বাংলাদেশের আপনজন মোহাম্মদ অালি। তিনি এই দেশের সম্মানসূচক একজন নাগরিকও। তাইতো লাল-সবুজকে দারুণ ভালবাসতেন সর্বকালের সেই এই ক্রীড়াবিদ। যে কারণেই গর্ব নিয়ে এক সময় বলেছিলেন, ‘আমাকে যদি আমেরিকা থেকে বের করেও দেওয়া হয়, আমার আরেকটি ঘর আছে।’
সময়টা ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি। তখন বাংলাদেশের পতাকাটির বয়স মাত্র ৭ বছর। সেই সময় স্বাধীন বাংলাদেশে এসেছিলেন একজন কিংবদন্তী। শুক্রবার রাতে মারা যাওয়া এই সর্বকালের সেরা মুষ্টিযোদ্ধার অনেক স্মৃতি ছিল এখানে। বাংলাদেশ সেই অকৃত্রিম বন্ধু মোহাম্মদ আলি।
৭৮ এ বাংলাদেশের পতাকা লাগানো বিমানটি মাটি ছোঁয়ার পরই গগণবিদারী ‘আলী… আলী’ চিৎকারে বিমানবন্দরের আকাশ-বাতাসে উৎসব ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সেদিনের উপস্থিত দর্শকরা। যেটা বিমোহিত করেছিল এই কিংবদন্তিকে। পরবর্তীতে বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব গ্রহন করেছিলেন আলী। দৃপ্ত কণ্ঠে ভালোবাসার প্রতিদানে বলেছিলেন, ‘আমাকে যদি আমেরিকা থেকে বের করেও দেওয়া হয়, আমার আরেকটি ঘর আছে।’
সেই সফরে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন, বাঘ সংরক্ষণাগার, সিলেটের চা বাগান, রাঙামাটি আর বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে গিয়েছিলেন তিনি।
এরপর বিমানে চাপার সময় বিমানবন্দরে উপচে পড়েছিল দর্শকের ঢল। বিমানে ওঠার আগে আবেগে আপ্লুত আলী ক্যামেরার দিকে বাংলাদেশ থেকে পাওয়া পাসপোর্ট উঁচিয়ে ধরে বলেছিলেন, ‘যদি স্বর্গ দেখতে চাও, বাংলাদেশে এসো।’
এর আগে ১৯৬০ এর দশকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর কেন্টাকির তরুণ ক্যাসিয়াস ক্লে থেকে মোহাম্মদ আলি নাম নাম ধারণ করেন তিনি। সারা জীবন সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য লড়ে গেছেন তিনি।
শহীদ রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে দারুণ সুসম্পর্ক ছিল আলির। মুহাম্মাদ আলী ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সফর করেন। পরে আরেকবার ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। বেগম খালেদা একটি বার্তা সংস্থাকে বলেন, ‘এই কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধাকে ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে নিয়ে এসে নাগরিকত্ব দিয়ে সন্মানিত করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।’
Discussion about this post