বাংলাদেশের ২৫ বছরের টেস্ট যাত্রার দিনটিতে কাকতালীয়ভাবে ছিল হতাশার চূড়ান্ত রূপ। টেস্ট খেলুড়ে দেশের রজতজয়ন্তী পূর্ণ হওয়ার ঠিক পরদিন, ব্যাট হাতে জর্জরিত এক বাংলাদেশ দল মাঠে। লঙ্কানদের দেওয়া ২১১ রানের লিডকে পেরোনো তো দূরের কথা, নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাত্র ১১৫ রানে।
তবে মাঠে যে আলো কিছুটা জ্বলেছিল, তা এসেছিল একজনের হাত ধরে-তাইজুল ইসলাম। বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের আরও একটি ফাইফার। দেশের বাইরে এ নিয়ে পঞ্চমবার। কিন্তু এই অর্জনের মাঝেও যেন স্বস্তি নেই, কণ্ঠে ফুটে উঠল একান্ত সততার সুর—জবাবদিহির পরিধিটা যেন শুধুই ২২ গজে আবদ্ধ নয়।
‘শুধু খেলোয়াড়দের দোষ দিয়ে লাভ নেই। একটা দল যখন খারাপ করে, সেখানে অনেক কিছুই ইনভলভ থাকে।
তাইজুলের কথায় উঠে এল অবকাঠামোর অভাব, সুযোগ-সুবিধার সীমাবদ্ধতা, ও পরিকল্পনার অপ্রতুলতা। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনা টানতে গিয়েই মুখ ফসকে বেরিয়ে এল দীর্ঘদিন জমে থাকা আক্ষেপ, ‘এদের যেই ফ্যাসিলিটিস, আমরা এমনটা পাই না। চাই আমাদেরও এমন হোক, যাতে প্রতিযোগিতা বাড়ে, ভালো ক্রিকেটার উঠে আসে।’
২৫ বছরের পথচলায় যেখানে কিছু অর্জন আছে, কিন্তু তুলনামূলকভাবে যা বেশি-তা হলো সম্ভাবনা নষ্টের গল্প। বলা হয়, একজন ভালো খেলোয়াড় কখনোই শুধু নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে বাঁচে না। দল যদি ডুবে, ব্যক্তিগত অর্জনের আনন্দও সেখানে ফিকে হয়ে যায়। তাইজুল ঠিক তাইই বললেন, ‘আমি বলব না এটা খুব ফ্রাস্ট্রেটিং, তবে সবার সঙ্গে মিলে কিছু করলে সেটাই বেশি আনন্দের।’
শেষবার্তাটি হয়তো বাংলাদেশের টেস্ট ভবিষ্যতের জন্যই জরুরি, ‘২টা সেঞ্চুরি, ২টা ফিফটি হলে আজকে আমরা ভালো জায়গায় থাকতে পারতাম।’
Discussion about this post