প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে গায়ানা ওয়ারিয়র্সের ঘরের মাঠে যে রকম উত্তেজনা জমেছিল শেষ দুই ওভারে, সেটি কল্পনাকেও হার মানায়। ২০ রানের সহজ সমীকরণে যখন ডেভিড ভিসা ও ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস ব্যাট করছিলেন, তখন গায়ানার ড্রেসিংরুমে হয়তো আগাম উদ্যাপনও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু খালেদ আহমেদের হাতে বল থাকা মানেই যে কোনো কিছু সম্ভব-আজকের ম্যাচই যেন তার সাক্ষ্য।
১৯তম ওভারের শুরুতে খানিকটা চাপে পড়ে যান খালেদ। প্রথম চার বলে খরচ করেন ১১ রান। কিন্তু পঞ্চম বলেই ম্যাচের মোড় ঘোরানো সেই মুহূর্ত-প্রিটোরিয়াসকে বোল্ড করে দেন। পরের বলেই শামার স্প্রিঙ্গার এলবিডব্লু, গায়ানার ইনিংসে হঠাৎ অন্ধকার। আর পরের ওভার, ২০তমটির প্রথম বলেই আজমতউল্লাহ ওমরজাই বোল্ড করে দেন সেট ব্যাটার ডেভিড ভিসাকে। মাত্র তিন বলেই শেষ তিন উইকেট হারিয়ে গায়ানা থেমে যায় ১৫৪ রানে, হার মানে ৮ রানে।
এর আগে রংপুর টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা বেশ সতর্কভাবে করে। ওপেনার সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার প্রথম উইকেটে গড়েন ৪৯ রানের জুটি। তবে টি-টোয়েন্টির গতি আনেন কাইল মায়ার্স। বাঁহাতি এই ক্যারিবিয়ান ৩১ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। তাঁকে সঙ্গ দেন ইফতিখার আহমেদ, যিনি ২১ বলে করেন ৩৪ রান। নুরুল হাসানও ১০ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলে শেষ দিকে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যান। ২০ ওভারে স্কোরবোর্ডে জমা হয় ১৬২।
১৬২ রানের লক্ষ্য খুব একটা বড় ছিল না। গায়ানা শুরুও করে দারুণভাবে। পাওয়ার প্লে শেষে ৪৯ রানে ১ উইকেট হারানো দলটি ১৪ ওভারে পৌঁছে যায় ১২৫ রানে। তখনো হাতে ৬ উইকেট, প্রয়োজন মাত্র ৩৮ রান। এমন সহজ সমীকরণে শিমরন হেটমায়ার ও শেরফানে রাদারফোর্ডের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটাররা ক্রিজে। কিন্তু রংপুরের তীক্ষ্ণ বোলিং পরিকল্পনা আর খালেদের ধারালো স্পেল সব হিসাব ওলটপালট করে দেয়।
খালেদ ফিরিয়ে দেন হেটমায়ার ও রাদারফোর্ড-দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি গায়ানা। শেষদিকে ভিসা কিছুটা চেষ্টা করলেও, টানা উইকেট পতনের ধাক্কা গায়ানার আশা শেষ করে দেয়। ম্যাচ শেষে ৪ ওভারে ৩৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে খালেদ আহমেদ স্বাভাবিকভাবেই হন ম্যাচসেরা।
এই জয় রংপুরের আত্মবিশ্বাসে নতুন রঙ যোগ করবে নিঃসন্দেহে। অন্যদিকে গায়ানার ড্রেসিংরুমে থাকবে হতাশা ও অনেক ‘যদি’ আর ‘কিন্তু’র গল্প।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রংপুর: ২০ ওভারে ১৬২/৫ (মায়ার্স ৪৪*, ইফতিখার ৩৪*; তাহির ২/২১, মোতি ২/৩২)
গায়ানা: ২০ ওভারে ১৫৪ (চার্লস ৪০, মঈন ২৭; খালেদ ৪/৩৬, ওমরজাই ২/১৩)
ফল: রংপুর ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: খালেদ আহমেদ
Discussion about this post