বাংলাদেশ ক্রিকেটের একসময়ের ‘ওয়ান্ডার বয়’ মোহাম্মদ আশরাফুল এবার পরিচিত হলেন ভিন্ন ভূমিকায়-নিজের জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন শৈশবের নায়ককে। ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার নতুন অ্যাডহক কমিটিতে আর নেই তার নাম। এনএসসি তার পরিবর্তে যুক্ত করেছে সাবেক টেস্ট অধিনায়ক ও বর্তমান বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে। তবে এ নিয়ে কোনো হতাশা নয়, বরং আনন্দই প্রকাশ করেছেন আশরাফুল, ‘বুলবুল ভাইয়ের জন্য জায়গা ছাড়তে পারা আমার কাছে গর্বের।’
ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটিতে জুলাইয়ে ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। তবে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে সেই কমিটি নতুন করে অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। সর্বশেষ ঘোষিত তালিকায় আর নেই আশরাফুলের নাম। তার পরিবর্তে যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক ও বর্তমানে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে কেউ নিজের জায়গা হারালে হতাশা কাজ করে। কিন্তু আশরাফুলের কণ্ঠে শোনা গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন সুর। তিনি স্পষ্ট করলেন, এই পরিবর্তন তাকে একটুও খারাপ লাগায়নি। তিনি বলেন,‘এনএসসি থেকে জানানো হলো, বুলবুল ভাইকে আমার জায়গায় রাখা হবে। আমি শুনেই বলেছি, দেন। আমার একেবারেই কোনো আপত্তি নেই। উনি নির্বাচনে অংশ নেবেন-এটাই স্বাভাবিক।’
বুলবুলের প্রতি নিজের শ্রদ্ধা ও আবেগের কথাও লুকাননি আশরাফুল। স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, ‘৯৭-৯৮ সালে আমি যখন বল বয়, তখন থেকেই উনাদের দেখে বড় হয়েছি। আমার লেভেল থ্রি কোচিং সার্টিফিকেটও উনার মাধ্যমে হয়েছে। তাই আইডলের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে পারাটা আমার কাছে গর্বের।’
নতুন অ্যাডহক কমিটির এ পরিবর্তনের ফলে বিসিবি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আনুষ্ঠানিক সুযোগ তৈরি হলো আমিনুল ইসলাম বুলবুলের জন্য। ঢাকা বিভাগের পরিচালক হিসেবে তিনি ভোট দেওয়ার পাশাপাশি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
বিসিবি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আরেক সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আশরাফুল বিশ্বাস করেন, তামিম বোর্ডে এলে গেম ডেভেলপমেন্ট ও ক্রিকেট অপারেশন্সসহ নানা খাতে ইতিবাচক কাজ করার সুযোগ পাবেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কলিগ তামিমও নির্বাচনে আসছে। আশা করি বড় কোনো দায়িত্ব নিয়ে সে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করবে।’
এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে, ঢাকা বিভাগ থেকেই বিসিবি নির্বাচনে কাউন্সিলর হিসেবে আসতে পারেন বুলবুল। এর আগেও তিনি এনএসসির মনোনয়নে বিসিবির সভাপতি ও পরিচালক হয়েছিলেন। একইভাবে ফাহিমও ক্রীড়া পরিষদের সহযোগিতায় বোর্ড পরিচালনায় যুক্ত হয়েছেন। ফলে তাদের নতুন করে বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থায় অন্তর্ভুক্তি আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বড়সড় ইঙ্গিত দিচ্ছে।
১১ সদস্যের এই কমিটিতে বুলবুল ও ফাহিম ছাড়াও রয়েছেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালি সাব্বির, জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার রকিবুল হাসান, আম্পায়ার নিয়ামুর রশীদ, বিসিবির সাবেক পরিচালক খন্দকার জামিল উদ্দিন এবং ক্রীড়াপ্রেমী আনোয়ার হোসেন আরিফ। পাশাপাশি সদস্য হয়েছেন বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মাহফুজুর রহমান সিদ্দিকী, ছাত্র প্রতিনিধি সিফাত সাদিক খান ও ক্রীড়া সাংবাদিক রেদোয়ান সুলতান।
Discussion about this post