ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
তার হাত ধরে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে ক্রিকেটের পুনর্জন্ম হয়েছিল। দেশের ক্রিকেটের প্রচারপ্রসারে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন রেজা-ই-করিম। দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। দেশের ক্রিকেটের অন্যতম এই কান্ডারি রোববার ভোরে চলে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)।
রেজা-ই-করিমের জন্ম ১৯৩৯ সালে কলকাতায়। চাকরির সুবাদে তার বাবা থাকতেন সেখানেই। ১৯৪২ সালে বাবা তাদেরকে রেখে যান চাঁদপুরে। দেশ বিভাগের পর চট্টগ্রাম রেলওয়ের হেড অফিসে যোগ দেন চিফ অডিট অফিসার হিসেবে। চট্টগ্রামে তার ক্রিকেট জীবনের শুরু। তারা গড়েছিলেন স্টার ক্লাব, যেখানে পরে খেলেছেন সেই সময়ের অনেক নামি ক্রিকেটার। তার সংগঠক হওয়ার শুরুও সেই ক্লাব থেকেই।
চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যায় করেন বিএসসি ও এমএসসি। ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্ক আরও পোক্ত হয় তখন। ছিলেন ওপেনিং ব্যাটসম্যান, প্রয়োজনে করতেন উইকেটকিপিংও। ঢাকা প্রথম বিভাগে খেলেন সেই সময়ের অন্যতম সেরা ক্লাব ঈগলটসে। পরে চাকরির সুবাদে খেলেন কমার্স ব্যাংকের হয়ে।
ঈগলটসে খেলার সময়ই সংগঠক হিসেবে ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। ক্রমে খেলোয়াড় পরিচয় ছাপিয়ে সেটিই হয়ে উঠেছে বড়। পূর্ব পাকিস্তান দলে খেলার স্বপ্ন ছিল তার, কিন্তু সংগঠক হিসেবে এতটাই অপরিহার্য হয়ে ওঠেন যে নিজের খেলার স্বপ্ন একসময় বিসর্জন দিতে হয়
মৃত্যুকালে রেজা-ই-করিমের বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। এরআগে বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক জটিলতা ছাড়াও ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বিসিবি।
ক্রিকেট ফেরাতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নিরলস প্রচেষ্টা করে গেছেন রেজা-ই-করিম। ১৯৭৪-৭৫ সালে তত্কালীন বিসিসিবির প্রথম বিভাগীয় লিগ ও টুর্নামেন্ট কমিটির সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৬-৭৭ এ বোর্ডের প্রথম সংবিধান খসড়ার সময় কার্যনির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম আইসিসি ট্রফির দলে তিনি ছিলেন সহকারী ম্যানেজার। এরপর ম্যানেজার, নির্বাচক হিসেবে কাজ করেন নব্বই দশকের শেষ পর্যন্ত।
মৃত্যুকালে স্ত্রী ও এক ছেলে রেখে গেছেন রেজা-ই-করিম।
Discussion about this post