ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
প্রথমবার পূর্নাঙ্গ ভারত সফরে যেয়েই প্রথম টি-টোয়েন্টিতেই বাজিমাত করে বাংলাদেশ। কিন্তু পরের ম্যাচেই রোহিত শর্মা ব্যাটিং ঝড়ে বিধ্বস্ত হয় টিম টাইগার্স। তবে ভেঙে পড়েননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। তাদের এখন একটাই চিন্তা রবিবার সিরিজের শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ ছোঁয়া। এটা করতে পারলেই কিন্তু বাংলাদেশ গড়বে প্রথমবার ভারতের মাটিতে সিরিজ জেতার ইতিহাস।
রবিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে নাগপুরে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। এরআগে দুই দলের প্রথম দেখায় বাংলাদেশ জিতেছিল ৭ উইকেটে। কিন্তু পরের ম্যাচে টাইগাররা হেরেছির ৮ উইকেটে। যে কারণে তিন ম্যাচের সিরিজ এখন ১-১ এ সমতায় রয়েছে। তাই আগামিকালের ম্যাচটি দুই দলের জন্যই হয়ে দাঁড়িয়েছে অলিখিত ফাইনাল।
ভারত সফরের আগে দেশের ক্রিকেটে নানা ঝড়-ঝাপটা গেছে। যা সামলে এত শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে শেষ অবধি সিরিজ জমিয়ে রাখা, সমান তালে লড়াই করা, ক্রিকেটারদের এই মানসিকতায় মুগ্ধ প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। শেষ ম্যাচের আগে তিনি বলেছেন, মুখিয়ে আছেন আরও বড় কিছুর জন্য, ‘এই সফরের আগে খুব কঠিন কিছু সময় গেল। খেলোয়াড়দের কৃতিত্ব দিতেই হবে। যে উদ্যম আর তাড়না তারা গত দশ দিনে দেখিয়েছে তা ছিল দুর্দান্ত। তারা নতুন কিছু করতে চেয়েছে। শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে এসেছে তাও দেশের বাইরে। দুই সপ্তাহ আগেও যদি কেউ বলতে নাগপুরে সমতা নিয়ে আমরা আসব, কেউ বিশ্বাস করত না।’
ভারত সফরে এখন পর্যন্ত শিষ্যদের পারফরম্যান্সে খুশি কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তার আশা রবিবার সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে আরও ভালো কিছুই করবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা, ‘আমরা নিজেদের নিয়ে খুবই তৃপ্ত। আজ একটা দারুণ সুযোগ। ছেলেরা রোমাঞ্চিত। দিন শেষে ভারত বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। এখানে কেউ বাংলাদেশের সুযোগ দেখবে না। কিন্তু যদি আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে আমাদেরও সুযোগ থাকবে।’
প্রথম ম্যাচে টাইগারদের বোলিং ভালো হলেও গত বৃহস্পতিবার হয়নি। যে কারণে রবিবার দলে পরিবর্তনের সম্ভাবনার আভাস রয়েছে। যদিও শনিবার সংবাদ সম্মেলনে তেমন কিছুই বললেন না ডমিঙ্গো, ‘ভারতের (ব্যাটিং অর্ডারের) উপরের দিকের ছয় জনের মধ্যে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের সংখ্যা বেশি। এক ম্যাচ আগেই তাদের বিপক্ষে আমাদের অফ স্পিনাররা (আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন) ভালো বল করেছে। কিন্তু আগের ম্যাচে তা কাজে লাগেনি দেখে সবকিছু বদলে ফেলার কোনো মানে হয় না। আমরা এমন কোনো দল হতে চাই না যারা হারার পর অসচেতনভাবে তড়িঘড়ি করে প্রতিক্রিয়া দেখায়।’
ডমিঙ্গো আরও বলেন, ‘আমরা একদল খেলোয়াড়কে সমর্থন যুগিয়ে যেতে চাই। কেউ একটা ম্যাচ খারাপ খেলেছে বলে সে আগামী ছয় মাস খেলবে না তা হতে পারে না। এটা টি-টোয়েন্টি খেলার অংশ। আমরা বিশ্বাস করি যে যারা প্রথম দুই ম্যাচ খেলেছে তারা যথেষ্ট ভালো। কেউ একজন আমাদের বিপক্ষে খুবই ভালো খেলেছে বলে কৌশলগত অনেক পরিবর্তন করতে হবে, বিষয়টা এমন না।’
এদিকে চলতি সিরিজে বড় ইনিংস না খেলার আক্ষেপ রয়েছে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে। তবে ব্যাপারটি নিয়ে এরইমধ্যে শিষ্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন ডমিঙ্গো। এ অবস্থা থেকে আজ বের হবে দল। আশা কোচের, ‘হ্যাঁ আমরা এটা নিয়ে কথা বলেছি। প্রথম ম্যাচে মুশফিক বড় রান করায় আমরা জিতেছি। রোহিত বড় রান করায় তারা জিতেছে। আমরা দুটো ৩০ রানের ইনিংস করেছি। কিন্তু কেউ একজন যেন ৭০-৮০ রান করতে পারে, আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে।’
এখন পর্যন্ত ভারতের বিপক্ষে ৯টি টি-টোয়েন্টিতে খেলেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে একটিতে জিতেছে টিম টাইগার্স। রবিবার সে ধারাবাহিকতা ফের দেখাতে চাই তারা। তবেই প্রথমবার ভারতের মাটিতে সিরিজ জেতার স্বাদ পাবে রিয়াদের দল। সে লক্ষ্য পূরণে গত কয়েকদিন নাগপুরে কঠোর অনুশীলন করেন তারা। আগামিকাল ম্যাচেই তার ফল পাওয়ার আশার বিভোর টিম বাংলাদেশ।
Discussion about this post