বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) একের পর এক চ্যালেঞ্জে মুখোমুখি হচ্ছে। মাঠে পারফরম্যান্সে ধস, প্রশাসনিক স্থবিরতা এবং এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস-টেলিভিশন সম্প্রচার স্বত্বে। টানা ব্যর্থতা ও অস্থির পরিবেশে আস্থা হারাচ্ছে সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানগুলো, মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে দেশের ক্রিকেট থেকে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে বর্তমানে সর্বোচ্চ আয়ের উৎস-টিভি স্বত্ব বিক্রির বাজারেও পড়েছে ধস। একাধিকবার শর্ত শিথিল, মূল্য হ্রাস, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পরও বিসিবি সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করতে পারছে না। এমনকি পাকিস্তানের বিপক্ষে আসন্ন তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের স্বত্ব বিক্রির চেষ্টাও এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ হয়নি।
সর্বশেষ ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে বিসিবি টিভি স্বত্ব বিক্রি করতে ব্যর্থ হয়। বাধ্য হয়ে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভিতে খেলা দেখানো হয়, যেখানে কোনও লাভ তো হয়নি-ই, উল্টো প্রোডাকশন খরচও বহন করতে হয়েছে বোর্ডকে।
পাকিস্তান সিরিজের স্বত্ব বিক্রির জন্য ৪ কোটি টাকার মূল্য নির্ধারণ করেও বিসিবি কোনো আগ্রহ পাচ্ছে না। যা ভাবিয়ে তুলেছে দেশের ক্রিকেট প্রশাসনকে।
২০২৫–২৭ সময়কালের হোম সিরিজের স্যাটেলাইট, ডিজিটাল ও ডিটিএইচ স্বত্ব বিক্রির লক্ষ্যে বিসিবি দরপত্র আহ্বান করেছিল গত ১২ জুন। ইংরেজি ও বাংলা জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, ১২ জুলাই ২০২৫ থেকে ১৫ জুন ২০২৭ পর্যন্ত সময়ের জন্য আগ্রহীদের প্রস্তাব দিতে হবে। কিন্তু ৮ জুলাই শেষ সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো দেশীয় প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দেয়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, বিসিবির দেওয়া ১০ লাখ মার্কিন ডলারের সিকিউরিটি ডিপোজিট অন্যতম বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে এই পরিমাণ অঙ্ক কোনো প্রতিষ্ঠান জমা দিতে আগ্রহী নয়। ব্যাংক গ্যারান্টি বা ট্রান্সফারের মাধ্যমে পরিশোধের বাধ্যবাধকতা আরও জটিলতা তৈরি করেছে।
পরবর্তীতে, বিসিবি দুই দফা-২৭ জুন ও ৪ জুলাই-শর্ত শিথিল করে নতুন প্রস্তাব আহ্বান করে এবং পাকিস্তান সিরিজের জন্য আলাদা দরপত্র চায়। তবুও কোনো প্রস্তাব জমা পড়েনি। তবে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে স্পন্সরশিপ স্বত্ব বিক্রি করে। কেএফসি হয়েছে পাকিস্তান–বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজের স্পন্সর। কিন্তু সেটি টিভি সম্প্রচারের রাজস্ব ঘাটতি পূরণে সামান্যই সান্ত্বনা।
Discussion about this post