বিশাখাপত্তমের গরম বিকেলে হঠাৎই ঝলসে উঠল বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের ব্যাট। এতদিন রানশূন্যতা, ব্যর্থতার গ্লানি আর সমালোচনায় ডুবে থাকা সেই দল আজ যেন নতুন করে জন্ম নিল ব্যাট হাতে। শারমিন আক্তারের ধৈর্য আর স্বর্ণা আক্তারের ঝড়-দু’য়ে মিলে ইতিহাস গড়ল টাইগ্রেসরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তোলে ২৩২ রান, যা তাদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। মাত্র ৩৪ বলে ফিফটি করেন স্বর্ণা। যা বাংলাদেশের নারী ওয়ানডে ইতিহাসে দ্রুততম অর্ধশতক।
আজ টস জিতে ব্যাট করতে নামলে প্রথম থেকেই পরিকল্পনা ছিল স্পষ্ট। তাড়াহুড়ো নয়, ধৈর্য আর নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসন। ওপেনার রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক ও ফারজানা হক সেই ভাবেই শুরু করেন। তারা দেন ৫৩ রানের শান্তিপূর্ণ ওপেনিং পার্টনারশিপ।
ঝিলিক ফিরলেও (২৫), ক্রিজে আসেন শারমিন আক্তার সুপ্তা-যিনি হয়ে ওঠেন দলের ‘অ্যাঙ্কর’। তার চোখে ভরসা, ব্যাটে দৃঢ়তা। ফারজানা (৩০) ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির (৩২) সঙ্গে গড়ে তোলেন গুরুত্বপূর্ণ জুটি। এক পর্যায়ে যখন দলের স্কোরবোর্ডে ১৫০, তখন মনে হচ্ছিল-এটাই হয়তো আজকের দিন।
সুপ্তা ফিফটি করে রান আউট হয়ে ফিরলেও রেখে যান স্থিরতার ছাপ-৭৭ বলে ৫০ রানের ইনিংস যেন বলছিল, “আমরা ফিরেছি!”
তারপর আসে সেই ঝড়-স্বর্ণা আক্তারের ব্যাট থেকে। নামার পর থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের ওপর চড়াও হন তিনি। ৩৫ বলে অপরাজিত ৫১ রানে ইনিংসটি যেন এক ক্ষুদ্র আতশবাজির উৎসব। নিগার সুলতানা জ্যোতির ৩৯ বলে ফিফটির রেকর্ড ভাঙেন তিনি। তার ব্যাটের প্রতিটি স্ট্রোক ছিল আত্মবিশ্বাসের ঘোষণা।
শেষ দিকে তার সঙ্গে জুটি বাঁধেন রিতু মনি, যিনি ৮ বলে ১৯ রান করে দলকে পৌঁছে দেন নতুন উচ্চতায়।
প্রতিপক্ষের হয়ে ২ উইকেট নেন ননকুলুলেকো ম্লাবা, তবে টাইগ্রেসদের ব্যাটিং তেজে কোনো বোলারই বড় প্রভাব ফেলতে পারেননি।
Discussion about this post