বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুই স্তম্ভ-তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে শুরু করে জাতীয় দলে দীর্ঘ সময় একসঙ্গে খেলা এই দুই ক্রিকেটারের বন্ধুত্ব শুধু মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, ব্যক্তিগত জীবনেও ছিল অবিচ্ছেদ্য। কয়েক মাস আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন তামিম। এবার তারই পথ ধরে ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বললেন মুশফিক।
প্রিয় বন্ধুর অবসরে আবেগাপ্লুত হয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন তামিম ইকবাল। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আজ এমন একজন ব্যক্তি অবসর নিল, যার সঙ্গে আমার প্রায় ২০-২৫ বছরের একটা জার্নি। শুধু একটা স্ট্যাটাস দিয়ে আমি বোঝাতে পারব না যে আমার ফিলিংসটা কী তার প্রতি।’
তামিম আরও বলেন, ‘অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে একসঙ্গে খেলার শুরু। আমি কখনো ভাবতে পারিনি, একটা মানুষ এতটা কষ্ট করতে পারে! একটা মানুষের যতটা পরিশ্রম করা সম্ভব, আমার মনে হয় মুশফিক তার সবটুকুই করেছে। আমরা অনেক সময় মজা করতাম যে ও এত কষ্ট করে কীভাবে! কিন্তু এটা শুধু কথায় বোঝানো সম্ভব নয়। আমি কাছের বন্ধু হিসেবে বুঝতে পারি, ওয়ানডে থেকে তার বিদায় নেওয়া কতটা কষ্টকর। তবে আমি আশা করব, ১০০তম টেস্ট ম্যাচ সে খেলবেই।’
২০০৬ সালে অভিষেকের পর ১৯ বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২৭৪টি ম্যাচ খেলা মুশফিক নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অবসরের ঘোষণা দেন। তিনি লেখেন, ‘আজ আমি ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে অবসর ঘোষণা করছি। আলহামদুলিল্লাহ, সব কিছুর জন্য কৃতজ্ঞ। গত কয়েক সপ্তাহ আমার জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি উপলব্ধি করেছি, এটাই আমার ভাগ্য।’
পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত উল্লেখ করে মুশফিক লেখেন, ‘আল্লাহ কুরআনে বলেছেন: ‘তিনি যাকে ইচ্ছা সম্মান দেন এবং যাকে ইচ্ছা অপমান করেন।’ (সুরা আল ইমরান, ৩:২৬)। মহান আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন এবং সঠিক পথের দিশা দিন।’
মাশরাফির আবেগঘন প্রতিক্রিয়া মুশফিকের অবসরের ঘোষণায় আবেগাপ্লুত হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের আরেক কিংবদন্তি মাশরাফি বিন মর্তুজা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেন, ‘তোমার বিদায়ের ঘোষণায় এক লহমায় অনেক কিছু ভেসে উঠল চোখে-একসঙ্গে পথচলার এত বছর, মাঠের ভেতরে-বাইরে অসংখ্য স্মৃতি!ওয়ানডেতে তোমার রেকর্ডই তোমার হয়ে কথা বলবে। কিন্তু রেকর্ড বইয়ে লেখা থাকবে না, কতটা নিবেদন আর নিষ্ঠায় তুমি ক্যারিয়ার গড়েছিলে, কতটা ঘামের স্রোত পেরিয়ে সাফল্যের তীর ছুঁয়েছিলে! তোমার পরিশ্রম, প্রতিজ্ঞা আর ত্যাগের গল্প বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রজন্মের পর প্রজন্মে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’
Discussion about this post