শেষ পর্যন্ত আপোষেই সমাধান। শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন রাজীব ও তার স্ত্রী জেসমিন জাহান নিত্য শাহাদাতকে বেকসুর খালাস দিল ট্রাইব্যুনাল। ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর এর বিচারক তানজিনা ইসমাইল রোববার এই রায় দেন। রায়ে আসামীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস পেলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার এবং তার স্ত্রী।
শাহাদত হোসেন রাজীব এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ উঠে বেশ কিছুদিন আগে। সেই মামলা নাটকীয় মোড়ও নেয়। যে গৃহকর্মী অভিযোগ তুলেছিল সেই কিশোরী ভিন্ন সুরে কথা বলতে শুরু করে। আদলতে সেই শিশু গৃহকর্মীটি জানায় ‘আসামিরা আমাকে কোনো রকম খুন্তির ছ্যাঁকা দেননি। আগে মানুষের পরামর্শে এই মামলা করি।’
গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন ও তাঁর স্ত্রী জেসমিন জাহানের বিরুদ্ধে করা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এ কথা বলে নির্যাতিতা গৃহকর্মী মাহফুজা আক্তার হ্যাপি (১১)।
আদালতকে গৃহকর্মী মাহফুজা বলে, ‘আমি ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেনের বাসায় কাজ করতাম। ৭ মাস কাজ করেছিলাম। কাজ করতে ভালো লাগত না। এ জন্য শাহাদাতের স্ত্রী বকাঝকা করত। দুর্ঘটনায় আমার পা ভেঙে যায়। এ জন্য চিকিৎসা নিই। আসামিরা আমাকে কোনো রকম খুন্তির ছ্যাঁকা দেননি। আগে মানুষের পরামর্শে এই মামলা করি। আমাকে কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করে নাই। আমি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডাক্তারের কাছে কিছু বলছি কি না, আমার মনে নেই।’
বুধবার ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক তানজিনা ইসমাইল ৩১ আগস্ট পরবর্তী শুনানির জন্য তারিখ ধার্য করেন।
গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর গৃহকর্মী হারিয়ে গেছে জানিয়ে শাহাদাত থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। কিন্তু এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর উদ্ধার সেই শিশু গৃহকর্মী পুলিশের কাছে অভিযোগ করল, রাজীব ও তার স্ত্রী তার ওপর নির্যাতন চালাতেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশুটিকে মিরপুর ২ নম্বরের স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তার পাশে থেকে উদ্ধার করে। শিশুটি জানায়, ‘সে জাতীয় দলের ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেনের বাসায় কাজ করতো। প্রায়ই শাহাদাত ও তার স্ত্রী তার ওপর নির্যাতন করতো।
এরপর পালিয়ে ছিলেন শাহাদাত। পরে ৪ অক্টোবর নিত্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন শাহাদাত। পরে জেল খেটে দু’জন জামিনে মুক্তি পান। এবার মামলা থেকেই মুক্তি মিলল তাদের। তাতে জাতীয় দল কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার পথ উন্মুক্ত হল শাহাদাতের। এমনিতে বিসিবি অলিখিত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল এই পেসারকে।
Discussion about this post