বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) নিয়ে এবার দর্শকদের আগ্রহ ছিল আকাশছোঁয়া। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের স্টেডিয়ামগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। এমনকি টিকিট না পাওয়ায় অনেক দর্শক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, ভাঙচুরও হয়েছে কয়েক দফা। বিপিএলের এই বিপুল জনপ্রিয়তা টিকিট বিক্রিতেও প্রভাব ফেলেছে।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, এবারের বিপিএলে প্রায় ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে, যা গত ১০ আসরের মোট টিকিট বিক্রির কাছাকাছি। ফারুক বলেন, গত ১০ আসরে মিলিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) প্রায় ১৫ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি করেছিল। এবার এক আসরেই সেই পরিমাণের কাছাকাছি চলে গেছি।’
এছাড়া, তিন বছরের জন্য বিপিএলের টিকিট স্বত্বও বিক্রি করা হয়েছে এক কোটি টাকা করে। বিপিএল নিয়ে এতদিন লাভ-ক্ষতির হিসাব স্পষ্ট না থাকলেও এবার থেকে টিকিট বিক্রির অংশ ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও পাবে বলে জানিয়েছেন ফারুক।
বিপিএলের সময় নিয়ে বরাবরই সমালোচনা হয়। দুবাই ও দক্ষিণ আফ্রিকায় একই সময়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ চলায়, তারকা বিদেশি ক্রিকেটারদের আকর্ষণ করতে পারেনি এবারের বিপিএল। ফলে বেশিরভাগ দলে মানসম্পন্ন বিদেশি ক্রিকেটারের অভাব ছিল।
এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, আমরা আগামী বিপিএল নিয়ে কাজ শুরু করেছি। সময় নিয়ে ভাবছি, যেন মানসম্পন্ন বিদেশি খেলোয়াড় পাওয়া যায়।
বিপিএলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঠিক করতে আজ (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিসিবি ভবনে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিসিবি সভাপতি। বৈঠক শেষে সাবেক অধিনায়ক রাজিন সালেহ বলেন, মূলত বিপিএল কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সূচি কীভাবে আরও ভালো করা যায় এবং ভালো মানের বিদেশি খেলোয়াড়দের কীভাবে আনা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সালেহ। তিনি বলেন, সর্বোপরি, বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে বেশিরভাগ আলোচনা বিপিএল নিয়েই হয়েছে।
মিরপুরের এই বৈঠকে জাতীয় দলের বর্তমান ও সাবেক অধিনায়করা উপস্থিত ছিলেন, যাদের মধ্যে ছিলেন হাবিবুল বাশার সুমন, শাহরিয়ার নাফিস, গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, রাজিন সালেহ, আকরাম খান, মোহাম্মদ আশরাফুল এবং লিটন দাস-মমিনুল হক।
তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মাশরাফি বিন মর্তুজা, নাঈমুর রহমান দুর্জয় এবং সাকিব আল হাসানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এছাড়া দেশের বাইরে থাকায় বৈঠকে থাকতে পারেননি সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
এবারের বিপিএলে নানা বিতর্কও ছিল। শুরুতে টিকিট কাটতে গিয়ে দর্শকদের ভোগান্তি, কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজির খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক দিতে দেরি করা এবং স্পট ফিক্সিং সন্দেহ-এসব কারণে টুর্নামেন্ট কিছুটা বিতর্কিত হয়ে ওঠে।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ এসব স্বীকার করে বলেন, ‘নতুন টিকিট ব্যবস্থায় প্রথম দিকে ঝামেলা হয়েছিল। দু-একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি পারিশ্রমিক দিতে দেরি করেছিল। তবে দর্শক, টিকিট বিক্রি, উইকেট এবং টিভি প্রোডাকশনের দিক থেকে বিপিএল ভালোই হয়েছে।’
Discussion about this post