এগার বছর পর ঘরের মাঠে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি বাংলাদেশ। রোববার ছিল ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন। যেখানে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ১ম ইনিংসে করেছে ২৬০ রান। সাকিব আল হাসানের ব্যাটে ৮৪। ক্যারিয়ারের পঞ্চমতম টেস্ট খেলতে নেমেছেন তিনি। তারপর তার ও মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণি বলের সামনে পড়ে দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে অজিদের রান ১৮। প্রথম দিন শেষে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। এখানে সেই আলাপচারিতার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হল-
সাকিব আপনার ও তামিমের জুটি আর দিন শেষে তিন উইকেট তুলে নেয়া। কতোটা ইতিবাচক?
ব্যাপারটা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিলো। আমার কাছে মনে হয় আমরা দুজন খুব ভালো অ্যাপ্লাই করতে পেরেছি। আমাদের জুটিটা ম্যাচের জন্য জরুরি ছিলো। কন্ডিশনের দিক থেকে বিবেচনা করলে খুব ভালো ছিলো। আমরা হয়তো এখন ড্রাইভিং সিটে আছি। তবে কালকে একটা নতুন দিন এবং আমাদের আরো সাতটা উইকেট নিতে হবে। সুতরাং সেটাও আমাদের মাথায় আছে। এ ছাড়া ওদের ভালো কয়েকজন ব্যাটসম্যান আছে। আমাদের ফোকাস ঠিক রাখতে হবে। যেহেতু টেস্ট ম্যাচ। প্রতিটি দিনেই নতুন নতুন পরিস্থিতি আসে। সেগুলো ঠিকভাবে হ্যান্ডল করাটাই জরুরি।
তাদের স্পিনারদের বোলিং দেখে মনে হচ্ছিলো যে বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু অপেক্ষা করছে?
না। বল কিন্তু প্রথম থেকেই ঘুরছিলো। বিশ্বাস ছিলো যে ওদের জন্য কাজটা কঠিন হবে। আমাদের লক্ষ্য ছিলো আড়াইশর মতো করা। যেটা করতে পেরেছি। নাসির-মিরাজ ও শফিউলের ব্যাটিং খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।
কালকের (সোমবার) বোলিং প্ল্যান নিয়ে বলুন
প্ল্যান থাকবে ভালো জায়গায় বোলিং করে যাওয়া। উইকেট পাওয়া না পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু ভালো জায়গায় বোলিং করা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। চেষ্টা থাকবে সেটাই ঠিকভাবে করার।
আমরা রিভিউয়ের ব্যবহার কি ঠিক মত করতে পারছি?
আমার মনে হয় এটা এখন ভালোই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মিরাজেরটা আউট ছিলো না। সুতরাং মিরাজের সময় রিভিউ থাকলে সেটা নেয়া যেতো। কারণ মিরাজ ও নাসিরের জুটিটা ভালো হচ্ছিলো। ওরা ৪২ রান করে ফেলেছিলো। রিভিউ থাকলে আরো ভালো করতে পারতো।
সাব্বিরের রিভিউ নেওয়া কি ঠিক সিদ্ধান্ত ছিল?
ওটা তামিম বলতে পারবে। ও তখন উইকেটে ছিলো। এরপর আর কোনো কথা হয়নি।
তামিমের সঙ্গে সাধারণত আপনার জুটি হয় না, ৫০ টেস্টে মাত্র পাঁচটা। আজ কী আলাপ হচ্ছিলো?
কিছুই না। ওভাবে কথা হয় না তো। জাস্ট ব্যাটিং করতে থাকা। যতক্ষণ সম্ভব। প্রথম সেশন যাওয়ার পর আমরা আরো ভালো ব্যাটিং করছিলাম। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দুটো বল লাফিয়ে উঠেছিলো। ওই জন্যই আমাদের উইকেটটা হারাই। আমার কাছে মনে হয়, আমাদের জন্য কাজটা সহজ ছিলো। কারণ অনেক দিন একসঙ্গে খেলেছি। আমাদের মধ্যো বোঝাপড়ার অভাব আছে, এমনও নয় ব্যাপারটা। দুজনেরই ৫০ টেস্ট হচ্ছে। বোঝাপড়া নিয়ে শঙ্কা থাকার কথা নয়।
ম্যাচটা কি পাঁচদিন হবে বলে মনে হয়?
এখন পর্যন্ত যা হলো, তাতে মনে হয় না পাঁচদিন যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। হয়তো কাল উইকেট একটু ভালো আচরণ করতে পারে। প্রতিটি দিনই আসলে নতুন। দিনের শুরুতে হয়তো কিছুটা প্রেডিক্ট করা যেতে পারে। কিন্তু এখন কিছু বলে দেয়া মুশকিল।
স্টিভেন স্মিথ সবচেয়ে বড় হুমকি কিনা, তাকে বোলিং করা কতোটা কঠিন হবে?
অবশ্যই ওই সবচেয়ে বড় হুমকি। ও বিশ্বের এক বা দুই নম্বর ব্যাটসম্যান। ওর রেকর্ডই ওর হয়ে কথা বলে। সর্বশেষ ও যখন ভারতের হয়ে খেলেছে। কয়েকটা সেঞ্চুরি করেছে। ওর মতো বিশ্বমানের মতো ব্যাটসম্যানকে বোলিং করা বিরাট চ্যালেঞ্জ। এটাই— ওই হলো এখন পর্যন্ত আমাদের বড় হুমকি।
সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ আছে?
আক্ষেপ থাকবে। সেঞ্চুরি করতে পারলে ভালো হতো। যতোটা করতে পেরেছি হ্যাপি। তবে অবশ্যই আরো কিছু করতে পারলে তো আরো খুশি হতাম।
সফরকারী অস্ট্রেলিয়াকে দিনের শেষ বেলায় চাপে ফেলা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল?
এটা রোমাঞ্চকর একটা ব্যাপার। আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। আমরা জানতাম যে, নয়টা ওভার পাবো। এর মধ্যে উইকেট ফেলতে পারলে ভালো হতো। সেটাই হয়েছে। আমরা তাদের চাপে ফেলতে পেরেছি। এটা করতে পেরে এবং দলের সাড়া পেয়ে খুবই খুশি।
Discussion about this post