নভজ্যোৎ সিং সিধু বিতর্কিত ধার ভাষ্যকারদের একজন। কথায় লাগাম ধরতে জানেন না তিনি। তাইতো তাকে নিয়ে ভক্তদের বিরক্তির শেষ নেই! এবার দেখে নিন ভারতের এই কমেন্ট্রেটরের দশটি দিক।
১. ক্রিকেট ধারাভাষ্য করার সময়ে শুধু সিধুই বলেন। তাঁর সহযোগী যে ধারাভাষ্যকাররা থাকেন, তাঁরা শুধু সিধুর কথায় সম্মতি জানান। সিধুর সঙ্গে দ্বিমত হওয়ার সাহস কেউ দেখান না। কারণ, দ্বিমত পোষণ করলেই সিধু এমন তুলনা টানবেন যা শুনে মাথা গরম হয়ে যাবে।
২. শুধু কী কমেন্ট্রি বক্স, চ্যানেলের স্টুডিওতেও সিধু সমান সাবলীল। তাঁর সামনে সুনীল গাওস্কর থেকে শুরু করে মুরলি কার্তিক, সবাই শ্রোতা। সঞ্চালক কোনও বিষয়ে প্রশ্ন করলে সিধুই বলতে থাকেন। অন্য বিশেষজ্ঞ যিনি থাকেন, কিছু বলতে চাইলে তাঁকে হাত তুলে সুযোগ চাইতে হয়। ঠিক যেমন কয়েকদিন আগে ওয়াকার ইউনিস একটি টক শোয়ে হাত তোলার পর সিধু দু-এক মিনিট তাঁকে বলতে দিয়েছিলেন।
৩. ম্যাচে কোনও খেলোয়াড় ভাল কিছু করলে সিধু একটা কথা অবধারিতভাবেব বলবেনই। ‘‘বাদে অউর অন্ডে টুটতে হ্যায়, কোশিশে কামিয়াব হতি হ্যায়’’, অর্থাৎ প্রতিশ্রুতি এবং ডিম ফেটে যায়, চেষ্টা করলেই সফল হওয়া যায়!
৪. সিধুর ধারাভাষ্যের জেরে অনেককেই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। একবার যেমন পার্থিব পটেল সম্পর্কে বলেছিলন, পার্থিব এতটাই সরল যে এক সমু্দ্র স্তনের মধ্যে ফেলে দিলে পার্থিব নিজের আঙুল চুষতে চুষতে উঠে আসবেন। শুধু পার্থিব নন, একবার জিওফ্রে বয়কটের সঙ্গে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময়ে তাঁকেও একই কথা বলে বসেন সিধু!
৫. তিনি একমাত্র ধারাভাষ্যকার, যিনি খেলা চলাকালীন খেলার বাইরের বিষয় নিয়ে সবথেকে বেশি কথা বলেন।
৬. সৌরভ গাঙ্গুলির রানিং বিটুইন দ্য উইকেটসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সিধু জ্যাক এন্ড জিলের জ্যাকের সঙ্গে মহারাজের তুলনা করে বসেন। জলের বালতি নিয়ে জ্যাকের পাহাড়ে চড়তে যেমন কষ্ট হয়েছিল, সৌরভেরও নাকি দৌড়নোর সময়ে একই অবস্থা হয়। বাবার নামের প্রতি সুবিচার করতে না পারার জন্য রোহন গাওস্কর সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, গরুর থেকে যে সবসময়ে শুধু দুধ পাওয়া যাবে, তার কোনও মানে নেই!
৭. ২০১১ সালে বিশ্বকাপ চলাকালীন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে আরশোলার সঙ্গে তুলনা করে আইসিসি-র রোষে পড়েন সিধু। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে বাংলাদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। ধারাভাষ্য করে এমন বিতর্কে অবশ্য বারবার জড়িয়েছেন সিধু।
৮. এত কিছুর পরেও অবশ্য সিধু ধারাভাষ্যকার হিসেবে যা পারশ্রমিক পান, তা শুনলে আপনার চোখ কপালে তুলবেই। ২০১৪ সালেই স্টার স্পোর্টস তাঁর বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ আনে। তখনই জানা যায়, ধারভাষ্যকার হিসেবে তিন বছরের জন্য প্রায় ২২.৫ কোটি টাকা ওই চ্যানেলের থেকে পাওয়ার কথা ছিল সিধুর।
৯. তবে এবারও আইপিএল চলাকালীন সিধুর ধারাভাষ্যে বিরক্ত হয়ে অসংখ্য ক্রিকেটপ্রেমী টুইট করেছেন। শুধুমাত্র সিধুর ধারাভাষ্যের ভয়েই অনেকে খেলা দেখছেন না বলেও দাবি করেছেন। কেউ কেউ আবার হিন্দি ধারাভাষ্য ছেড়ে ইংরেজি ধারাভাষ্য শুনছেন।
১০. সমালোচনা, বিতর্ক যাই হোক না কেন, সিধু আছেন সিধুতেই। নিজের ধারাভাষ্যের স্টাইলে কোনও বদল আনতেই নারাজ তিনি। যার প্রমাণ এবারের আইপিএলেও পাওয়া যাচ্ছে।
Discussion about this post