একেই বলে অধিনায়কের ক্যারিশমা! ব্যাট-বল দুটোতেই চমক দেখালেন তিনি। তাতেই ঠিক সেই চেনা ছন্দে থাকল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। অধিনায়ক মোশাররফ হোসেনের ব্যাটে-বলে সমান পারফরম্যান্স ঠিক পথেই রাখল দলকে। লিজেন্ডসরা প্রাইম দোলেশ্বরকে হারাল ৬ উইকেটে। জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে লিগে তৃতীয় স্থানে রূপগঞ্জ। রান রটে এগিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে ভিক্টোরিয়া। ৮ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে নেমে গেছে টানা দুই ম্যাচে হারা দোলেশ্বর। ১০ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে রয়েছে মোহামেডান।
বৃহস্পতিবার ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ওভারের ১০ বল আগে ২১৬ রানে অল-আউট হয় প্রাইম ব্যাংক। জবাবে ২২ বল হাতে রেখে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে রূপগঞ্জ।
রূপগঞ্জের জয়ের নায়ক মোশাররফ হোসেন শুরুটা করেছিলেন বল হাতে। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা দোলেশ্বরের ওপেনার ইমতিয়াজ হোসেনকে দিনের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই সাজঘরে ফেরান তিনি। তারপর ব্যাটসম্যানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বেধে রাখেন তিনি। ১০ ওভার বল করে মাত্র ২৭ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।
ব্যাট হাতেও দুর্দান্ত খেলেছেন মোশাররফ রুবেল। ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৯৮ বলে ৮১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই বাঁহাতি। জয়ের জন্য ২১৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটে নেমে শুরুতেই ওপেনার সৌম্য সরকারকে (০) হারায় রূপগঞ্জ। গত ম্যাচে আবাহনীর বিপক্ষে ৮৪ রান করে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এই বাঁহাতি। কিন্তু বৃহস্পতিবারও সেই পুরোনো চেহারায় দেখা গেলো তাকে। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে আরেক ওপেনার মিজানুর রহমান ৫২ বলে ৪০ রানের জুটি গড়ে দলকে প্রাথমিক বিপদ সামাল দেন। যদিও তিনি ২৭ রানে সাজঘরে ফিরে যান।
তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ব্যাটিংয়ে নেমেও নিজেকে ছাড়িয়ে যান অধিনায়ক মোশাররফ হোসেন। মিঠুনের সঙ্গে জুটি বেধে দারুণ খেলতে থাকেন তিনি। প্রতিপক্ষ বোলারদেরকে সাবলীলভাবে খেলেছেন। কোনো সময় ঝুঁকি নেননি তিনি। যখন যে বলে যেমন খেলা দরকার ঠিক তেমনই খেলেছেন। দলীয় স্কোরের সঙ্গে আরো ৬৩ রান যোগ করা এই জুটি ভাঙ্গে রান আউটে।
এরপর দলের বাকি সময়ে চতুর্থ উইকেট জুটিতে আসিফ আহমেদের সঙ্গে ম্যাচ জয়ী ৯৬ রানের জুটি গড়েন মোশাররফ। আর তাতেই ম্যাচ জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রূপগঞ্জ। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে নাসির, সানজামুল ও রবিউল নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই রূপগঞ্জের বোলিং তোপে পড়ে প্রাইম ব্যাংক। স্কোরবোর্ডে ১৪ রান উঠতেই নেই ২ উইকেট।
দলীয় স্কোর ১০০ পার হওয়ার আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে আবারো চাপে পড়ে টুর্নামেন্টের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। নিয়মিত বিরতিতে যখন দলটি উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত, ঠিক তখন অন্য প্রান্তে একাই লড়েছেন শ্রীলঙ্কা থেকে উড়ে আসা চামারা সিলভা। ৭৬ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে ৮৯ রান করেন সাজঘরে ফেরেন তিনি। তার বিদায়ের সঙ্গে শেষ হয় প্রাইম ব্যাংকের ইনিংসও।
রূপগঞ্জের হয়ে আবু হায়দার ও নাহিদুল ইসলাম নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। এছাড়া মোশাররফ রুবেল, আলাউদ্দিন বাবু, তাইজুল ইসলাম ও আসিফ আহমেদ নেন ১টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
প্রাইম দোলেশ্বর: ৪৮.২ ওভারে ২১৬ (ইমতিয়াজ ০, জিয়া ৫, রকিবুল ২৭, রনি ২৫, চতুরঙ্গা ৮৯, নাসির ১৪, রেজা ১৪, সানজামুল ২৫, রবি ১, রেজাউল ১, আল আমিন ০; হায়দার ২/২৫, নাহিদুল ২/৫২, আলাউদ্দিন ১/২২, মোশাররফ ১/২৭, তাইজুল ১/৩৮, আসিফ ১/৪০)
রূপগঞ্জ: ৪৬.২ ওভারে ২২২/৪ (মিজানুর ২৭, সৌম্য ০, মিঠুন ৫১, মোশাররফ ৮১, আসিফ ৫১*, সাজ্জাদুল ১*; রবি ১/২৯, নাসির ১/৩৫, সানজামুল ১/৪৩)
ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: মোশাররফ হোসেন।
Discussion about this post