জাতীয় দলের অনুশীলন ম্যাচ চলছিল তখন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে । বিকেল গড়াতেই সেখানে হঠাত্ গুঞ্জন-হোটেল রূপসী বাংলায় ইফতারের আগে প্রেস মিট করবেন সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বিসিবি সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন; আগেই জানা। তবে কি আরও নতুন কিছু বলবেন বিসিবির সাবেক এ সফল সভাপতি? প্রচার মাধ্যমে চাঞ্চল্য। কিন্তু নাহ, বাস্তবে তা হয়নি। বিসিবি নির্বাচন প্রসঙ্গে একটি কথাও বলেননি এ সরকারি দলের সংসদ সদস্য। উপস্থিত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়ার পক্ষ থেকে বারবার বলা হল কিছু বলুন; কিন্তু সাবের হোসেন চৌধুরী সুকৌশলে এড়িয়ে গেলেন বারবারই। এমনকি ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়া মুখের সামনে একঝাঁক বুম ধরলেও কূটনৈতিক ভাষায়ই কথা বললেন, ‘এটা স্রেফ দোয়া ও ইফতার মাহফিল। অন্য কিছুই নয়। আমরা সবাই বাংলাদেশের ক্রিকেটের শুভাকাঙ্ক্ষী-সুহূদ। আমাদের কায়মন কামনা, দেশের ক্রিকেট এগিয়ে যাক।’
বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান ব্যবস্থাপনা কিংবা নির্বাচন নিয়ে তার মুখ থেকে একটি শব্দও বের হয়নি। সাদা চোখে এটি শুধুই দোয়া ও ইফতার মাহফিল। কিন্তু বাস্তবতা হল-কালকের এ দোয়া ও ইফতার মাহফিল সাবের হোসেন চৌধুরীর নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরুর প্রথম পদক্ষেপ। যার পরতে পরতে ছিল নির্বাচনী আমেজ। তিনি যে বিসিবিতে নির্বাচন করবেন, তার প্রমাণ কালকের এ সমাবেশ। যেখানে স্থানীয় প্রচার মাধ্যম ছাড়াও একটা বড় অংশ ছিলেন রাজধানী ঢাকার ক্লাব কাউন্সিলর ও জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলররা।
ঢাকার ৭৬ ক্লাবের ৬০ ক্লাব আর জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার ৭২ জনের মধ্যে প্রায় ৬০ জন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া জাতীয় দলের প্রথম অধিনায়ক শামীম কবির এবং তিন সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান, খালেদ মাসুদ পাইলট, মোহাম্মদ আশরাফুল এবং দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অনেক পরিচিত মুখও এসেছিলেন এ অনুষ্ঠানে।
তার খুব কাছেরজনরা আগেই নিশ্চিত করেছেন, এ দোয়া-ইফতার মাহফিলে আমন্ত্রিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনসহ বাকি ১২ সদস্য। জাতীয় দলের সব সাবেক অধিনায়ককেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু বোর্ডের একজন কর্তাও আসেননি। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক বহরের বড় অংশও ছিলেন অনুপস্থিত। এমন ঘটা করে ডাকা ইফতার মাহফিলে আমন্ত্রণ পাওয়ার পরও বোর্ডের একজন সদস্য আসেননি। বিষয়টা চোখে লেগেছে। কাল পুরো ইফতার মাহফিলে সব টেবিলেই এ নিয়ে কানাঘুষা হয়েছে।
এদিকে বোর্ডের সঙ্গে জড়িত জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কদের বড় অংশের না আসা নিয়ে আয়োজকদের সুস্পষ্ট অভিযোগ-বোর্ডের শীর্ষ কর্তারা তাদের আসতে নিষেধ করেছেন। তাই জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কদের বড় অংশ বিশেষ করে যারা বোর্ড আহ্বায়ক কমিটিতে আছেন এবং নির্বাচক, তারা কেউই আসেননি।
তবে বর্তমান কমিটির কেউ কেন যাননি তার উত্তর মিলেছে। বিসিবির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ও নাজমুল হাসান পাপনের খুব কাছের মানুষ আইএইচ মল্লিক অকপটে স্বীকার করেছেন-‘আমরা সবাই দাওয়াত পেয়েছি। সেটা কোনোরকম দায়সারা গোছের ছিল না। একদম প্রথাগত নিমন্ত্রণ বলতে যা বোঝায় আমাদের তাই করা হয়েছে। এ কারণে আমরা যাইনি। কী করে যাই বলুন? এখন দু’পক্ষ একদম এক্সপোজ হয়ে গেছে। আমরা একপক্ষ আর সাবের ভাইয়ের নেতৃত্বে আরেক পক্ষ। তাদের আয়োজনে আমাদের যাওয়াটা কেমন দেখায় বলুন? আমরাও শিগগিরই এমন আয়োজন করব। সেখানে হয়তো আমাদের প্যানেল ঘোষণা করা হবে।’
মল্লিকের দাবি মাহবুব আনাম, আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি, ইকবাল হাসান, জালাল ইউনুস, গাজী আশরাফ লিপু, আজম নাসির, নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও হানিফ ভূঁইয়া এবং তিনি নিজে প্রমুখ থাকবেন নাজমুল হাসান পাপনের প্যানেলে।
Discussion about this post