বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) যেন এখন নেতৃত্বের সংকটে টালমাটাল। সভাপতি ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অনাস্থা জানিয়ে সরব হয়েছেন বোর্ডের আট পরিচালক। একপেশে সিদ্ধান্ত, স্বেচ্ছাচারিতা ও অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার অভিযোগ এনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চিঠি জমা দিয়েছেন তারা।
ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে এই চিঠিতে সই করেছেন-নাজমুল আবেদীন ফাহিম, ফাহিম সিনহা, সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী, ইফতেখার রহমান মিঠু, মাহবুব উল আলম, কাজী ইনাম আহমেদ, মনজুর আলম ও সালাউদ্দিন চৌধুরী। বোর্ড পরিচালকদের মধ্যে একমাত্র আকরাম খান এই অনাস্থা চিঠিতে স্বাক্ষর করেননি।
পরিচালকরা বলছেন, সভাপতি দায়িত্ব নেওয়ার পর পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও কার্যকরভাবে কমিটি পুনর্গঠন হয়নি। বরং একক ক্ষমতায়, পরিচালকদের মতামত ছাড়াই নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফারুক। জাতীয় দলের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের অপসারণকেও তারা দেখছেন গঠনতন্ত্রবহির্ভূত পদক্ষেপ হিসেবে। এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানাও হয়নি পরিচালকদের-জেনেছেন শুধু প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেখে।
চিঠিতে আরও অভিযোগ তোলা হয়েছে-দুর্নীতিগ্রস্ত ও অযোগ্য কর্মীদের পৃষ্ঠপোষকতা, প্রভাবশালী ও বিতর্কিত মহলকে সুবিধা প্রদান, দুর্নীতিপরায়ণ প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়ে স্বচ্ছতা নষ্ট করা এবং ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠদের প্রমোদ ভ্রমণে সঙ্গী করার মতো গুরুতর কার্যকলাপের।
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ, বিসিবির অভ্যন্তরীণ সংকটের ছায়া এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিরাপত্তা পর্যন্ত গিয়ে ঠেকতে পারে। কারণ, বোর্ড সভাপতিকে সরকারপ্রণোদিতভাবে সরানোর চেষ্টা হলে, তা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) চোখে পড়বে। অতীতে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট বোর্ডে সরকার হস্তক্ষেপের দায়ে যে নিষেধাজ্ঞা এসেছিল, বাংলাদেশ তেমন পরিস্থিতির ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও ধারণা বিশ্লেষকদের।
ফারুকের বিদায়ের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায়, তার সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে উঠে এসেছে আরেক সাবেক অধিনায়ক ও দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নাম। বর্তমানে আইসিসিতে এশিয়ার ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আমিনুলের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী মাসেই। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে স্বল্প মেয়াদে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।
Discussion about this post