্লাহ ৩০; মেন্ডিস ৬/৯৯) ও ২য় ইনিংসে ২৭১/৩ (তামিম ৩১, শামসুর ৪৫, ইমরুল ২৫, মুমিনুল ১০০*, সাকিব ৪৩*; পেরেরা ২/৫৫)
ফল: টেস্ট ড্র
সিরিজ: ২ টেস্টের সিরিজে শ্রীলঙ্কা ১-০’তে জয়ী
ম্যাচ ও সিরিজসেরা: কুমার সাঙ্গাকারা
Discussion about this post