রীতিমতো অজেয় হয়ে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। ভাবা যায় টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত! আকাশে উড়তে থাকা সেই দলটাকেই কীনা মাটিতে নামিয়ে আনল সৌদি আরব। লুসাইল স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। এই হারে তাদের দ্বিতীয় রাউন্ডের পথ হয়ে গেল কঠিন আর্জেন্টিনার।
অথচ রেকর্ড গড়া গোলে শুরুতে লিওনেল মেসি এগিয়ে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনাকে। প্রথমার্ধে তাদের তিনটি গোলের চেষ্টা নষ্ট হলো অফসাইডের ফাঁদে। দ্বিতীয়ার্ধে সৌদি আরব দেখাল চমক। ৫ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে দিল সৌদি আরব।
আলবিসেলেস্তেদের হারিয়ে জন্ম দিল কাতার বিশ্বকাপের প্রথম অঘটনের। অথচ মনে হচ্ছিল অনায়াসেই জিতবে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ১০ মিনিটে মেসির পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। তারপর ২২ মিনিটে সেই মেসিই আরও একবার বল জালে জড়ান সৌদির। কিন্তু অফসাইডে সর্বনাশ। তারপর আরও দুবার বল জড়িয়েছে সৌদি আরবের জালে। সেই দুই বারও আর্জেন্টিনার গোল বাতিল অফসাইডে।
মেসির পর দুই বারের দুর্ভাগার নাম লাওতারো মার্টিনেজ। প্রতি আক্রমণে উঠে এসে দারুণ এক চিপে বলটা জড়ান জালে। এবার ভিএআর দেখে এসে রেফারি জানালেন,গোল হয়নি। ৩৪ মিনিটে আবারও তিনিই ফের হতাশ হলেন।
তিনটি গোল বাতিলের পরও বিরতিতে যাওয়ার সময় এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের বাঁশি বাজতেই চমক দেখায় সৌদি আরব! দুর্বল ডিফেন্সের সুযোগ নিয়ে ৪৮ মিনিটে সমতা ফেরান সালেহ আল-শেহরি। এরপর ৫৩ মিনিটে সালেম আল-দাওসারি দুরন্ত গোলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় মরুর দেশ।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে সৌদি আরব অনেক পিছিয়ে। কিন্তু বিশ্বকাপে এসে তাদের কাছেই ধরাশায়ী লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে এসে হতাশাতেই শুরু মেসির। অথচ ম্যাচটা হতে পারতো তার। আর্জেন্টিনার প্রথম ফুটবলার হিসাবে চারটি বিশ্বকাপে গোল করার নজির গড়েন শুরুতেই। লুসাইল স্টেডিয়ামে এই গোলে মেসি টপকে গেলেন ডিয়েগো মারাডোনা আর গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে।
২০০৬ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলেন মেসি। সে বার একটি গোল করেছিলেন তিনি। এরপর ২০১৪, ২০১৮-র পর ২০২২ বিশ্বকাপে গোল করেন তিনি। মাঝে ২০১০ বিশ্বকাপে গোল করতে পারেননি তিনি। মারাডোনা ১৯৮২, ১৯৮৬ এবং ১৯৯৪ বিশ্বকাপে গোল করেছিলেন। অন্যদিকে, বাতিস্তুতা গোল করেন ১৯৯৪, ১৯৯৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে। দু’জনেই তিনটি করে বিশ্বকাপে গোল করেছেন। এবার সেই রেকর্ড শুধুই মেসির!
তবে উদযাপন করার সুযোগ পেলেন কোথায় মেসি? সৌদি আরব যে চমকে দিল তাদের।
Discussion about this post