মঞ্চে তখন টানটান উত্তেজনা। রাজধানীর এক পাঁচতারকা হোটেলের মঞ্চে বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা তিন ক্রীড়াবিদ কাজী সালাউদ্দিন, সাকিব আল হাসান আর নিয়াজ মোর্শেদ। তাদের মধ্য থেকেই বেছে নেওয়া হবে- ৫০ বছরের সেরা। রোমাঞ্চ ছড়াল। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা শেষে মিলল উত্তর কে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পাঁচ দশকের মধ্যে সেরা ক্রীড়াবিদ!
ফুটবলের সালাউদ্দিন আর দাবার নিয়াজকে পেছনে ফেলে গত ৫০ বছরের বাংলাদেশের সেরা ক্রীড়াবিদ ক্রিকেটের সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি প্যানেল এই স্বীকৃতি দিয়েছে।
ক্রীড়া লেখক সমিতি সেরা ১০ ক্রীড়াবিদের নাম আগেই প্রকাশ করে। নয় জন বিচারক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পারফরম্যান্স, খেলায় এবং খেলাপ্রেমীদের মধ্যে প্রভাব বিবেচনা করে নম্বর প্রদান করেছেন। এই নম্বরের ভিত্তিতেই ১-১০ নির্ধারিত হয়েছে।
এমন অর্জনের পর উচ্ছ্বসিত সাকিব। নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার বলছিলেন, ‘দেখুন,এটা আমার জন্য অনেক গর্বের বিষয়। ব্যক্তিগতভাবে আমার সেরা অর্জন। আমি আগেও বলছি, এখানে যে ১০ জন আছেন, সবাই তাদের জায়গায় সেরা। সবাই যার যার খেলায় অবদান রেখেছেন। একজন তো সেরা হিসেবে নির্বাচিত করতে হতো। সেটা শেষ পর্যন্ত আমি হয়েছি। সবাইকে ধন্যবাদ, যারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আশা করি, ভবিষ্যতে যত দিন খেলায় থাকব, এই পুরস্কারের প্রতিদান দিতে পারব।’
সঙ্গে আরও যোগ করেন, ‘এই পুরস্কার আপনাকে আরও বেশি দায়িত্বশীল করবে। অনুপ্রাণিত করবে। এমন বিষয় যে কাউকেই অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করে। সে ক্ষেত্রে এমন একটা পুরস্কার আমার জন্য অনেক বেশি অনুপ্রেরণাদায়ক ও দায়িত্বের। আমি চেষ্টা করব সামনেও ভালো করে যাওয়ার। আমাদের সবারই দায়িত্ব আছে যার যার জায়গা থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। যেহেতু আমরা খেলার মানুষ, আমরা খেলার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে পারি। সেটাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।’
বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির (বিএসপিএ) সেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার, জাতীয় ক্রিকেট দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলপতি সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। আর তৃতীয় সেরা নির্বাচিত হয়েছেন গ্র্যান্ড মাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ।
সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির (বিএসপিএ) ৬০ বছর পেরিয়ে পা রাখল ৬১তম বছরে। ৫ যুগ পূর্তি উপলক্ষ্যে সোনারগাঁও হোটেলে শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশের সেরা ১০ ক্রীড়াবিদকে সন্মাননা দিল সংগঠনটি।
৯ সদস্যের স্বাধীন বিচারক প্যানেল নাম্বারিংয়ের ভিত্তিতে ১২০ ক্রীড়াবিদের মধ্য থেকে ১০ জনকে মনোনীত করে।
পুরস্কারপ্রাপ্ত বাকি সাত ক্রীড়াবিদ হলেন, সাবেক ফুটবলার মোনেম মুন্না (চতুর্থ), বক্সার মোশাররফ হোসেন (পঞ্চম), ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা (ষষ্ঠ), শ্যুটার আসিফ হোসেন খান (সপ্তম), স্প্রিন্টার শাহ আলম (অস্টম), সাঁতারু মোশাররফ হোসেন খান (নবম) ও গলফার সিদ্দিকুর রহমান (দশম)।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদান করেন এই পুরস্কার। এশিয়ান ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি হি দং জং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন। এই অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন।
Discussion about this post