ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
করোনা ভীতির মধ্যেও গত কয়েকমাস ধরেই মাঠের ক্রিকেট চলছে। আন্তর্জাতিক কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেট- সবখানেই সমানভাবে মানতে হচ্ছে করোনা স্বাস্থ্যবিধি। আর তা করতে গিয়ে দিনের পর দিন একটা নির্দিষ্ট জায়গায় বায়ো সিকিউর বাবলের (জৈব সুরক্ষা বলয়) মধ্যে অবস্থান করতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের। কিন্তু এভাবে বেশিদিন ক্রিকেট খেলা সম্ভব নয় বলেই ধারণা ক্রিকেটারদের। তাদের পক্ষে এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান ও ক্যারিবীয় দলনেতা জেসন হোল্ডার।
দীর্ঘ বিরতির পর মাঠে খেলা ফেরানোটা বাকি সবার মতো মরগ্যানের কাছে আনন্দের বিষয় এবং তিনি এটিকে বড় অর্জন হিসেবেও দেখেন। কিন্তু বছরের পুরোটা সময় বায়ো সিকিউর বাবলের মধ্যে থেকে খেলা সম্ভব নয় মন্তব্য তার। প্রায় একই সুরে কথা বলেছেন জেসন হোল্ডারও।
মরগ্যান বলেন, ‘আমাদের গ্রীষ্মকালীন মৌসুমের আন্তর্জাতিক সূচি সফলভাবে শেষ করতে পেরেছি। যেসব দল খেলতে এসেছে এবং ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) যে দায়িত্ববোধ দেখিয়েছে তা সত্যিই অনেক বড় অর্জন। এর সঙ্গে জড়িত সকল স্টাফের একাত্ম অবিশ্বাস্য ছিলো। আমরা অনেক ভাগ্যবান যে আবার খেলার মতো অবস্থায় আসতে পেরেছি।’
‘তবে ১২ মাস ধরে এই বাবল ধরে রাখা কিংবা টানা বাবলের মধ্যে থেকে খেলা অসমর্থনযোগ্য। আমার মনে হয়, এটা আদৌ সম্ভব। আমি মনে করি, ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট যে কারও জন্য যে কঠিন চ্যালেঞ্জের পরিস্থিতি। দল হিসেবে আমরা মেনে নিয়েছি যে, খেলোয়াড়রা বাবলের বাইরে আসবে-যাবে, কেননা এর সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যও জড়িত। আমার মনে হয়, অনেক খেলোয়াড় এখন সফর থেকে নাম সরিয়ে নেবে। এটাই বাস্তবতা। এমনটা ভাবা উচিত হবে না যে, তারা দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ দেখাচ্ছে না।’
এদিকে অধিনায়ক জেসন হোল্ডারও মরগ্যানের বক্তব্যের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। ইংল্যান্ড সফর করায় ক্যারিবীয়রা বাহবা পেলেও, প্রথমত আংশিক কোয়ারেন্টাইন এবং পরে আবার বায়ো সিকিউর বাবলের মধ্যে একপ্রকার বন্দী থাকায় মানসিকভাবে খানিক পিছিয়েই পড়েছিলেন হোল্ডার, ‘মাঠে ফেরাটা তখন বড় প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি ভাগ্যবান যে এখনও কাজ করে যাচ্ছি। বিশ্বে অনেক মানুষ আছে যারা করোনাভাইরাসের কারণে কাজ হারিয়ে বসে আছে। কিন্তু আমাদেরকে এখনও মানুষকে বিনোদন দেয়া সুযোগটা দেয়া হয়েছে। এ কাজটি করতে আমরা ভালোবাসি।’
হোল্ডার আরও বলেন,‘কিন্তু এটিও মাথায় রাখতে হবে যে, সেরাটা পেতে হলে খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটিও চিন্তা করতে হবে। ইংল্যান্ডে আমাকে দুই মাস বাবলের মধ্যে থাকতে হয়েছে। এরপর মাত্র দুইদিন বাড়িতে আবার দেড় মাসের জন্য সিপিএল খেলতে ত্রিনিদাদ চলে যাই। এটি শেষ করে ৪-৫ দিন বার্বাডোজে নিজ বাড়িতে থাকতে পেরেছি, পরে আইপিএল থেকে ডাক পেলাম। এখানেও রীতিমতো আইসোলেশনেই থাকতে হচ্ছে। আপনি যদি সূচির দিকে দেখেন, এখানে সহজ কিছু নেই। বিষয়টা এমন যে, এক বাবল থেকে আরেক বাবলে স্থানান্তর হওয়া মাত্র। কিছু জায়গায় পরিবার নেয়ার অনুমতি আছে, কিছু জায়গায় নেই। ফলে পরিবার এবং ভালোবাসার মানুষদের কাছ থেকে দূরে থাকা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। আমি গত ৫ মাস ধরে বার্বাডোজকে ভালো করে দেখি না এবং এটাও জানি না কবে সেখানে ফিরতে পারব।’
Discussion about this post