দুবাইয়ের মাঠে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লিটন দাস। আজ উইকেট দেখে মনে হয়েছিল, এখানে রান চেজ করা সুবিধাজনক হবে। শুরুটাও হয়েছিল বাংলাদেশের পরিকল্পনামাফিক, যদিও লঙ্কান দুই ওপেনার নিসাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস বেশ ভালোভাবেই ইনিংস শুরু করেন। প্রথম ৫ ওভারে স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ৪৪ রান। মাঠে তখনো কোনো অশনি সংকেত ছিল না।
কিন্তু ইনিংসের গতি হঠাৎই থমকে যায়। উইকেট হারাতে শুরু করে শ্রীলঙ্কা, আর বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আনে। শেখ মেহেদী হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমানের বল যেন আচমকাই লঙ্কান ব্যাটারদের চিন্তায় ফেলে দেয়। পরপর কয়েকটি উইকেট পড়ে গেলে ইনিংসের মাঝপথে চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
তবে সেই চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করেন দাসুন শানাকা। ধীরে ধীরে গিয়ার বদলে আগ্রাসী হয়ে ওঠেন তিনি। তাঁর ব্যাটে যেন লেগেছিল আগুন। শেষ ৫ ওভারে শ্রীলঙ্কা যে ৫৩ রান তোলে, তার বড় অংশই আসে শানাকার ব্যাট থেকে। ছয়টি ছক্কা আর তিনটি চারে সাজানো ইনিংসে তিনি অপরাজিত থাকেন ৩৭ বলে ৬৪ রানে। ইনিংসের শেষ বলেও তাসকিন আহমেদকে ছক্কা মেরে ১৬৮ রানে পৌঁছে দেন দলকে।
বাংলাদেশের ফিল্ডিংয়ে ছিল বেশ কিছু ভুল। সহজ ক্যাচ ফেলা, রান আটকাতে গড়িমসি! এসব মিলিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বারবার হাতছাড়া হয়েছে। মুস্তাফিজুর রহমান অবশ্য নিজের কাজ ঠিকঠাকই করেছেন-৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়ে ৩টি উইকেট শিকার করেছেন। মেহেদী হাসানও পেয়েছেন দুই উইকেট।
তবে শরিফুল ইসলামের বাজে বোলিং চোখে লেগেছে সবচেয়ে বেশি। ৪ ওভারে ৪৯ রান দিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ফিরিয়ে দিয়েছে ম্যাচে। ব্যাটারদের দারুণ শুরুর পর যদি মাঝের সময়টায় নিয়ন্ত্রণ রাখা যেত, হয়তো ছবিটা ভিন্ন হতে পারত।
সবকিছুর মাঝেও বাংলাদেশ শিবিরে আসে একটি বড় প্রাপ্তি—টি–টোয়েন্টি ইতিহাসে দেশের সেরা বোলারদের তালিকায় এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছেন মুস্তাফিজুর রহমান।
ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার উইকেটটি শিকার করেই মুস্তাফিজ ছুঁয়ে ফেলেন সাকিব আল হাসানকে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট (১৪৯টি)। এই অর্জন স্রেফ সংখ্যার খাতিরে নয়, এটি এক দীর্ঘ পথচলার নিখুঁত প্রতিচ্ছবি। সাকিবের পাশে এখন ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজ, যিনি এই সংস্করণে দেশের বোলিং আক্রমণের অন্যতম নির্ভরতার নাম।
Discussion about this post