প্রথম ম্যাচে একাদশে জায়গা হয়নি। বেঞ্চে বসে দলের হার দেখেছেন। কিন্তু এরপরই যেন পাল্টে যায় দৃশ্যপট। সুযোগ পেয়ে নিজেকে মেলে ধরেছেন দুর্দান্তভাবে—আর তাই এখন পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে বাংলাদেশের তরুণ লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন।
লাহোর কালান্দার্সের হয়ে টানা দুই ম্যাচে ৩টি করে উইকেট নিয়ে দলের জয়ে মুখ্য ভূমিকা রাখার পাশাপাশি রিশাদ এখন টুর্নামেন্টের যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে প্রশংসা পাচ্ছেন দলের অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি থেকে শুরু করে দলের মালিকপক্ষের কাছ থেকেও।
ম্যাচশেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে আফ্রিদি বলেন, ‘রিশাদ বাংলাদেশের হয়ে ভালো খেলে এসেছে, সে তাদের ভবিষ্যৎ তারকা। মাঝের ওভারগুলোয় সে দারুণ করছে। তাদের মিডল অর্ডারকে দাঁড়াতেই দেয়নি।’
আফ্রিদির এই মন্তব্য একেবারে খালি প্রশংসা নয়, তার ভিত্তিও আছে। করাচি কিংসের বিপক্ষে ম্যাচে ২০১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে করাচি যখন ৩ উইকেটে ৪৫ রান তুলে নিয়েছে, তখনই আক্রমণে আসেন রিশাদ।
প্রথম ওভারেই বাজিমাত—১ রান দিয়ে ২ উইকেট (শান মাসুদ ও ইরফান খান)। পরের ওভারে আব্বাস আফ্রিদিকেও ফেরান মাত্র ৩ রানে। রিশাদের প্রথম দুই ওভারে বোলিং ফিগার ছিল: ২-০-৪-৩; শেষ দুই ওভারে কিছুটা খরুচে হলেও (১১ ও ১২ রান), মোট বোলিং ফিগার: ৪-০-২৬-৩
ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার ব্যাটার স্যাম বিলিংস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘রিশাদের কথা বলতেই হয়। তরুণ একটা ছেলে যেভাবে বোলিং করল! এবারই প্রথম আমি তার বোলিং সরাসরি দেখছি। সে অবিশ্বাস্য, দুর্দান্ত।’
দলের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা সামিন রানা তো ম্যাচশেষে ড্রেসিংরুমে খুঁজতেই থাকেন, ‘আমার বাংলাদেশি ভাইটি কোথায়?’ রিশাদকে দেখে করতালির মাঝে চিৎকার করে বলেন, “রিশাদ!” এরপর ভাঙা বাংলায় বলেন, “রিশাদ, আমি তোমাকে ভালোবাসি।” এবং যোগ করেন, ‘তুমি এখন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। আমি নিশ্চিত, শেষেও তুমিই শীর্ষে থাকবে।’
রিশাদ তার আগের ম্যাচে কোয়েটা গ্লাডিয়েটর্সের বিপক্ষে ৩১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা পারফরম্যান্স করেন, লাহোর জেতে ৭৯ রানে। তখনও সামিন রানা বলেন, ‘রিশাদ, আমার মনে হয় তুমি গেম চেঞ্জার।’
Discussion about this post